বরিশালের মেহেন্দিগঞ্জে মায়ের বিরুদ্ধে শিশুকে গলা কেটে হত্যাচেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। গতকাল শুক্রবার দুপুরে উপজেলার দড়িচর-খাজুরিয়া ইউনিয়েনের ৪ নম্বর ওয়ার্ডে এ ঘটনা ঘটে। আহত নুসরাত মারিয়া (৮) ইউসুফ কাজীর মেয়ে এবং স্থানীয় একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী। অভিযুক্ত মায়ের নাম সীমা বেগম।
ঘটনার পর তিনি পালিয়ে যান। আহত শিশুটির স্বজনদের দাবি, পরকীয়া সর্ম্পকের কারণেই শিশুটিকে হত্যার চেষ্টা চালানো হয়েছে। এ ঘটনার বিচারের দাবি করেছেন তারা।
স্থানীয়রা জানান, নুসরাতের বাবা কাজী ঢাকায় একটা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করার সুবাদে দুই সন্তানকে সঙ্গে নিয়ে সীমা বেগম গ্রামের বাড়িতে থাকেন। শুক্রবার দুপুর ১টার দিকে খাবার খাইয়ে নুসরাতকে নিজ ঘরে ঘুমাতে যেতে বলেন তিনি।
এর কিছুক্ষণ পরই সীম বেগম একটি চাপতি নিয়ে নুসরাতকে গলাকেটে হত্যার চেষ্টা চালান। এসময় শিশুটির চিৎকারে আশপাশ ঘরের লোকজন ছুটে এসে নুসরাতকে গুরুতর অবস্থায় উদ্ধার করে মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখানে তার অবস্থার অবস্থার অবনতি হলে সন্ধ্যায় বরিশাল শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশু সার্জারি ওয়ার্ডে ভর্তি করানো হয়।
শেবাচিম হাসপাতালের শিশু সার্জারি বিভাগের চিকিৎসক ডা. তানিম জানান বলেন, নুসরাতের প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়েছে। তার ঘাড় ও গালায় ১৬টি সেলাই দেওয়া হয়েছে। এতে করে রক্তক্ষরণ বন্ধ হয়েছে। তবে সে এখনও শঙ্কামুক্ত নয়।
নুসরাতের ফুফু রুমানা বেগম অভিযোগ করে বলেন, তিন বছর আগে সীমার সঙ্গে আব্দুস সালাম নামে তার এক ফুপাতো দেবরের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এক বছর আগে তার সঙ্গে সীমা বেগম পালিয়েও যায়। ওই সময়ে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও চার নম্বর ওয়ার্ড সদস্য এবং স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা এ নিয়ে সালিশ বৈঠকও করেন। সালিশে সীমা পুনরায় ইউসুফ কাজীর সংসারে ফিরে আসে। কিন্তু তারপরও সালামের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন হয়নি তার। এ সম্পর্কের মাঝে মেয়েকে সে বাধা মনে করে। এ কারণেই সে বড় মেয়েকে হত্যার চেষ্টা করে।
মেহেন্দীগঞ্জ থানার ওসি শফিকুল ইসলাম বলেন, ঘটনাটি আমরা জেনেছি। নুসরাতের বাবা ইউসুফের সঙ্গে কথা হয়েছে। তিনি ঢাকা থেকে বরিশাল আসছেন। তিনি থানায় অভিযোগ করলে আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে। পাশাপাশি সীমা বেগমকে আটকের জন্য বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে।
বাংলা৭১নিউজ/এসএইচ