গত সপ্তাহে দেশের শেয়ারবাজারে কিছুটা ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা দেখা গেছে। এ সময়ে প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) বাজার মূলধন বেড়েছে এক হাজার কোটি টাকারও বেশি। বাজার মূলধনের পাশাপাশি এই সময়ে বেড়েছে সবকটি মূল্য সূচক। সেই সঙ্গে বেড়েছে লেনদেনের পরিমাণও।
গত সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসের লেনদেন শেষে ডিএসইর বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে ৫ লাখ ৩৯ হাজার ৪১৫ কোটি টাকা। আগের সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে এর পরিমাণ ছিল ৫ লাখ ৩৮ হাজার ২৬৩ কোটি টাকা। অর্থাৎ এক সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসইর বাজার মূলধন বেড়েছে ১ হাজার ১৫২ কোটি টাকা। আগের সপ্তাহে বাজার মূলধন কমেছিল ২ হাজার ৫২৯ কোটি টাকা।
বাজার মূলধন কমার পাশাপাশি গত সপ্তাহে ডিএসইতে বেশিসংখ্যক প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে। সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেয়া ১৭৯টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১৭০টির। আর ৩৫টি প্রতিষ্ঠানের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
এতে করে গত সপ্তাহে ডিএসইর প্রধান মূল্য সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ৪ দশমিক ৯৬ পয়েন্ট বা দশমিক শূন্য ৭ শতাংশ। আগের সপ্তাহে সূচকটি কমে ১২ দশমিক ৭২ পয়েন্ট বা দশমিক ১৯ শতাংশ। বাছাই করা ভালো কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক গত সপ্তাহজুড়ে বেড়েছে ৭ দশমিক ২৬ পয়েন্ট বা দশমিক ২৯ শতাংশ। আগের সপ্তাহে সূচকটি বাড়ে ৮ দশমিক ২৫ পয়েন্ট বা দশমিক ৩৪ শতাংশ।
প্রধান মূল্য সূচক এবং ভালো কোম্পানি নিয়ে গঠিত বাছাই করা সূচকের পাশাপাশি গেল সপ্তাহের বেড়েছে ইসলামী শরিয়াহ ভিত্তিতে পরিচালিত কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই শরিয়াহ্ সূচক। গত সপ্তাহে এই সূচকটি বেড়েছে ১১ দশমিক ৩০ পয়েন্ট বা দশমিক ৭৮ শতাংশ। আগের সপ্তাহে সূচকটি বাড়ে ২ দশমিক ৫০ পয়েন্ট বা দশমিক ১৭ শতাংশ।
গত সপ্তাহের প্রতি কার্যদিবসে ডিএসইতে গড়ে লেনদেন হয়েছে ৯৩৬ কোটি ৬৬ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয়েছিল ৭৮০ কোটি ২৩ লাখ টাকা। অর্থাৎ প্রতি কার্যদিবসে গড় লেনদেন বেড়েছে ১৫৬ কোটি ৪৩ লাখ টাকা বা ২০ দশমিক শূন্য ৫ শতাংশ।
আর গত সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে মোট লেনদেন হয়েছে ৪ হাজার ৬৮৩ কোটি ৩৪ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে লেনদেন হয় ৩ হাজার ৯০১ কোটি ১৯ লাখ টাকা। সে হিসাবে মোট লেনদেন বেড়েছে ৭৮২ কোটি ১৫ লাখ টাকা বা ২০ দশমিক শূন্য ৫ শতাংশ।
গত সপ্তাহে ডিএসইতে টাকার অঙ্কে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে ফরচুন সুজের শেয়ার। সপ্তাহজুড়ে কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৩৬৫ কোটি ৯৭ লাখ ২৩ হাজার টাকা, যা মোট লেনদেনের ৭ দশমিক ৮১ শতাংশ। দ্বিতীয় স্থানে থাকা বেক্সিমকোর শেয়ার লেনদেন হয়েছে ২৬২ কোটি ৩১ লাখ ১৯ হাজার টাকা। ১৯০ কোটি ২২ লাখ ৯০ হাজার টাকা লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে জিনেক্স ইনফোসিস।
এছাড়া লেনদেনের শীর্ষ দশ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- সোনালী পেপার, লাফার্জাহোলসিম বাংলাদেশ, ওরিয়ন ফার্মা, বিডিকম অনলাইন, প্রিমিয়ার ব্যাংক, বাংলাদেশ ল্যাম্পস ও আমরা টেকনোলজি।
বাজার মূলধন বাড়া বা কমার অর্থ হলো তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর শেয়ার ও ইউনিটের দাম সম্মিলিতভাবে ওই পরিমাণ বাড়া বা কমে যাওয়া। অর্থাৎ বাজার মূলধন বাড়লে বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগ করা অর্থের পরিমাণ বেড়ে যায়। একইভাবে বাজার মূলধন কমলে বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগ করা অর্থের পরিমাণ কমে যায়।
বাংলা৭১নিউজ/এসএইচ