চলমান জনরোষ ও দেশজুড়ে ব্যাপক বিক্ষোভের পর ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট প্রাবোও সুনিয়ান্তো তার মন্ত্রিসভায় বড় ধরনের রদবদল করেছেন। এর অংশ হিসেবে সোমবার তিনি পাঁচজন মন্ত্রীকে বরখাস্ত করেছেন। বিক্ষোভের পেছনে সরকারের উদাসীনতা ও মন্ত্রীদের উচ্চ ভাতা নিয়ে ক্ষোভকে কেন্দ্রীয় কারণ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
আল-জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রেসিডেন্ট প্রাবোওর প্রশাসন এবং সংসদ সদস্যদের বিরুদ্ধে জনমনে ক্ষোভ চরমে পৌঁছালে বিষয়টি নিয়ে মন্ত্রিসভায় তীব্র আলোচনা হয়। এর পরই বরখাস্তের সিদ্ধান্ত আসে।
মন্ত্রীত্ব হারানোদের মধ্যে সবচেয়ে আলোচিত নাম অর্থমন্ত্রী শ্রী মুল্যানি ইন্দ্রাবতী। তিনি আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (IMF)-এর সাবেক নির্বাহী পরিচালক এবং বিশ্বব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন।
এছাড়া রাজনীতি ও নিরাপত্তা বিষয়ক সমন্বয়কারী মন্ত্রী বুদি গুণাওয়ান, সমবায় মন্ত্রী, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রী, এবং অভিবাসী শ্রমিক সুরক্ষা মন্ত্রী-কেও বরখাস্ত করা হয়েছে।
অর্থমন্ত্রীর দায়িত্ব পেয়েছেন ইন্দোনেশিয়ার বীমা করপোরেশনের চেয়ারম্যান যুধি সাদেওয়া। দায়িত্ব গ্রহণের পর সাংবাদিকদের তিনি জানান, “গত দুই প্রশাসনে আমি আর্থিক খাতে ব্যাপক সহায়তা দিয়েছি। এই অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে দেশকে স্থিতিশীলতা ফেরাতে কাজ করব।”
বিক্ষোভের পেছনে কারণ
২৮ কোটি ৫০ লাখ জনসংখ্যার দেশ ইন্দোনেশিয়া সম্প্রতি তীব্র অর্থনৈতিক সংকটে পড়েছে। এর মধ্যেই সরকারের প্রতিনিধিদের মাসিক ৫ কোটি রুপিয়ার আবাসন ভাতা নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়। এই ভাতা জাকার্তায় ন্যূনতম মজুরির প্রায় ১০ গুণ এবং গ্রামীণ এলাকায় তা আরও বেশি। এই তথ্য সামনে আসার পর আগস্টের শেষ দিকে দেশজুড়ে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে।
দেশটির মানবাধিকার সংস্থা দ্য ইন্ডিপেনডেন্ট ন্যাশনাল জানিয়েছে, টানা পাঁচ দিনের বিক্ষোভে কমপক্ষে ১০ জন নিহত হয়েছেন। এছাড়া আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দমন-পীড়ন ও অমানবিক আচরণেরও অভিযোগ উঠেছে।
তবে পুলিশের দাবি, বিক্ষোভে সাতজন নিহত হয়েছেন। সবচেয়ে বেশি ক্ষোভ দেখা দেয় রাজধানী জাকার্তায়, যেখানে পুলিশের একটি গাড়ির ধাক্কায় এক ডেলিভারি চালকের মৃত্যু হয়।
তথ্যসূত্র : এপি ও আল-জাজিরা।
বাংলা৭১নিউজ/এসএবি