বাংলা৭১নিউজ, ঢাকা: ৭ দিনের মধ্যে বকেয়া পাওনা বুঝিয়ে দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন ইনকিলাবের চাকুরিচ্যুত সাংবাদিক কর্মচারী ঐক্য পরিষদ। আজ শনিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এক অবস্থান কর্মসূচি থেকে এ দাবি জানানো হয়।
সকাল সাড়ে ১১ টা থেকে বেলা ২টা পর্যন্ত এই অবস্থান কর্মসূচি পালিত হয়। এ সময় সাংবাদিক নেতারা হুশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, ২৬ মাসের বকেয়া বেতনসহ
সমুদয় পাওনা বেধে দেওয়া সময়ের মধ্যেই বুঝিয়ে দিতে হবে। তা না হলে সাংবাদিক সমাজ ঐক্যবদ্ধভাবে আরো কঠোর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবে।
বক্তারা বলেন, ইনকিলাবের চাকরিচ্যুত প্রায় একশ সাংবাদিক-কর্মচারীর সঙ্গে মানবতাবিরোধী কাজ করা হয়েছে। ইনকিলাবের সম্পাদক এ এম এম বাহাউদ্দীন সাংবাদিক-কর্মচারীদের প্রতি অমানবিক অত্যাচার করছে। চাকরিচ্যুতদের বকেয়া পাওনা আদায়ের জন্য তথ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন সাংবাদিক নেতারা।
নেতারা বলেন, একসময় ৩ লাখের সার্কুলেশনের পত্রিকাটির সম্পাদক বাহাউদ্দীনের হঠকারি সিদ্ধান্ত এবং নীতি বদলের কারণে আজ পত্রিকাটির সার্কুলেশন ৩ হাজারে নেমে এসেছে। সাংবাদিক কর্মচারিদের কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করে তিনি দেশ-বিদেশে একাধিক বাড়ী, নতুন মড়েলের গাড়ী কিনছেন কিন্তু শ্রমিকের পাওনা পরিশোধ করছে না। বিষয়টি খতিয়ে দেখতে দুদকের দৃষ্টি আকর্ষন করেন বক্তারা। এছাড়া সাংবাদিকদের দাবি আদায় না হলে ইনকিলাবের সম্পাদক এ এম এম বাহাউদ্দীনের বাড়ির সামনে অবস্থান কর্মসূচির পালনের হুশিয়ারি দেওয়া হয়।
এদিকে দৈনিক ইনকিলাবের চাকুরিচ্যুত সাংবাদিক-কর্মচারি ঐক্য পরিষদ ৫ দিনের কর্মসূচী ঘোষণা করে। কর্মসূচিতে রয়েছে ইনকিলাব সম্পাদকের অনিয়ম, দুর্নীতি, জবরদখল, কুকীর্তিসহ নানা অজানা তথ্য তুলে ধরে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় লিফলেট বিতরণ।
১৩ জুন মঙ্গলবার তথ্যমন্ত্রণালয়, পিআইবি, ডিএফপি, পিআইডি ও প্রেস কাউন্সিলের সামনে, ১৪ জুন বুধবার দুর্নীতি দমন কমিশন, এনবিআর, এলজিআরডি, বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড ও পানি উন্নয়ন বোর্ড, ১৫ জুন বৃহস্পতিবার – জাতীয় প্রেস ক্লাব এলাকায়, ১৬ জুন শুক্রবার- গাউসুল আজম মসজিদের সামনে, ১৭ জুন শনিবার – দৈনিক ইনকিলাবের সামনে গণসংযোগ ও লিফলেট বিতরণ করা।
চাকরিচ্যুত সাংবাদিক শামীম চৌধুরীর সভাপতিত্বে এবং সিনিয়র রিপোর্টার আফজাল বারী-এর সঞ্চালনায় অবস্থান কর্মসূচিতে বক্তব্য রাখেন- বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) সাবেক মহাসচিব এম এ আজিজ, বর্তমান যুগ্ম সম্পাদক অমিয় ঘটক পুলক, সাবেক কোষাধ্যক্ষ খায়রুজ্জামান কামাল, সাবেক কোষাধ্যক্ষ আতাউর রহমান, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) সভাপতি শাবান মাহমুদ, সাবেক সহ-সভাপতি মো. খায়রুল বাশার, সাবেক সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ বাকের হোসাইন, সাবেক যুগ্ম-সম্পাদক আব্দুল মজিদ, বর্তমান কোষাধ্যক্ষ সেবিকা রানী, কার্য নির্বাহী কমিটির সদস্য মোর্তুজা হায়দার লিটন, বিএফইউজের কার্যনির্বাহী কমিটির সাবেক সদস্য কবি আব্দুল মান্নান, বাসসের ইউনিট চীফ আবুল কালাম মানিক, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন বাদশা, সাবেক অর্থ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম, সাবেক সহ-সভাপতি আজমল হক হেলাল, বর্তমান ক্রীড়া সম্পাদক মজিবর রহমান, কার্যনির্বাহী কমিটির সাবেক সদস্য ওসমান গণি বাবুলসহ ইনকিলাবের চাকরিচ্যুত সাংবাদিকরা।
এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স এসোসিয়েশনের সভাপতি আবু সালেহ আকন্দ, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক শেখ জামাল, সাবেক ক্রীড়া সম্পাদক মনির হোসন, সাবেক দফতর সম্পাদক শুক্কুর আলী শুভ, সাবেক কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য ফারুক খান, ডিইউজের কার্যনির্বাহী সদস্য এরফানুল হক নাহিদ, জসিম উদ্দিন, ঢাকাস্থ কুমিল্লা জার্নালিষ্ট ফোরামের সাংগঠনিক সম্পাদক সালাম ফারুক প্রমুখ।
উল্লেখ্য বকেয়ার মাত্র ৩০ শতাংশ অর্থ বুঝিয়ে দিয়ে সমুদয় পাওনা বুঝিয়া পাইলাম এই মর্মে ৩০০ টাকার স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর ও টিপ সই দিতে বাধ্য করার অনৈতিক প্রস্তাবনা থেকে ইনকিলাব কর্ত্তৃপক্ষ এখনও ফিরে আসেনি। আলোচনার নামে ইনকিলাবেব হিসাব বিভাগ থেকে মালিকের প্রতিনিধিরা একই প্রস্তবনা দিয়েছেন।
অথচ ইনকিলাব সম্পাদককের এই মানবাতাবিরোধী ও গোটা সাংবাদিক সমাজের জন্য অবমাননাকর প্রস্তাবনায় রাজি না হওয়ায় গত ৩০ এপ্রিল থেকে ৯ মে ২০১৭- এর মধ্যে বিনা নোটিশে ১শ’ জন সাংবাদিক-কর্মচারিকে চাকুরিচ্যুত করা হয়।
বাংলা৭১নিউজ/এসএস