দেশের বর্তমান চাহিদার তুলনায় বিদ্যুৎ উৎপাদনে সক্ষমতা রয়েছে আরও বেশি। তবে গত কয়েক বছর আবাসিক গ্রাহক পর্যায়ে বিদ্যুতের চাহিদা বাড়লেও তুলনামূলকভাবে তেমন চাহিদা বাড়েনি শিল্প খাতে। এতে অতিরিক্ত সক্ষমতায় সরকারকে গুনতে হচ্ছে বড় অঙ্কের খরচ। এ বিষয়ে বিভিন্ন মহলের সমালোচনার শিকার হচ্ছেন বলে জানান বিদ্যুৎ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব।
বৃহস্পতিবার (৩১ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ-বিডার ছয়টি অনলাইন সেবার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিদ্যুৎ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (উন্নয়ন-২) রহমতুল্লাহ মো. দস্তগীর প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টাকে বিদ্যুৎ রফতানির সম্ভাবনাও তুলে ধরেন।
বিদ্যুৎ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (উন্নয়ন-২) রহমতুল্লাহ মো. দস্তগীর বলেন, আমাদের বর্তমানে ২০ হাজার মেগাওয়াটের বেশি বিদ্যুৎ উৎপাদনসক্ষমতা আছে। বেসরকারি শিল্পের ক্যাপটিভসহ তা ২৩ হাজার মেগাওয়াটের বেশি হবে। কিন্তু শীতকাল হওয়ায় এখন চাহিদা সর্বোচ্চ ৭ হাজার ১০০-২০০ মেগাওয়াট। বছরের একটা সময় সর্বোচ্চ চাহিদা দাঁড়ায় ১৩ হাজার মেগাওয়াট।
তাই অতিরিক্ত উৎপাদনসক্ষমতা নিয়ে মিডিয়াসহ বিভিন্ন মহলে সমালোচনা করা হচ্ছে। বলা হচ্ছে ক্যাপাসিটি চার্জের নামে বিপুল অর্থের অপচয় হচ্ছে সরকারের। আমরা ক্রস বর্ডার বিদ্যুৎ রফতানির সুযোগ নিতে পারি। নেপাল, ভুটানে শীতকালে হাইড্রো পাওয়ারের উৎপাদন কমে যায়। তাই আমাদের অতিরিক্ত বিদ্যুৎ পাশের দেশগুলোতে অন্তত শীতের সময় রফতানির সুযোগ আছে কিনা তা আলোচনার টেবিলে তোলার আহ্বান জানান বিদ্যুৎ বিভাগের এই কর্মকর্তা।
বর্তমানে বিভিন্ন শিল্প নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় প্রায় আড়াই হাজার মেগাওয়াট ক্যাপটিভ বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হচ্ছে। এসব প্রতিষ্ঠানকে এখন জাতীয় গ্রিডের বিদ্যুৎ ব্যবহারের তাগিদ দেন বিদ্যুৎ ও জ্বালানির অতিরিক্ত সচিব। তার মতে, সঞ্চালন ব্যবস্থার দক্ষতা বেড়েছে, তাই নির্দিষ্ট শিল্পাঞ্চলে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহে কোনো সমস্যা হবে না।
অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান বলেন, কুইকরেন্টাল কেন্দ্রগুলো দেশের বিদ্যুৎ পরিস্থিতির আমূল পরিবর্তন করেছে, শুরুতে অনেক অর্থনীতিবিদ বলেছিলেন দেশ দেউলিয়া হবে এসব পাওয়ার প্লান্টে খরচ জোগাতে। কিন্তু এখন প্রমাণিত যে বিদ্যুতের কারণে দেশের অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি বেড়েছে।
রফতানির বিষয়টিকে আমলে না নিয়ে তিনি বলেন, দেশে ১০০ শিল্পাঞ্চল গড়ে তোলা হচ্ছে এতে বিদ্যুতের চাহিদা সামনে বাড়বে। তাছাড়া করোনা মহামারি না থাকলে এখনই বিদ্যুতের চাহিদা ১৪-১৫ হাজার মেগাওয়াট থাকত বলে মন্তব্য করেন তিনি। তার মতে বাড়তি বিদ্যুৎ উৎপাদনসক্ষমতাও অর্থনীতির জন্য স্বস্তিদায়ক ও ইতিবাচক ।
বাংলা৭১নিউজ/এমএন