ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) ছাত্রলীগের প্যানেল (২০১৯-২০) থেকে ঢাবির ১০০ শিক্ষার্থীকে বাইসাইকেল দেওয়া হয়েছে। ডাকসুর স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সম্পাদক ও বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের সাংগঠনিক সম্পাদক সাদ বিন কাদের চৌধুরীর উদ্যোগে এসব সাইকেল দেওয়া হয়।
সোমবার (২০ ডিসেম্বর) বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শান্তির পায়রা চত্বরে এ সাইকেল প্রদান অনুষ্ঠান আয়োজিত হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য আব্দুর রহমান বলেন, আজ রাজনৈতিক অশুভ শক্তিরা, নিন্দুকেরা ছাত্রলীগকে নানাভাবে কলঙ্কিত করার চেষ্টা করছে। সে চেষ্টা ব্যর্থ হয়ে গেছে। কিন্তু আজকে ওরা নিজেরাই জনগণ বিচ্ছিন্ন হয়েছে নামসর্বস্ব সংগঠনে পরিণত হয়েছে। কিন্তু ছাত্রলীগ সেবার মাধ্যমে জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে গেছে। করোনাকালে সারাদেশে ছাত্রলীগের কার্যক্রম প্রশংসিত হয়েছে। তারা জনগণের মাঝে অক্সিজেন দিয়েছে, খাদ্য পৌঁছে দিয়েছে, কৃষকের ধান কেটে দিয়েছে।
ডাকসুর নির্বাচনের বিষয়ে তিনি বলেন, ডাকসু নির্বাচনে কয়েক’শ ভোটের ব্যবধানে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ মনোনীত ভিপি প্রার্থী শোভন ভিপি প্রার্থী নুর সাহেবের কাছে পরাজিত হয়েছিল। সেই পরাজয় সানন্দে আমরা মেনে নিয়েছিলাম। কিন্তু এটাও সত্য, যে স্বার্থ নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সমাজ শোভনকে পরাজিত করেছিল- আজকে যদি ডাকসু নির্বাচন হয় এবং সে নির্বাচনে শোভন-নুর প্রতিদ্বন্ধী হলে নুর তার জামানত হারাবে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রোর নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে রহমান বলেন, আমেরিকা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে মানবতার কথা বলে আমাদের এ জাতিকে হেয় প্রতিপন্ন করতে চায়। যাদের দেশে আমার পিতার খুনিরা আশ্রয় পায়, মানবতা নিয়ে তাদের মুখে কোনো কথা শোভা পায় না। স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় সপ্তম নৌবহর পাঠিয়ে বাংলার মানুষকে তারা দমন করতে চেয়েছিল।
১৯৭৪ সালে বঙ্গবন্ধু বাংলার মানুষের জন্য সহায়তা চাইলে সেদিন নিক্সন বলেছিল, আপনার বাংলার মানুষকে অর্থে-বিত্তে, খাবারে আমরা গড়ে দেবো। আপনার কোনো চিন্তা নেই, শুধু ছোট্ট একটু দাবি মানতে হবে। কক্সবাজারের অদূরে সেন্ট মার্টিনে আমাদের নৌ ঘাঁটি করার সুযোগ দিতে হবে। বঙ্গবন্ধু সেদিন চোখের পানি মুছতে মুছতে বলেছিলেন, বাংলার যে দামাল ছেলেরা ৯ মাস যুদ্ধ করে শত্রুমুক্ত করেছে, সে বাংলার মানুষ না খেয়ে মারা যাবে তবুও বাংলার এক ইঞ্চি মাটি বিদেশি কাউকে ব্যবহার করতে দেবে না।
অনুষ্ঠানের উদ্বোধনী বক্তব্যে ঢাবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আক্তারুজ্জামান বলেন, সাইকেল প্রদানের মাধ্যমে পরিবেশ উন্নয়ন ও সংরক্ষণে লক্ষ্যনীয় মাত্রায় ভূমিকা রাখবে। কারণ এটি একটি শৃঙ্খলার বহিপ্রকাশ। আমরা এমন একটি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস চাই যে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস থাকবে ওয়েল কানেক্টেড। ওয়াকওয়ে এবং বাইসাইকেল লেনের মাধ্যমে এ কানেক্টেভিটি নিশ্চিত করা হবে।
আমরা যে মাস্টাপ্ল্যান প্রণয়ন করেছি, মাস্টারপ্ল্যানে প্রধানমন্ত্রী যে নির্দেশনা দিয়েছেন এ কর্মসূচির মাধ্যমে তার একটি প্রতিফলন হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস হবে একটি নিরাপদ ক্যাম্পাস যেখানে কানেক্টিভিটি থাকবে পায়ে হাঁটা পথ থাকবে, একই সঙ্গে বাইসাইকেল চালানোর লেন থাকবে। ডাকসু সদস্যবৃন্দ এ জায়গাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। আমরা তাদেরকে ধন্যবাদ দেই, বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ সুন্দর রাখার জন্য এবং মাস্টারপ্ল্যান বাস্তবায়নে আমাদের লক্ষ্য এবং পরিবেশবান্ধব পরিস্থিতি নিশ্চিত করার জন্য উদ্যোগ নেওয়ার জন্য।
ডাকসু সদস্য নজরুল ইসলামের সঞ্চালনায় প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য দেন- বাংলাদেশ আওয়ামী সাংগঠনিক সম্পাদক বি এম মোজাম্মেল, বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্যে দেন দর্শন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. রেবেকা সুলতানা, নাভানা গ্রুপের সিইও ওয়াহেদ আজিজুর রহমান, বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয়, সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি সনজিত চন্দ্র দাস, সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন প্রমুখ।
বাংলা৭১নিউজ/এসএইচ