চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ১৯ বছর ধরে পেটে কাঁচি নিয়ে ঘোরা বাচেনা খাতুনের অস্ত্রোপচার হয়েছে। সোমবার (১০ জানুয়ারি) বেলা ১১টা থেকে দুপুর দেড়টা পর্যন্ত অস্ত্রোপচার শেষে তার পেট থেকে কাঁচিটি বের করা হয়। অস্ত্রোপচার করেন চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের সার্জারি সিনিয়র কনসালটেন্ট ডা. ওয়ালিউর রহমান নয়ন।
বাচেনা খাতুন (৫০) চুয়াডাঙ্গা জেলার আলমডাঙ্গা উপজেলার চিৎলা ইউনিয়নের হাঁপানিয়া গ্রামের আব্দুল হামিদের স্ত্রী। ২০০২ সালে মেহেরপুরের গাংনীর রাজা ক্লিনিকে বাচেনা খাতুনের পিত্তথলির অস্ত্রোপচার হয়। সে সময় চিকিৎসকের ভুলে পেটের ভেতরই কাঁচি থেকে যায়। এরপর থেকে বাচেনা খাতুন পেটে যন্ত্রণা ও ব্যথা অনুভব করতে থাকনে।
দীর্ঘ ১৯ বছর ধরে চিকিৎসকদের পরামর্শে বিভিন্ন ওষুধ খেয়েছেন তিনি। কয়েকবার আল্ট্রাসনোগ্রামও করেছেন। কিন্তু কিছুই ধরা পড়েনি। অবশেষে ২ জানুয়ারি রাজশাহীতে একটি বেসরকারি ক্লিনিকে এক্স-রে রিপোর্টে তার পেটের ভেতরে কাঁচি ধরা পড়ে।
এদিকে অস্ত্রোপচারের পর বাচেনা খাতুন সুস্থ আছেন বলে জানান চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের সার্জারি সিনিয়র কনসালটেন্ট ডা. ওয়ালিউর রহমান নয়ন। তিনি বলেন, এতদিন স্থানীয়ভাবে চিকিৎসার কারণে বিষয়টি বুঝতে পারেনি বাচেনা খাতুনের পরিবার। বারবার আল্ট্রাসনোগ্রাম করলেও কাঁচির বিষয়টি উঠে আসেনি। পরবর্তীতে এক্স-রে রিপোর্টে কাঁচির দেখা মেলে। আমরা বাচেনা খাতুনকে পর্যবেক্ষণ করছি।
এদিকে, পেটে কাঁচি রেখে দেওয়ার কারণে রাজা ক্লিনিক কর্তৃপক্ষের কাছে যথাযথ ক্ষতিপূরণ দাবি করেছে বাচেনা খাতুনের পরিবার।
ভুক্তভোগীর ছেলে ইয়ামিন আলী বলেন, ‘২ জানুয়ারি রাজশাহীর একটি বেসরকারি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে মাকে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাই। সেখানে এক্স-রে করে চিকিৎসক দেখতে পান মায়ের পেটের মধ্যে কাঁচি আছে। মায়ের চিকিৎসা করাতে গিয়ে আমাদের মাঠে থাকা ১১ কাঠা জমি ও বাড়ির গোয়ালের দুটি গরু বিক্রি করতে হয়েছে। আমি ক্লিনিক কর্তৃপক্ষের কাছে উপযুক্ত ক্ষতিপূরণের দাবি জানাচ্ছি।’
রাজা ক্লিনিকের স্বত্বাধিকারী ও চিকিৎসক পারভিয়াস হোসেন ওরফে রাজা বলেন, ‘সে সময় কর্মরত চিকিৎসক মিজানুর রহমান বাচেনা খাতুনের অপারেশন করেছিলেন। আমি বাচেনা খাতুনের পরিবারের সঙ্গে কথা বলেছি। তাদের সুচিকিৎসা ও ওষুধপত্রের ব্যয়ভারও নিয়েছি।’
বাংলা৭১নিউজ/এসএইচ