চলতি বছরের ১১ মার্চ নন্দীগ্রাম আসনে নিজের মনোনয়নপত্র জমা দেবেন তৃণমূল প্রধান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এর আগে গত ১৮ জানুয়ারি পূর্ব মেদিনীপুরের নন্দীগ্রামে তেখালী মাঠের জনসভায় মমতা জানান, এবার সেখান থেকে ভোটে লড়বেন।
ভারতের পশ্চিমবঙ্গে আট দফায় ভোট ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন। তার মধ্যে দ্বিতীয় দফায় ১ এপ্রিল নন্দীগ্রামে ভোট হবে। তৃণমূল সূত্রে জানা গেছে, প্রথম তিন দফার ভোটের জন্য দলের প্রার্থী তালিকা বুধবার প্রকাশ করা হবে।
সেই তালিকায় নন্দীগ্রামের প্রার্থী হিসেবে থাকবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আগামী ১১ মার্চ তৃণমূলনেত্রী তমলুকের মহকুমা শাসকের দপ্তরে গিয়ে মনোনয়নপত্র জমা দেবেন।
গত বিধানসভা নির্বাচনে ওই নন্দীগ্রাম থেকে বিধায়ক হিসেবে জিতে পশ্চিমবঙ্গের মন্ত্রিসভায় জায়গা পেয়েছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। কিছুদিন আগে তিনি মন্ত্রিত্ব এবং বিধায়ক পদ ছেড়ে বিজেপিতে গেছেন।
মমতা যেদিন তেখালী মাঠের জনসভা থেকে নন্দীগ্রামকে ‘মেজো বোন’ আখ্যা দিয়ে ভোটে দাঁড়ানোর ইচ্ছা প্রকাশ করেন, তার পরেই শুভেন্দু হুমকি দিয়ে বলেছেন, ‘নন্দীগ্রামে মাননীয়াকে ৫০ হাজার ভোটে হারাব’।
ভবানীপুরকে ‘বড় বোন’ আখ্যা দিয়ে মমতা বলেছিলেন, তিনি দুই জায়গা থেকেই দাঁড়াতে পারেন। শুভেন্দু সে ব্যাপারে মমতাকে ‘শুধু নন্দীগ্রাম থেকে ভোটে দাঁড়ান’ বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন।
পাশাপাশি তিনি সংখ্যালঘু ভোটের বিষয়টি উল্লেখ করে বলেছিলেন, ৬২ হাজার ভোটের ভরসায় প্রার্থী হতে চাইছেন মাননীয়া। বাকি সব ভোট আমরা পাব।
শুভেন্দুর ওই মন্তব্যকে যথেষ্ট গুরুত্ব দিচ্ছে তৃণমূল। ভোটের সাম্প্রদায়িক মেরুকরণের কথা মাথায় রেখে শিবরাত্রির দিনকে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার জন্য বেছে নেওয়া হয়েছে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
নন্দীগ্রামের যুদ্ধ ‘সহজ’ হবে না বলেও মনে করছেন অনেকে। তাদের মতে, মমতার মতো হেভিওয়েট প্রার্থীর বিরুদ্ধে বিজেপি হয়তো কৌশলগতভাবেই শুভেন্দু অধিকারীকে প্রার্থী করতে পারে।
অন্যদিকে, এরই মধ্যে বামফ্রন্ট শরিক সিপিআই জানিয়ে দিয়েছে, তারা জোটের স্বার্থ রক্ষায় ওই আসন ‘ইন্ডিয়ান সেক্যুলার ফ্রন্ট’ অর্থাৎ আব্বাস সিদ্দিকির দলকে ছেড়ে দিতে পারে।
ত্রিমুখী লড়াইয়ে বড় ব্যবধানে জিততে হলে নন্দীগ্রামের সংখ্যালঘু ভোটের পাশাপাশি তৃণমূলকে পেতে হবে সংখ্যাগুরুর মনও। তাই নন্দীগ্রামে ভোটের ক্ষেত্রে অনেক বেশি হিসাব কষে পা ফেলছে তারা।
সে কারণেই বেছে নেওয়া হয়েছে শিবরাত্রির দিনকে। শুধু তাই নয়, নন্দীগ্রামের নির্বাচনে মুখ্যমন্ত্রীর প্রচারের প্রতিটি ক্ষেত্রে তার ধর্মনিরপেক্ষ ভাবমূর্তিকেই হাতিয়ার করা হবে বলে জানা গেছে।
বাংলা৭১নিউজ/এআর