বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১:০৭ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম
সবাই একসঙ্গে শান্তিতে থাকতে চাই : পররাষ্ট্র উপদেষ্টা নির্মাণাধীন ভবনের ছাদে থেকে পড়ে বিদ্যুতায়িত, দুই শ্রমিকের মৃত্যু ‘আমাদের একমাত্র লক্ষ্য শান্তি ও স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করা’ বাংলাদেশ সীমান্তে অতিরিক্ত বিএসএফ মোতায়েন সৌদিতে সড়কে প্রাণ গেল ময়মনসিংহের দুই যুবকের, পরিবারে শোকের মাতম বিএনপিকর্মী মকবুল হত্যা: সাবেক মুখ্য সচিব নজিবুর কারাগারে প্রশাসন নিরপেক্ষ করতে ‘স্বৈরাচারের দোসরদের’ অপসারণ করুন সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে বীর মুক্তিযোদ্ধা শফিউল্লাহ শফিকে পুলিশে দিল ছাত্র-জনতা বইমেলায় স্টলের জন্য আবেদন করা যাবে ৫ জানুয়ারি পর্যন্ত ডিআরইউর সাধারণ সম্পাদকের ওপর হামলার ঘটনায় নিন্দা ৪৪তম বিসিএসের মৌখিক পরীক্ষার নতুন সূচি প্রকাশ ভারত থেকে ২৫ হাজার টন চাল আসছে বৃহস্পতিবার আইএসও/আইইসি ২৭০০১:২০২২ সনদ অর্জন করলো পূবালী ব্যাংক কলকাতার কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছেন পি কে হালদার নিজ দেশে ফিরে যেতে রোহিঙ্গা মুফতি-ওলামাদের সমাবেশ ভিডিও: কাজাখস্তানে উড়োজাহাজ বিধ্বস্তে নিহত অন্তত ৪০ উপকূলীয় মানুষের নিরাপত্তা ও জীবনমান উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে কোস্টগার্ড দেখে নিন চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির সূচি, বাংলাদেশের ম্যাচ কবে কোথায়? ইসলামী ব্যাংকে নিয়োগ, স্নাতক পাসেও আবেদনের সুযোগ

সরিষাক্ষেতের কীটনাশকে মারা যাচ্ছে কোটি কোটি মৌমাছি

বাংলা৭১নিউজ,ডেস্ক:
  • আপলোড সময় শনিবার, ১৫ জানুয়ারী, ২০২২
  • ৫৯ বার পড়া হয়েছে

সিরাজগঞ্জের বিভিন্ন উপজেলার প্রতিটি মাঠে এখন সরিষা ফুল। পুরোমাঠ যেন ঢেকে আছে হলুদের চাঁদরে। সরিষাক্ষেতে গুণ গুণ শব্দে মৌমাছিরা ঘুরে বেড়াচ্ছে এ ফুল থেকে ও ফুলে। এ মৌসুমে মধু সংগ্রহে ব্যস্ত মৌ খামারিরা।

কিন্তু মধু সংগ্রহের ঠিক সময়ে অসচেতনভাবে সরিষাক্ষেতে কীটনাশক প্রয়োগ করছেন কৃষকরা। এতে কোটি কোটি মৌমাছি মারা যাওয়ায় চরম ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন মৌ খামারিরা।

 

জেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি রবি মৌসুমে ৫৪ হাজার ৬৫৫ হেক্টর জমিতে সরিষা আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। এখন পর্যন্ত আবাদ হয়েছে ৪৯ হাজার ৫০০ হেক্টরে। এবার লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে আবাদ বেশি হবে, এমনটাই আশা করছে কৃষি অফিস।

কৃষকদের সচেতনতার অভাবে এই কীটনাশক ব্যবহারে ২ হাজার টন মধু সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ভেস্তে যেতে বসেছে। মৌমাছি মারা যাওয়ার কথা স্বীকার করে কৃষি বিভাগ বলছে কৃষকদের সচেতনতায় মাঠে নেমেছে তারা।

জেলার উল্লাপাড়া, রায়গঞ্জ, তাড়াশ ও শাহজাদপুরে সরিষা ফুল থেকে পোষা মৌমাছি দিয়ে মধু সংগ্রহে এসেছেন প্রায় ৫ শতাধিক খামারি। প্রতিবছর খামারিরা এসকল স্থান থেকে মধু সংগ্রহ করেন। এবারও ২ হাজার টন মধু সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে মাঠে মাঠে বসিয়েছেন মৌ বাক্স। সরিষা ফুল থেকে পোষা মৌমাছি দিয়ে প্রতিবছর কয়েকশ কোটি টাকার মধু সংগ্রহ করা হয়। যা দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশেও রফতানি করা হয়। সম্ভাবনাময় এই খামারে কর্মসংস্থান হয়েছে কয়েক হাজার বেকার যুবকের।

 

কিন্তু এ বছর সরিষা চাষিরা ক্ষেতে ফলন বাড়ানোর আশায় ভিটামিন জাতীয় বিভিন্ন ধরনের কীটনাশক প্রয়োগ শুরু করেছেন। সচেতনতার অভাবে একজনের দেখাদেখি অপর কৃষকও সরিষা ক্ষেতে অধিক ফলনের আশায় এই কীটনাশক স্প্রে করছে। এতে ফুল থেকে মধু সংগ্রহের সময় খামারিদের মৌমাছি মারা যাচ্ছে। এর ফলে মধু সংগ্রহে ব্যঘাত সৃষ্টি হচ্ছে।

উল্লাপাড়া উপজেলার আলী গ্রামেআসা ‘আশার আলো’ মধু খামারি আব্দুর রশিদ জানান, এ বছর সরিষার জমির পাশে মধু সংগ্রহের জন্য ৩৫০টি মৌ বাক্স বসিয়েছি। সেখানে ১০ দিন ধরে কীটনাশক ছিটাচ্ছেন জমির মালিকেরা। এতে সরিষার ফুলে মধু সংগ্রহ করতে বসা অন্তত ১ কোটি মৌমাছি মারা গেছে। সরিষার ফুল থেকে আমাদের মধু উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ৯ টন ছিলো। কিন্তু কৃষকদের সচেতনার অভাবে ভেস্তে যেতে বসেছে আমাদের স্বপ্ন। আমরা নিরুপায় হয়ে মৌ বাক্সগুলো অন্যত্র সরিয়ে নিচ্ছি।

 

আরেক মৌ খামারি আফছার আলী জানান, ৪০০ মৌ বাক্স সরিষা মাঠে ফেলেছেন। প্রতিটি বাক্সে তার ৬০ হাজার থেকে ৭০ হাজার মৌমাছি রয়েছে। কৃষকদের কীটনাশক ছড়ানোর কারণে তার অন্তত ২ কোটি মৌমাছি মারা গেছে।

একই এলাকার খামারি মোতালেব হোসেন, আফছার আলী, আব্দুল আহাদের অবস্থা প্রায় একই রকম। এদেরও বিপুল পরিমাণ মৌমাছি কীটনাশকের কারণে মারা গেছে।

তাড়াশ উপজেলার মান্নান নগর গ্রামের কৃষক জুলমাত হোসেন জানান, সরিষার ফলন বৃদ্ধির কারণে ব্যবসায়ীদের পরামর্শে ক্ষেতে কীটনাশক দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু এর ফলে ফলন বৃদ্ধি পাবে কিনা তা নিশ্চিত নই। তবে এই বালাইনাশক স্প্রে করার কারণে মৌমাছি মারা যাচ্ছে বলে তিনি স্বীকার করেন।

উপজেলার কয়ড়া ইউনিয়নের জঙ্গলখামার গ্রামের কৃষক খলিলুর রহমান বলেন, চলতি বছরে তিন বিঘা জমিতে সরিষা আবাদ করা হয়েছে। এতে খরচ হয়েছে ২৫ হাজার টাকা। যদি আবহাওয়া ভালো থাকে, তাহলে বিঘা প্রতি ৮ মণ সরিষা পাওয়া যাবে। আর বাজারমূল্য ভালো থাকলে ২৪ মণ সরিষা ৫০ হাজার টাকায় বিক্রি হবে বলেও আশাবাদী।

 

সরিষা চাষি জাহাঙ্গীর হোসেন, মান্নান শেখ, জাহিদ হোসেন জানান, সরিষার ফলন বৃদ্ধির জন্য ক্ষেতে ভিটামিন জাতীয় কীটনাশক ছিটিয়েছেন। ওষুধ ছিটানোর কারণে মৌমাছি মারা পড়েছে। কিন্তু এই কীটনাশক প্রয়োগের কারণে মৌমাছিগুলো মারা যাবে এ কথাগুলো তাদের জানা ছিল না।

জেলা কৃষি অফিসের উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা আব্দুল করিম জানান, সরিষা ক্ষেতে কীটনাশক ছিটানোর কারণে মৌমাছি মারা যাচ্ছে এই খবর পেয়ে জেলা ও উপজেলা কৃষি কর্মকর্তারা ইতোমধ্যে ফসলের মাঠগুলো পরিদর্শন করেছেন। মধু খামারিদের মৌমাছি ভোর থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত সরিষা ফুল থেকে মধু সংগ্রহ করে থাকে। বিকেলে মৌমাছিগুলো তাদের বাক্সে ফিরে যায়। কৃষকেরা বিকেলে তাদের সরিষা ক্ষেতে কীটনাশক ছিটালে মৌমাছির কোনো ক্ষতি হতো না। কৃষকদের অসচেতনতার জন্য এমনটা হয়েছে।

তবে কৃষি বিভাগ ইতোমধ্যেই জেলার বিভিন্ন উপজেলার সরিষা চাষিদের এ বিষয়ে সচেতন করতে সবধরনের ব্যবস্থা নিয়েছে। কৃষকদের সচেতন করতে সংশ্লিষ্ট এলাকায় মাইকিংয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

বাংলা৭১নিউজ/জিকে

 

 

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরও সংবাদ
২০১৫-২০২৪ © বাংলা৭১নিউজ.কম কর্তৃক সকল অধিকার সংরক্ষিত।
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com