পটুয়াখালীর পায়রা সেতুর টোল প্লাজায় সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য কাজী কানিজ সুলতানা হেলেনের স্বজনদের মারধরের অভিযোগ উঠেছে টোল আদায়কারী প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের বিরুদ্ধে। এদিকে টোল আদায়কারী প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের অভিযোগ, এমপির স্বজনরা তাদের মারধর করেছেন।
এতে উভয় পক্ষের অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে বেশ কয়েকজনকে পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়।
বৃহস্পতিবার (৫ মে) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে লেবুখালী পায়রা সেতুর দক্ষিণ প্রান্তে টোল প্লাজায় এ ঘটনা ঘটে। পরে পুলিশ ও র্যাবের বিপুলসংখ্যক সদস্য ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।
ওই সংসদ সদস্যর বড় ছেলের নতুন বউ নিয়ে ফেরার পথে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে বলে জানা গেছে।
এ বিষয়ে সংসদ সদস্য কাজী কানিজ সুলতানা হেলেন মুঠোফোনে সাংবাদিকদের বলেন, পটুয়াখালী থেকে বরিশাল যাওয়ার পথে পায়রা সেতুর টোল প্লাজার লোকজন বলেন ঈদের বকশিশ দিয়ে যান। তখন তার ছোট ছেলে বলেন, আসার পথে মিষ্টি খাওয়ার টাকা দেবো। যাওয়ার সময় কিছু হলো না।
‘কিন্তু বরিশাল থেকে পটুয়াখালী আসার পথে হটাৎ টোলপ্লাজা এলাকার স্টাফরা দুই ছেলের সঙ্গে বাকবিতণ্ডায় জড়ান। একপর্যায়ে ছোট ছেলের বন্ধু মেরিন ইঞ্জিনিয়ার আশিককে টেনে-হিছড়ে টোল প্লাজার নিচতলায় নিয়ে বেদম মারধর করেন। এসময় তার সঙ্গে থাকা আইফোন, ড্রাইভারের স্মার্টফোন ছিনতাই করেন। গাড়ির ভিআইপি হর্নও নিয়ে গেছেন। এছাড়া নববধূর ডান হাতের তিন আঙুলের ‘ফলস নখ’ নিয়ে গেছেন। তার হাতের স্বর্ণের বালাও নিয়ে গেছেন।’
তিনি আরও বলেন, ঘটনার সময় টোল প্লাজার বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ করে দেওয়া হয়। এটি একটি পরিকল্পিত ডাকাতি করা হয়েছে। যেখানে আমার গাড়ি টোল প্লাজা এলাকায় নিরাপদ নয় সেখানে সাধারণ মানুষ কীভাবে নিরাপদ? এ বিষয়ে আমরা মামলা করবো। তার গাড়িবহরে থাকা আশিক মাহমুদ, চালক বিলাল হোসেন ও জাকারিয়া মাহমুদ আহত হয়েছেন বলে দাবি করেন তিনি।
পায়রা সেতুর টোল আদায়কারী প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজার আসাদুজ্জামান বলেন, সিসিটিভি ফুটেজ থেকে আমরা অনেক কিছু স্পষ্ট হয়েছি। আমি যেহেতু ঘটনাস্থলে ছিলাম না। আমি পরে জানতে পেরেছি, একটি বিয়ের গাড়িসহ বেশ কয়েকটি গাড়ি টোল প্লাজায় আসার পর দায়িত্বরতরা টোল চান। পরে গাড়ি থেকে নেমে মহিলা এমপির পরিবারের সদস্য পরিচয় দেওয়া হয়।
এসময় তাদের তথ্য যাছাইবাছাই করার একপর্যায়ে গাড়ি থেকে নেমে কয়েকজন যুবক টোল আদায়কারী স্টাফদের সঙ্গে তর্কে জড়ান এবং মারধর শুরু করেন। এতে আমাদের বেশ কয়েকজন স্টাফ আহত হন। পরে তারা অফিস রুমে এসেও আমাদের কর্মীদের মারধর করেন। আহতরা হলেন সিকিউরিটি সুপারভাইজার রাসেল, স্টাফ বাবুল, সুবজ এবং মাহবুব। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।
পরে খবর পেয়ে পটুয়াখালী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি), দুমকি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাসহ (ওসি) পুলিশ এবং র্যাবের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
এ বিষয়ে পটুয়াখালী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনিরুজ্জামান বলেন, পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। পরে তদন্ত সাপেক্ষে এ বিষয়ে আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
বাংলা৭১নিউজ/এসএইচ