বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:৫৮ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম
ফায়ার সার্ভিস কর্মীকে চাপা দেওয়া ট্রাকচালক ধরা পড়ল শিক্ষার্থীদের হাতে সিরিয়ায় আসাদপন্থিদের ‘অতর্কিত হামলায়’ ১৪ নিরাপত্তা সদস্য নিহত ক্ষতিগ্রস্ত ভবনে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সচিবালয় এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার, দুই প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন আট-নয় তলার নথিপত্র সব পুড়ে গেছে বলে ধারণা ফায়ার ডিজির পঞ্চগড়ে বইছে শৈত্যপ্রবাহ ভারতের মহারাষ্ট্রে ১৭ বাংলাদেশি গ্রেপ্তার অন্তর্বর্তী সরকারের উদারতা জাতিকে অনন্তকাল ভোগাবে : হাসনাত আব্দুল্লাহ স্বৈরাচার পালিয়ে গেলেও দেশকে অস্থির করার ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে ভেতরে প্রবেশ করছেন সচিবালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা লামায় অগ্নিসংযোগের ঘটনায় ড. ইউনূসের নিন্দা আগুনের সূত্রপাত কীভাবে তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি : ফায়ারের ডিজি সচিবালয়ের আগুন ৬ ঘণ্টা পর নিয়ন্ত্রণে সড়কে পড়ে আছে ফায়ারকর্মী নয়নের হেলমেট ও তাজা রক্ত সচিবালয়ে আগুন: যে হুঁশিয়ারি দিলেন আসিফ মাহমুদ আগুন ৬ তলায় লেগে উপরে গেছে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা সবাই একসঙ্গে শান্তিতে থাকতে চাই : পররাষ্ট্র উপদেষ্টা নির্মাণাধীন ভবনের ছাদে থেকে পড়ে বিদ্যুতায়িত, দুই শ্রমিকের মৃত্যু ‘আমাদের একমাত্র লক্ষ্য শান্তি ও স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করা’ বাংলাদেশ সীমান্তে অতিরিক্ত বিএসএফ মোতায়েন

নওগাঁয় সরিষা ফুল থেকে মধু সংগ্রহে ব্যস্ত খামারি

বাংলা৭১নিউজ,ডেস্ক:
  • আপলোড সময় রবিবার, ১৯ ডিসেম্বর, ২০২১
  • ৫০ বার পড়া হয়েছে

নওগাঁর মান্দা উপজেলায় ফসলের মাঠ সরিষা ফুলে ফুলে ছেয়ে গেছে। এখন সরিষার ক্ষেতের পাশে মৌবাক্স স্থাপন করে কৃত্রিম পদ্ধতিতে মধু সংগ্রহে ব্যস্ত খামারিরা। ক্ষেতের পাশে ও ফাঁকা স্থানে মৌবাক্স স্থাপন করে চাষিরা একদিকে যেমন মধু সংগ্রহ করে লাভবান হচ্ছেন, অন্যদিকে ফুলের কৃত্রিম পরাগায়নে ফসলের উপকার হচ্ছে।

আগামীতে নওগাঁ মধু উৎপাদনকারী জেলা হিসেবে পরিচিতি লাভ করবে। এছাড়া এ জেলায় ব্যাপকভাবে বাণিজ্যিকভিত্তিতে মধু সংগ্রহ সম্ভব বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে জেলার ১১টি উপজেলায় ৩২ হাজার ১০০ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। যেখানে ৩৩ হাজার ৬৪০ হেক্টর জমিতে সরিষার আবাদ হয়েছে। এ পরিমাণ জমি থেকে চলতি বছর ২৭ হাজার ৩০০ কেজি মধু সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।

 

জেলার মান্দা উপজেলার নুরুল্লাহবাদ ইউনিয়নের কৈইকুড়ি গ্রাম, তেঁতুলিয়া ইউনিয়নের শ্রীরামপুর গ্রাম ও শংকরপুর গ্রাম, ভারশোঁ ইউনিয়নের ভারশোঁ গ্রামে সরিষা ক্ষেতের পাশে মৌবাক্স স্থাপন করে কৃত্রিম পদ্ধতিতে মধু সংগ্রহ করছেন মৌচাষিরা।

মৌমাছি ফুল থেকে রেণু সংগ্রহ করে পরাগায়ন হওয়ায় ফলন বৃদ্ধি পাবে। স্থানীয়ভাবে কেউ মধু সংগ্রহ না করলেও রাজশাহী জেলার মোহনপুর উপজেলার দর্শনপাড়া থেকে এসে দুই উদ্যোক্তা মধু সংগ্রহ করছেন কৈইকুড়ি ও শ্রীরামপুর গ্রামে।

মধু সংগ্রহের সময় নভেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। সরিষা ক্ষেতের পাশে অভিনব উপায়ে ইউরোপিয়ান মেলিফেরা জাতের মৌমাছি দিয়ে কৃত্রিম পদ্ধতিতে মৌবাক্স দিয়ে মধু সংগ্রহে ব্যস্ত দেখা যায় তাদের। ৩০০ টাকা কেজি হিসেবে এ মৌসুমে জেলা থেকে প্রায় ৮২ লাখ টাকার মধু সংগ্রহ হবে।

উপজেলার দোডাঙ্গী সরিষা চাষি আব্দুল লতিফ বলেন, তিনি এবছর আড়াই বিঘা সরিষা আবাদ করেছেন। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় সরিষার আবাদও ভালো হয়েছে। খামারিরা এসে আমার ক্ষেতের পাশেই মৌবাক্সগুলো স্থাপন করেছেন। মৌমাছিরা ফুল থেকে মধু সংগ্রহ করছেন। ফুলে পরাগায়নের ফলে ফলনও ভালো হবে বলে জানিয়েছে কৃষি অফিস।

 

উদ্যোক্তা রুমিনুল ইসলাম রুস্তম বলেন, ক্ষেতের পাশে ১৩০টি মৌবাক্স স্থাপন করেছেন। নভেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে মৌবাক্সগুলো স্থাপন করেছি। প্রতিটি বাক্সে ৮টি করে ফ্রেম আছে। এপর্যন্ত তিনবারে ২৬ মণ মধু সংগ্রহ করেছি। সরিষা মৌসুমে চার মাসে প্রায় ৬০-৭০ মণ মধু সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছি।

প্রতিকেজি মধু পাইকারি দাম ৩০০ টাকা কেজি। ১২ হাজার টাকা মণ হিসেবে ৭০ মণের দাম ৮ লাখ ৪০ টাকা। সরিষা মৌসুমে বাড়ি আসা যাওয়া, শ্রমিক ও পরিবহন খরচ হবে প্রায় ৬০ হাজার টাকা। তবে সরিষা মৌসুমে বেশি পরিমাণ মধু সংগ্রহ করা হয়।

বছরে ৭ মাস মধু সংগ্রহ করা হয়। মূলত সরিষা, কালোজিরা ও লিচু ফুল থেকে মধু সংগ্রহ করেন। আর বাকি সময় মৌমাছিকে রয়েল জেলি খাইয়ে পুষতে হয়। রাজশাহী থেকে পাইকারি ব্যবসায়ী এবং বিভিন্ন প্রসাধনী প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান এসে পাইকারি মূল্যে কিনে নিয়ে যায়।

স্থানীয় বাসিন্দা ইব্রাহিম হোসেন বলেন, একসময় প্রাকৃতিকভাবে মধু সংগ্রহ করা হত। কিন্তু প্রকৃতিতে বন জঙ্গলের পরিমাণ কমে গেছে। মৌমাছি আর আগের মতো জঙ্গলগুলোতে মৌচাক বাঁধতে দেখা যায় না। কিন্তু বর্তমানে কিছু খামারি কৃত্রিম পদ্ধতিতে ক্ষেতের পাশে মৌবাক্স স্থাপন করে মধু সংগ্রহ করছেন।

 

মধু সংগ্রহ করায় একদিকে যেমন আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছে। অপরদিকে পুষ্টির চাহিদা পূরণ হচ্ছে এবং ফসলও ভালো হচ্ছে। শিক্ষিত বেকাররা যদি প্রশিক্ষণ নিয়ে মধু চাষ শুরু করে তাহলে তাদের কর্মসংস্থানের পাশাপাশি বেকারত্ব দূর হবে।

নওগাঁ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. শামসুল ওয়াদুদ বলেন, গত বছর সরিষার জমিতে ২০ হাজার ২৩২টি মৌবাক্স স্থাপন করা হয়েছিল। যেখান থেকে প্রায় ২৬ হাজার ২৪৫ কেজি মধু উৎপাদন হয়েছিল। এবছর মৌবাক্সের সংখ্যা আরো বাড়বে।

তিনি বলেন, প্রশিক্ষিত কিছু মৌচাষি আছে যারা প্রতিবছর কৃষকদের সঙ্গে যোগাযোগ করে সরিষা মৌসুমে কৃত্রিম পদ্ধতিতে মধু সংগ্রহ করেন। ক্ষেতের পাশে মৌবাক্স স্থাপন করায় ফুলে কৃত্রিম পরাগায়নের ফলে সরিষার ফলনও ভালো হয়। মধু উৎপাদন বাড়ার পাশাপাশি পুষ্টির চাহিদা পূরণ হবে।

বাংলা৭১নিউজ/বিএফ

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরও সংবাদ
২০১৫-২০২৪ © বাংলা৭১নিউজ.কম কর্তৃক সকল অধিকার সংরক্ষিত।
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com