মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলার বটুলি শুল্ক স্টেশন ও অভিবাসন তদন্ত কেন্দ্র (ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট) এলাকায় একটি বেইলি সেতু রয়েছে। এটি বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে সংযোগ স্থাপন করেছে। কিন্তু এ সেতু দিয়ে দুই দেশে পণ্যবাহী গাড়ি চলাচলের কোনো অনুমোদন (কার পাস) নেই। এ ছাড়া পাহাড়ি ঢলে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় সেতুটি দীর্ঘদিন ধরে অকেজো। এতে পণ্য আমদানি-রপ্তানির কাজ চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে।
শুল্ক স্টেশন কর্তৃপক্ষ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, ২০০১ সালে এই শুল্ক স্টেশন ও অভিবাসন তদন্ত কেন্দ্রের কার্যক্রম শুরু হয়। রাঘনাছড়া নামের পাহাড়ি ছড়ার ওপর নির্মিত সেতুটি শূন্য লাইনের ১৫০ মিটারের ভেতরে ভারতীয় অংশে পড়েছে। ২০০৮ সালে উভয় দেশের সম্মতিতে ভারত ছোট পরিসরে সেতুটি নির্মাণ করে।
কিন্তু সেতু দিয়ে দুই দেশে পণ্যবাহী গাড়ি চলাচলের কোনো অনুমোদন মেলেনি। একটা সময় উভয় দেশের পণ্যবাহী গাড়ি সেতুর মাঝামাঝি স্থানে গিয়ে থামত। এরপর এক গাড়ি থেকে অন্য গাড়িতে পণ্য ওঠানো-নামানো হতো। কিন্তু পরে অতিবৃষ্টিতে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে সেতুর দুই পাশের মাটি সরে যায়।
এতে সেতুটি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়লে ওই কার্যক্রমও বন্ধ হয়ে পড়ে। প্রায় দুই বছর আগে ভারতীয়রা ওই স্থানে একটি পাকা সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেয়। কিন্তু বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) আপত্তি জানালে সেতুর কাজ স্থগিত হয়ে যায়। তবে বিজিবি পুরোনো সেতুটি সংস্কারে আপত্তি নেই বলে জানায়। সেটাও আর হয়নি। বটুলি শুল্ক স্টেশন দিয়ে বর্তমানে প্লাস্টিক সামগ্রী, পিভিসি দরজা ও তুলা ভারতে রপ্তানি হয়।
এ ছাড়া ভারত থেকে বিভিন্ন ধরনের ফলমূল বাংলাদেশে আমদানি হয়। বটুলি শুল্ক স্টেশনের কার্যক্রম সম্প্রসারণের লক্ষ্যে সম্প্রতি সেখানে ৩৮ বিঘা জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে। এদিকে ২০০৩ সালে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ হঠাৎ বটুলি অভিবাসন তদন্ত কেন্দ্র দিয়ে বাংলাদেশি নাগরিকদের ভিসা প্রদান বন্ধ করে দেয়। ফলে তাঁদের ওই পথে ভারতে যাতায়াত বন্ধ হয়ে পড়ে। তবে ভারতীয় নাগরিকেরা নানা কাজে বাংলাদেশে যাতায়াত করতে পারেন।
ওই এলাকায় দায়িত্বে থাকা বিজিবির ৫২ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল মো. শাহ আলম সিদ্দিকী বলেন, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনায় বটুলিতে নতুন সেতু নির্মাণে আপত্তি জানানো হয়েছে। তবে শুল্ক স্টেশন এলাকায় রাস্তাসহ অবকাঠামোগত কিছু কাজ বাকি রয়েছে। এসব কাজ হয়ে গেলে প্রয়োজনের তাগিদে সেতু নির্মাণের ব্যাপারে অগ্রগতি হতে পারে। আপাতত ভারত পুরোনো সেতুটি সংস্কার করে দিলে আমদানি-রপ্তানিকাজে কিছুটা সুবিধা হতো।
মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ আহসান মুঠোফোনে বলেন, বটুলি অভিবাসন কেন্দ্র দিয়ে বাংলাদেশি নাগরিকেরা যাতে ভিসা নিয়ে ভারতে যাতায়াত করতে পারেন, সে ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়া হবে।
বাংলা৭১নিউজ/এমএস