ক্যালেন্ডারের পাতা ঘুরে প্রতিবছরের ডিসেম্বরেই আসে বিজয়ের দিন। কিন্তু এবারের বিজয় দিবস প্রতিবারের মতো নয়। এবার বিজয় পূর্ণ করেছে অর্ধশত বছর। বিশেষ এই মাহেন্দ্রক্ষণকে স্মরণীয় করে রাখতে রংতুলিতে ক্যাম্পাস রাঙিয়েছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় প্রেস ক্লাব। বিজয়ের সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন স্থানে ৫০টি আলপনা এঁকেছে প্রগতিশীল সাংবাদিক সংগঠনটি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সৃজনশীল শিল্প সংগঠন বুননের সহযোগিতায় রংতুলির আঁচড়ে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে এসব শিল্পকর্ম।
বাহারি রঙে আঁকা আলপনায় ক্যাম্পাসের সৌন্দর্য বেড়েছে বহুগুণে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক, প্রশাসন ভবনের সামনে, ডায়না চত্ত্বর, আবাসিক হলগুলোর সামনে ও ক্যাম্পাসের প্রধান প্রধান সড়কগুলোর সংযোগ স্থলে দক্ষ হাতে এসব আলপনা আঁকেন বুনন কর্মীরা। ১৫ ডিসেম্বর সকাল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত প্রেস ক্লাব ও বুনন সদস্যদের অক্লান্ত পরিশ্রমে আঁকা এসব আলপনায় দেশের জাতীয় ও ঐতিহ্যবাহী ফুল, পশু-পাখি ও বাঙালি সংস্কৃতিকে ফুটিয়ে তোলা হয়। বিজয় দিবসের কর্মসূচিতে এসে মুগ্ধ হয়ে এসব আল্পনা অবলোকন করেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
বুননের সাধারণ সম্পাদক সোলায়মান হোসেন শাওন বলেন, ‘আমরা সকাল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত কাজ করলেও অজানা কারণে কোনো ক্লান্তি বোধ হয়নি। আমাদের হাতে আঁকা আলপনাগুলো যখন সবাই আগ্রহ ভরে দেখছে তখন অন্যরকম ভালোলাগা কাজ করছে। ঐতিহাসিক এই সময়টিতে প্রেস ক্লাবের সাথে কাজ করতে পেরে আমরা আনন্দিত।’
ইবি প্রেস ক্লাবের সভাপতি সরকার মাসুম বলেন, ‘বিজয়ের সুবর্ণজয়ন্তীকে স্মরণীয় করে রাখতেই আমাদের এই উদ্যোগ। এটি বাস্তবায়নে যারা আমাদের সহযোগিতা করেছেন তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি।’
প্রেস ক্লাবের এ উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনও। রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর হোসেন অংকন কর্ম পরিদর্শন করেন।
কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. আলমগীর হোসেন ভূঁইয়া বলেন, ক্যাম্পাসে প্রবেশ করেই আলপনাগুলো চোখে পড়েছে। প্রেস ক্লাবের চমকপ্রদ এই আয়োজনে আমরা অভিভূত।
উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘বিজয়ের সুবর্ণজয়ন্তীতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রেস ক্লাব যে আয়োজন করেছে এটি সত্যিই প্রশংসার দাবিদার। আমি ঘুরে ঘুরে আলপনাগুলো দেখেছি, বিজয়ের দিনে এগুলো ক্যাম্পাসকে নতুন রূপ দিয়েছে।’
এ দিকে দিবটি উপলক্ষে সকালে প্রশাসন ভবনের সামনে পতাকা উত্তোলন ও বেলুন উড়ানো হয়। পরে সেখান থেকে একটি বর্ণাঢ্য আনন্দ শোভাযাত্রা বের করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। শোভাযাত্রাটি ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে স্বাধীনতার স্মারক ভাস্কর্য ‘মুক্ত বাংলা’য় শহীদদের স্মরণে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদনে মিলিত হয়। সেখানে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন, শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিভিন্ন সংগঠন, বিভাগ ও আবাসিক হল শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করে। এ ছাড়া শিক্ষক-কর্মকর্তাদের নিয়ে প্রীতি ভলিবল ম্যাচ, মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও আবাসিক হলগুলোতে প্রীতি ভোজের আয়োজন করা হয়।
বাংলা৭১নিউজ/এসএইচ