মহামারি করোনাভাইরাসের বিপর্যস্ত ভারত। প্রতিদিনই দেশটিতে এ ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। আর এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুতেও রেকর্ড গড়ছে। এ অবস্থায় ১০ টাকার ওষুধে করোনা সেরে যাবে বলে দাবি করছেন পশ্চিমবঙ্গের চিকিৎসকরা। সে অনুযায়ী রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর কাছে চিঠিও পাঠিয়েছে তারা।
সম্প্রতি ভারতীয় গণমাধ্যমে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। যেখানে মাত্র ১০ টাকায় ৩টা ওষুধ কিনলে চিরতরে করোনা ঠেকানো সম্ভব। তিনটি ওষুধ হলো- আর্সেনিকাম অ্যালবাম, ফসফরাস, টিউবারকুলিনাম।
২০২০ সালে ভারতে করোনা শুরু দিকে আয়ুর্বেদ, যোগ ও প্রাকৃতিক চিকিৎসা, ইউনানি, সিদ্ধা এবং হোমিওপ্যাথি নিয়ে গঠিত আয়ূষ মন্ত্রণালয় ও সেন্ট্রাল কাউন্সিল অব হোমিওপ্যাথির যৌথ উদ্যোগে পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন রাজ্যে শুরু হয় আর্সেনিকাম অ্যালবাম থার্টি’র পরীক্ষামূলক প্রয়োগ।
পরীক্ষামূলক প্রয়োগের পর গুজরাট, কেরালা, মহারাষ্ট্রর মতো রাজ্যগুলো জানায় আর্সেনিকাম অ্যালবাম থার্টি’র প্রয়োগের ফলে অভূতপূর্ব ফল মিলেছে। যারা হোমিওপ্যাথির এই ওষুধ সেবন করেছেন তাদের মধ্যে ৯৯ দশমিক ৬৯ শতাংশের করোনা রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছে।
অন্যান্য রাজ্যে করোনা চিকিৎসায় হোমিওপ্যাথিক প্রোটোকল তৈরি হলেও পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যে তা হয়নি। দ্য হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্ডিয়ার রাজ্য শাখার দাবি, হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসার খরচ অনেক কম।
এপিটি প্রোটোকলের মাধ্যমে মাত্র ১০ টাকায় প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষের দ্রুত করোনামুক্ত করা সম্ভব। স্রেফ ভাইরাস মারা নয়, এই প্রোটোকল মানলে শরীরের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা অনেকটাই বাড়ানো যায় বলে মনে করছেন হোমিওপ্যাথি চিকিৎসকরা।
হোমিওপ্যাথিক প্রোটোকল অনুযায়ী, প্রথম ৩ দিন খালি পেটে আর্সেনিকাম অ্যালবাম খেতে হবে। ১৫ দিন পর ফসফরাস ৩ দিন খেতে হবে। এর ১৫ দিন পর টিউবারকুলিনাম (দুটি ডোজ, চারটি করে দানা) খেতে হবে। ১৫ দিন পর টিউবারকুলিনাম ওয়ান এম (১টা ডোজ, ১ দিন) এবং আরও ১৫ দিন পর টিউবারকুলিনাম টেন এম (১টা ডোজ, ১ দিন)।
রাজ্যের হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসকরা বলছেন, ১৮ বছরের কম বয়সীদের টিকাকরণ শুরু হতে এখনও অনেক দেরি। টিকা পাবেন না অন্তঃসত্ত্বা মায়েরা। কারও যদি অ্যানাফাইলেকটিক প্রতিক্রিয়ার সম্ভাবনা থাকে, তবে তাকেও টিকা দিতে বারণ করেছেন টিকা নির্মাতা সংস্থাগুলো।
ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব হোমিওপ্যাথির প্রাক্তন অধ্যাপক ডা. অশোক কুমার দাস ভারতীয় গণমাধ্যমকে জানান, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে আমাদের দাবি, রাজ্যে করোনা চিকিৎসার জন্য দ্রুত ২৪ ঘণ্টার হোমিওপ্যাথি হেল্পলাইন চালু করা হোক। হোমিওপ্যাথি কলেজগুলোতে করোনা চিকিৎসার জন্য উন্নত পরিকাঠামো তৈরি করা হোক।
ইতোমধ্যে অনেক করোনা রোগী সুস্থ হয়ে উঠেছেন হোমিওপ্যাথিক ওষুধ খেয়ে। ডা. অশোককুমার দাসের দাবি অ্যালোপ্যাথি চিকিৎসকরাও জিঙ্ক, ভিটামিনের মতো ওষুধ দিচ্ছেন। এগুলো আদৌও করোনা সারে না। শুধু রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। আর এ কাজটি হোমিওপ্যাথির এপিটি প্রোটোকলও করবে।
সূত্র: সংবাদ প্রতিদিন
বাংলা৭১নিউজ/এএস