এক পাত্রে রান্না হচ্ছে তিন হাজার মানুষের খাবার। এই খাবারের সবটাই চলে যাবে তাদের কাছে, যাদের পেটে তিন বেলা ঠিকমতো আহার জোটে না। ঢাকার অদূরে কেরানীগঞ্জে বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশন এমন উদ্যোগই হাতে নিয়েছে এবার। প্রতিষ্ঠানটি ৩ হাজার মানুষের রান্না করা যায় এমন একটি কড়াইতে রান্না করছে প্রতিদিন। তিন বেলা প্রায় ১০ হাজার মানুষকে প্রতিদিন খাওয়ানো হয়। এই বিপুল পরিমাণ মানুষের জন্য খাদ্য প্রস্তুত করতেই এই মেগা কিচেন প্রকল্প হাতে নিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।
বিদ্যানন্দের মেগা কিচেনের বহুল আলোচিত পাত্রটির ব্যাসার্ধ ৮ দশমিক ছয় ফিট এবং গভীরতা ২ ফিট। এই পাত্রে একত্রে ১২ জন রান্না করতে পারবেন। প্রায় ১০০ কেজি মুরগি, ৮০০ ডিম, পঁচিশ কেজি ডাল, বিশ কেজি নানা ধরনের সবজি একত্রে রান্না করা কোনো নতুন ঘটনা নয় বিদ্যানন্দের এই মেগাকিচেনের জন্য।
হাজারো মানুষের খাবার তৈরির এই বিরাট কড়াইয়ের জন্য রয়েছে পৃথক চুলাও। এই বিশাল কর্মযজ্ঞের নেতৃত্ব দিচ্ছেন ফরিদাবাদ মাদ্রাসার শিক্ষার্থী মোহাম্মদ আরিফ। তিনি বলেন, যখন বিদ্যানন্দ তে আসি তখন দেখি এখানে অনেক বড় প্ল্যাটফর্মে রান্নাবান্না হয়। এর আগে আমি কখনো এত বড় প্ল্যাটফর্মে রান্নাবান্না করিনি।
ভাতের সঙ্গে ধীরে ধীরে মিশিয়ে রান্না করা হয় শাহী খিচুড়ি। এই খিচুড়ি খেতে অনেকটা ফ্রাইড রাইসের মতো। অনেক বড় আয়োজন হলেও স্বাদের সঙ্গে কোনো প্রকার আপস করে না বিদ্যানন্দ।
এর আগে বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশন সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের জন্য এক টাকায় এক বেলার ভরপেট খাওয়া যায় এমন খাবারের ব্যবস্থা করত, এখনো সেই কাজের জন্যই এই কড়াইয়ের প্রয়োজন। তবে অনেক অনেক হাঁড়িপাতিল আর চুলার জন্য সেখানেই অনেক টাকা খরচ হয়ে যেত। এখন এক পাত্রে রান্নাবান্না হওয়ায় সেসব ঝামেলা থেকেও মুক্তি পাওয়া গেছে।
বিদ্যানন্দ ২০১৩ সালের ২২ নভেম্বর নারায়ণগঞ্জে প্রতিষ্ঠিত। এরপর ২০১৪ সালের মার্চ মাসে চট্টগ্রাম শাখা এবং সর্বশেষে ২০২০ সালের জানুয়ারিতে খাগড়াছড়িতে বিদ্যানন্দের দ্বাদশ শাখা চালু করা হয়। বিদ্যানন্দের মোট ১২টি শাখা রয়েছে। এই পরিকল্পনা সফল হলে দেশব্যাপী বিদ্যানন্দের রান্নাঘর তৈরি হবে বলে আশা এর উদ্যোক্তাদের।
বাংলা৭১নিউজ/এমএস