ব্লাস্ট প্রতিরোধী গমের জাত উদ্ভাবন ও উন্নত জাত বাছাইয়ে সাফল্য পেয়েছেন বাংলাদেশের বিজ্ঞানীরা। এখন দেশেই দেশি-বিদেশী গমের জাত বাছাই করা হচ্ছে। বাছাইকৃত এসব জাতের ফলাফল নিয়ে শুধু বাংলাদেশই নয়, উপকৃত হচ্ছে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত, নেপাল, চীন, মেক্সিকোসহ বিভিন্ন দেশ। এরইমধ্যে বাংলাদেশ গম ও ভুট্টা গবেষনা ইন্সটিটিউট গমের ব্লাস্ট প্রতিরোধী শক্তিশালী জাত হিসেবে বারি গম-৩৩ ও ডব্লিউএমআরআই গম-৩ নামে দুটি জাত অবমুক্ত করেছে।
সোমবার (২২ নভেম্বর) দুপুরে বাংলাদেশ গম ও ভুট্টা গবেষণা ইনস্টিটিউটের সেমিনারকক্ষে ‘গমের ব্লাস্ট রোগের বর্তমান অবস্থা, বিগত বছরসমূহের গবেষণার ফলাফল মূল্যায়ন ও ভবিষ্যৎ করণীয়’ বিষয়ে তিন দিনব্যাপী পর্যালোচনা কর্মশালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এসব তথ্য জানানো হয়।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, ২০১৬ সালে বাংলাদেশে সর্বপ্রথম গমের ব্লাস্ট রোগ দেখা দেওয়ার পর থেকে ব্লাস্ট নিয়ন্ত্রণে পদক্ষেপ নেয় সরকার। এর অংশ হিসেবে ২০১৭ সালে আর্ন্তজাতিক ভুট্টা ও গম উন্নয়ন কেন্দ্র (সিমিট) ও অস্ট্রেলিয়ান সেন্টার ফর ইন্টারন্যাশনাল এগ্রিকালচারাল রিসার্চ (এসিআইএআর)-এর অর্থায়নে একটি প্রকল্প গৃহীত হয়। এর আওতায় যশোরে আঞ্চলিক কৃষি গবেষণা কেন্দ্রে একটি আন্তর্জাতিক মানের স্ক্রিনিং প্ল্যাটফর্ম স্থাপন করা হয়। এই প্ল্যাটফর্মে প্রতি বছর বিভিন্ন দেশ থেকে সংগৃহীত ৪-৫ হাজার জার্মপ্লাজম মূল্যায়ন কার্যক্রম চলমান রয়েছে। গবেষণায় সাফল্যের অংশ হিসেবে এরইমধ্যে ব্লাস্ট প্রতিরোধী জাত হিসেবে বারি গম-৩৩ ও ডব্লিউএমআরআই গম-৩ অবমুক্ত করা হয়েছে। গমের নতুন জাত অবমুক্তকরণে এই প্রকল্প থেকে সুবিধা পাওয়া যাচ্ছে। চলমান গবেষণা থেকে ব্লাস্ট প্রতিরোধী আরও অধিক শক্তিশালী জাত উদ্ভাবিত হবে।
বাংলাদেশ গম ও ভুট্টা গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. গোলাম ফারুকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেব উপস্থিত ছিলেন কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব কমলারঞ্জন দাশ। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন এসিআইএআর’র প্রোগ্রাম ম্যানেজার ড. লি ভায়াল, সিমিট বাংলাদেশের কান্ট্রি লিয়াজো কর্মকর্তা ড. টিম ক্রুপনিক, সিমিট ভারতের প্রতিনিধি ড. অরুন কুমার যশি এবং ডিএই দিনাজপুর অঞ্চলের অতিরিক্ত পরিচালক শাহ আলম।
অনুষ্ঠানে মেক্সিকো, ভারত, অস্ট্রেলিয়ার বিশেষজ্ঞ বিজ্ঞানী, বাংলাদেশ গম ও ভুট্টা গবেষণা ইনস্টিটিউটের বিজ্ঞানী, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, বিএডিসি, বীজ প্রত্যয়ন এজেন্সি, বীজ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান, এনজিও প্রতিনিধিরা অংশ নেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব কমলারঞ্জন দাশ বাংলাদেশে গম ও ভুট্টার আবাদ বৃদ্ধির উপর গুরুত্ব আরোপ করেন। কর্মশালায় উপস্থিত কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের তিনি এ ব্যাপারে নির্দেশনা দেন।
বাংলাদেশ গম ও ভুট্টা গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. গোলাম ফারুক জানান, সবার সহযোগিতায় বাংলাদেশ ও দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলে ব্লাস্ট রোগ মোকাবিলা করা সম্ভব হবে। আন্তর্জাতিক সহযোগিতার জন্য তিনি সিমিট ও এসিআইএআরকে ধন্যবাদ জানান।
বাংলা৭১নিউজ/এমকে