বাংলা৭১নিউজ, ঢাকা: দেশের চিকিৎসাসেবা ও মেডিক্যাল উচ্চ শিক্ষার প্রাণকেন্দ্রে পরিণত হয়েছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ)। এখানে প্রতিদিন সকালে বহির্বিভাগে ও বিকেলে স্পেশাল আউটডোরে ৫ হাজার রোগী স্বাস্থ্যসেবা নিচ্ছেন।
আজ শুক্রবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সাগর-রুনি মিলনায়তনে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় এ তথ্য জানান বিএসএমএমইউর উপাচার্য অধ্যাপক ডা. কামরুল হাসান খান।
‘বাংলাদেশের মেডিক্যাল শিক্ষা ও স্বাস্থ্য ব্যবস্থার প্রেক্ষিত: বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়’ শীর্ষক মতবিনিময় সভার আয়োজন করে বিএসএমএমইউ।
ডা. কামরুল হাসান খান জানান, ২০১৫ সালে বিএসএমএমইউ থেকে ১১ লাখ ৬০ হাজার রোগী সেবা নিয়েছেন। এ বছর বৈকালিক স্পেশাল আউটডোরে ১ লাখ ৪০ হাজার ৫১৭ জন রোগী সেবা নেন। বিশ্ববিদ্যালয়কে চিকিৎসা শিক্ষা, চিকিৎসাসেবা ও গবেষণার ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করতে বর্তমান প্রশাসন নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
তিনি আরো জানান, ২০১৬ সালের শেষের দিকে স্পেনের সিমাগো রিসার্চ গ্রুপ ও যুক্তরাষ্ট্রের স্কপাস পরিচালিত জরিপে দেশে পঞ্চম এবং বিশ্বে ৬৪০তম স্থান লাভ করে দেশের একমাত্র মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় বিএসএমএমইউ।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা কাজের বিবরণ দিয়ে ভিসি কামরুল হাসান খান বলেন, এ বিশ্ববিদ্যালয়ে গত পাঁচ বছরে (২০১১ সাল থেকে ২০১৬ সালের অক্টোবর পর্যন্ত) ১ হাজার ৪৪৭টি গবেষণা কাজ শেষ হয়েছে। এর মধ্যে গত দুই বছরে ৭৪৩টি গবেষণা কাজ শেষ হয়। গত ২ বছরে ১০৮ জন শিক্ষক ও ৫১২ জন ছাত্রছাত্রীসহ ৬২০ জনকে গবেষণা মঞ্জুরি ও থিসিস গ্র্যান্ট দেওয়া হয়।
শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ কাজের বিবরণ তুলে ধরে তিনি বলেন, প্যাডিয়াট্রিক কার্ডিওলজি, প্যালিয়েটিভ মেডিসিন, চাইল্ড অ্যান্ড এডলসেন্ট মেন্টাল হেলথ এবং প্যাডিয়াট্রিক নিউরোলজি অ্যান্ড নিউরো ডেভেলপমেন্ট বিষয়ক এমডি রেসিডেন্সিসহ বর্তমানে ৯১টি পোস্ট গ্রাজুয়েট বিষয় চালু করা হয়েছে। দেশে প্রথমবারের মতো এমএসসি ইন নার্সিং চালু করা হয়েছে। অধিভুক্ত মেডিক্যাল কলেজ, ডেন্টাল কলেজ, ইনস্টিটিউশনের সংখ্যা বেড়ে ৪২টিতে উন্নীত হয়েছে।
বিএসএমএমইউর ভিসি বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের রয়েছে ৫৪টি বিভাগ। বর্তমানে এ বিশ্ববিদ্যালয়ে শয্যা সংখ্যা ১ হাজার ৯০৪টি। এর মধ্যে অর্ধেকই গরিব রোগীদের জন্য বিনা ভাড়ার বিছানা। এখানে রোগীদের জন্য রয়েছে পরীক্ষা-নিরীক্ষাসহ সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা। এমআরআই, সিটিস্ক্যানের মতো ব্যয়বহুল পরীক্ষাও এখানে তুলনামূলক কম খরচে আধুনিক প্রযুক্তিসমৃদ্ধ মেশিনের মাধ্যমে করা হচ্ছে। প্রায় ৪০০ জনবল নিয়ে পরিচালিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের আরো উন্নয়ন ও অগ্রগতির লক্ষ্যে বর্তমান প্রশাসন নিরলস প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, এখানে রোগীদের উন্নত মানের খাবার দেওয়া হয়। নার্সদের সেবার মান বাড়াতে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। তাই এখন নার্সরা হাসি মুখে রোগীদের সেবা দিচ্ছেন এবং নিজ হাতে ওষুধ খাওয়াচ্ছেন।
সাংবাদিক রফিকুল ইসলাম রতনের সঞ্চালনায় মতবিনিময় সভায় বক্তব্য রাখেন ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি সাংবাদিক সাখাওয়াত হোসেন বাদশা, বিএসএমএমইউর রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ডা. এ বি এম আব্দুল হান্নান, প্রক্টর অধ্যাপক ডা. মো. হাবিবুর রহমান দুলাল, পরিচালক (হাসপাতাল) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আব্দুল্লাহ আল হারুন, পরিচালক (মানবসম্পদ) ডা. জামাল উদ্দিন খলিফা, পরিচালক (পরিদর্শন) অধ্যাপক ডা. এ কে এম সালেক প্রমুখ।
বাংলা৭১নিউজ/বিএইচ