কিশোরগঞ্জের ভৈরবে ইউপি নির্বাচনে হট্টগোল কেন্দ্রে না গিয়েও পুলিশ অ্যাসাল্ট মামলার আসামি হলেন পরাজিত চেয়ারম্যান প্রার্থী ফজলুল কবির। এছাড়া মো. লিটন মিয়া একই ইউনিয়নে নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিপুল ভোটে বিজয়ী হয়েছেন কিন্তু পুলিশ তাকেও মামলার আসামি করে।
একজন বিজয়ী চেয়ারম্যান ফলাফল জানার পর রাতেই জানতে পারেন তাকে পুলিশ অ্যাসাল্ট মামলার আসামি করা হয়েছে।
হট্টগোলের ঘটনাটি ঘটেছে ভৈরব উপজেলার কালিকাপ্রসাদ ইউনিয়নের খাসহাউলা ভোট কেন্দ্রে। নির্বাচনে লিটন মিয়া ও ফজলুল কবির ছিলেন স্বতন্ত্র ( বিদ্রোহী) চেয়ারম্যান প্রার্থী। তার মধ্য লিটন মিয়া বিপুল ভোটে বিজয়ী হয়েছেন। মামলার ঘটনায় স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাসহ কালিকাপ্রসাদের জনগণ ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
গত ২৬ ডিসেম্বর ভৈরবের ৭টি ইউনিয়নে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এদিন ওই ইউনিয়নে খাসহাওলা কেন্দ্রে দুই মেম্বার প্রার্থীর মধ্য হট্টগোল হয়েছে বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে। হট্টগোল থামাতে পুলিশ কয়েক রাউন্ড গুলিও ছোড়ে। এ ঘটনায় ওই রাতে ৬ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত ৫০ জনকে আসামি করে পুলিশ বাদী হয়ে একটি মামলা করে।
ওই মামলায় এক নাম্বার আসামি করা হয়েছে চেয়ারম্যান পদে বিপুল ভোটে বিজয়ী মো. লিটন মিয়াকে এবং দুই নাম্বার আসামি করা হয় পরাজিত চেয়ারম্যান প্রার্থী ফজলুল কবিরকে।
এ ঘটনায় স্থানীয় সংসদ সদস্য নাজমুল হাসান পাপন ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
এ বিষয়ে ফজলুল কবির জানান, নির্বাচনের দিন আমি ওই কেন্দ্রই যায়নি। কিন্তু পুলিশ অ্যাসাল্ট মামলায় আমাকে আসামি করা হয়। কারো ইন্ধনে থানার ওসি মামলায় আমাকে আসামি করেছে বলে তিনি দাবি করেন।
বিজয়ী প্রার্থী মো. লিটন মিয়া জানান, হট্টগোলের খবর পেয়ে আমি কেন্দ্রে গিয়ে ঘটনাটি শান্ত করার চেষ্টা করি। পুলিশের ওপর আক্রমণ, অস্ত্র ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা, বানোয়াট ও কাল্পনিক বলে তিনি দাবি করেন।
কালিকাপ্রসাদ এলাকার আওয়ামী লীগ নেতা নজরুল ইসলাম বলেন, একজন বিজয়ী চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে; যা ভৈরবের অতীত ইতিহাসে এমন ঘটনা ঘটেনি। ঘটনার জন্য তিনি থানার ওসিকেই দায়ী করেন। এ ঘটনায় এলাকায় ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে বলে তিনি জানান।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম সেন্টু জানান, নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী যিনি বিজয়ী হয়েছেন তিনি আওয়ামী লীগের দলীয় সমর্থিত নেতা। স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে নির্বাচন করেছেন। তার বিরুদ্ধে মামলা দেওয়ার ঘটনাটি দুঃখজনক।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. সায়দুল্লাহ মিয়া বলেন, থানার ওসি কেন, কী কারণে বিজয়ী প্রার্থীর বিরুদ্ধে পুলিশ অ্যাসাল্ট মামলা করল তা আমার কাছে বোধগম্য নয়। ঘটনাটি ন্যক্কারজনক হয়েছে বলে তিনি জানান।
ভৈরব থানার ওসি মো. গোলাম মোস্তফা জানান, মামলা করেছেন ভোট কেন্দ্রে দায়িত্বপ্রাপ্ত পুলিশ অফিসার আমিনুল ইসলাম।
ফজলুল কবির ঘটনার সময় উপস্থিত ছিলেন না; এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আসামিরা অপরাধের কথা কখনো স্বীকার করবে না। মামলার তদন্তে ভিডিও ফুটেজ দেখা হবে। আসামিরা অপরাধের সঙ্গে যুক্ত না থাকলে চার্জশিটে তাদের নাম বাদ দেওয়া হবে বলে তিনি জানান।
বাংলা৭১নিউজ/এসএইচ