দেশি-বিদেশি পর্যটকদের অন্যতম দর্শনীয় স্থান কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিন। এ দ্বীপে ভ্রমণে যাওয়ার মূল বাহন পর্যটকবাহী জাহাজ। টেকনাফের দমদমিয়া জেটি ঘাট থেকে প্রতিদিনই ৯টি জাহাজ পর্যটকদের নিয়ে সেন্টমার্টিন যায়। আবার বিকেলে টেকনাফের উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসে।
তবে এসব জাহাজ টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌ-রুটে অনিয়ন্ত্রণহীনভাবে চলছে। যাত্রী পরিবহনের নেই নিয়মনীতির বালাই। মানা হচ্ছে না কোনো স্বাস্থ্যবিধি। করোনা রোধে সরকারি বিধিনিষেধ থাকলেও অতিরিক্ত যাত্রী নিয়েই জাহাজগুলো চলাচল করছে বলে অভিযোগ পর্যটকদের।
শুক্রবার ছুটির দিন (১৮ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৯টার দিকে দমদমিয়া জাহাজ ঘাটে গিয়ে দেখা যায়, পর্যটকদের উপচেপড়া ভিড়। অনেকেই অতিরিক্ত দাম দিয়ে কিনেছেন টিকিট। সাড়ে ৯টার দিকে ধারণ ক্ষমতার চেয়ে অতিরিক্ত যাত্রী উঠিয়ে জাহাজগুলো সেন্টমার্টিনের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়।
এ সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের দেখা গেলেও কোনো নির্দেশনা বা পদক্ষেপ লক্ষ্য করা যায়নি। নেই প্রশাসনের নজরদারিও।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জাহাজের মোট ধারণক্ষমতা অনুযায়ী প্রতিদিন সেন্টমার্টিনে যাওয়ার কথা ১-২ হাজার পর্যটকের। কিন্তু বর্তমানে প্রতিদিন গড়ে পর্যটক যাচ্ছেন ৫ হাজারের অধিক। তবে শুক্রবার ছুটির দিন প্রায় ১০-১২ হাজার পর্যটক সেন্টমার্টিন ভ্রমণ করেছেন বলে জানা গেছে।
একদিকে পরিবেশ সংকটে সেন্টমার্টিন, অপরদিকে জেটির বেহাল দশা। এ অবস্থায় পর্যটকের চাপে যে কোনো মুহূর্তে বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছেন সচেতনমহল।
পর্যটকদের অভিযোগ, জাহাজে ধারণক্ষমতার চেয়ে অনেক বেশি যাত্রী নেওয়া হয়। এছাড়া টিকিটের বাইরেও প্রচুর যাত্রী জাহাজে ওঠেন। এভাবে ঝুঁকি নিয়ে সমুদ্র যাতায়াতে জাহাজগুলোর স্বেচ্ছাচারিতার প্রতিকার চেয়ে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ চান পর্যটকরা।
ঢাকা থেকে আসা নাসিম হায়দার নামের এক পর্যটক বলেন, গত তিন বছর আগে ৫৫০ টাকায় কেয়ারি সিন্দাবাদ জাহাজ করে সেন্টমার্টিনে গিয়েছিলাম। কিন্তু এবার টিকিট কিনতে হয়েছে ১১০০ টাকায়।
তিনি আরও বলেন, জাহাজে টয়লেট ব্যবস্থা থাকলেও মান সম্মত নয়। অত্যন্ত নোংরা৷
চকোরিয়া পৌর ছাত্রলীগের দপ্তর সম্পাদক মোহাম্মদ কাজেম বলেন, প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্যের প্রতীক সেন্টমার্টিন। শুধুমাত্র মাত্রাতিরিক্ত পর্যটক, অব্যবস্থাপনা ও সুনির্দিষ্ট নীতিমালার অভাবে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠছে এ প্রবালদ্বীপ।
বে অব বেঙ্গলের টুরিস্ট ব্যবস্থাপনা পরিচালক তোফায়েল আহমদ বলেন, হঠাৎ করে বেড়ে গেছে পর্যটক। তবে ভোগান্তি নেই।
এসব অভিযোগের ব্যাপারে কথা বলতে নারাজ জাহাজ কর্তৃপক্ষ। তবে অতিরিক্ত যাত্রী ও টাকা বেশি নেওয়ার অভিযোগ পেলে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পারভেজ চৌধুরী।
বাংলা৭১নিউজ/এসএইচবি