লাখো মানুষের অংশগ্রহণে বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকতে প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া হয়েছে। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজার শেষ দিন বিজয়া দশমীতে সৈকতের লাবনী পয়েন্টে দেবীদুর্গাকে বিসর্জন দেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা।
গেল বছর করোনার মহামারি থাবায় এ উৎসব উল্লেখযোগ্যভাবে পালন করতে পারেনি এ সম্প্রদায়ের মানুষ। যে কারণে এ বছর ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে পালন করেছে সনাতন ধর্মাবলম্বীরা। তবে হিন্দু সম্প্রদায়ের পাশাপাশি দেবীদুর্গা বিসর্জনে দেখা গেছে দেশি-বিদেশি পর্যটকসহ সব সম্প্রদায়ের মানুষকে।
শুক্রবার বিকাল ৩টা থেকে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজার শেষ দিন বিজয়া দশমীতে সৈকতের লাবনী পয়েন্টে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে কক্সবাজার জেলা পূজা উদযাপন পরিষদ।
আয়োজকরা জানান, শুধুমাত্র সৈকতের লাবনী পয়েন্টে এ অনুষ্ঠানে বিভিন্ন উপজেলা থেকে আসা শতাধিক প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া হচ্ছে। এছাড়া একই সময়ে কক্সবাজারের রামুর বাঁকখাল নদী, চকরিয়ার মাতামুহুরী, টেকনাফের সাগর ও নাফনদী, উখিয়ার ইনানী সৈকত এবং রেজু নদীতে প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া হয়েছে। রামু ও চকরিয়ায় পৃথক প্রতিমা বিসর্জন অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে।
কক্সবাজার সদর উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সাংবাদিক বলরাম দাশ অনুপম বলেন, এবার মা দুর্গা এসেছেন ঘোড়ার পিঠে চড়ে। যাচ্ছেনও ঘোড়ায় চড়ে। এ কারণে এবার আমরা ঝড়-ঝাপটার আশঙ্কা করেছিলাম। তাই মা দুর্গার কাছে আমাদের বিশেষ প্রার্থনা ছিল- প্রাকৃতিক বিপর্যয় থেকে মানুষ যেন রক্ষা পায়। মা দুর্গা আমাদের প্রার্থনা শুনেছেন। যে কারণে আবহাওয়া আমাদের অনুকূলেই রয়েছে।
এদিকে প্রতিমা বিসর্জন অনুষ্ঠানকে ঘিরে সৈকতের লাবনী পয়েন্টে শুক্রবার দুপুর ২টার পর থেকে জেলার উখিয়া, টেকনাফ, সদর, ঈদগাঁও, চৌফলদণ্ডী ছাড়াও নাইক্ষ্যংছড়ি থেকে শোভাযাত্রা সহকারে প্রতিমা আসতে শুরু করে। ট্রাকে ট্রাকে আসা প্রতিমায় ভরে যায় সমুদ্র সৈকতের অনুষ্ঠানস্থল। বিকাল প্রায় ৫টা পর্যন্ত সৈকতের বালুচরে রাখা দুর্গা প্রতিমা ঘিরে চলে ভক্তদের শেষ আরাধনা। শুধু তাই নয়, নাচে-গানে এক অন্যরকম আনন্দমুখর পরিবেশ সৃষ্টি হয় বিশ্বের দীর্ঘতম এ সৈকতে। অনুষ্ঠানকে ঘিরে সমাগম ঘটে পর্যটকসহ জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে আসা লাখো মানুষের।
কক্সবাজারের পুলিশ সুপার মো. হাসানুজ্জামান বলেন, জেলার আট উপজেলার ৩০২টি পূজামণ্ডপে তিন স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদারের মধ্য দিয়ে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় শারদীয় দুর্গোৎসব শেষ হচ্ছে।
বাংলা৭১নিউজ/এসএইচ