কুড়িগ্রাম জেলা শহরের কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ড। এই ওয়ার্ডে পৌরসভা কার্যালয়, শহীদ মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতিফলক, কাঁচাবাজার, কাপড় ও অন্যান্য সামগ্রীর বাজার, কেন্দ্রীয় ঈদগাহ ময়দান, কেন্দ্রীয় গোরস্থান ও কেন্দ্রীয় শ্মশানসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলো। এখানেই ১৯৮১ সাল থেকে কাউন্সিলর পদে বিজয়ী হয়ে আসছেন মো. রোস্তম আলী তোতা।
সোমবার (২৮ ডিসেম্বর) অনুষ্ঠিত কুড়িগ্রাম পৌরসভার নির্বাচনে ৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পদে আবারও বিপুল ভোটে নির্বাচিত হয়েছেন। এ নিয়ে টানা নয়বারের মতো নির্বাচিত হয়েছেন তিনি। এবারের নির্বাচনে তার প্রতীক ছিল পাঞ্জাবি।
এই ওয়ার্ডে ভোটার সংখ্যা ৫ হাজার ১৬৭ জন। এবার প্রদত্ত ৩ হাজার ৩৯টি বৈধ ভোটের মধ্যে তিনি পেয়েছেন ২ হাজার ৬১০ ভোট। আর তার একমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী সারাফত হোসেন চৌধুরী বিপ্লব পেয়েছেন ৪২৯ ভোট।
তবে ১৯৭৯ সালে পৌরসভার কমিশনার পদে প্রথমবার প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে হেরেছিলেন রোস্তম। সেই হার থেকে শিক্ষা নিয়ে তিনি এখন পৌরসভার সবচেয়ে জনপ্রিয় জনপ্রতিনিধি। টানা ৪০ বছর ধরে কাউন্সিলর নির্বাচিত হচ্ছেন।
পৌরসভা কার্যালয়সংলগ্ন মিস্ত্রিপাড়ার অধিবাসী মরহুম ফজলুল করিমের ছেলে মো. রোস্তম আলী তোতার বয়স এখন ৬৮ বছর। তোতা দুই কন্যা ও এক ছেলেসন্তানের জনক।
তার সম্পদের মধ্যে ১৫ শতাংশের বাড়িভিটে। তার ওপর টিনশেডের বাড়ি। আর ৩০ শতাংশ আবাদি জমি। পুরাতন বাজার এবং আদর্শ পৌরবাজারে আছে দুটি দোকান ঘর। সেগুলো ভাড়া দেওয়া। এর পাশাপাশি বিভিন্ন কৃষিপণ্যের স্টক ব্যবসা করেন। আর কাউন্সিলর হিসেবে প্রাপ্ত সম্মানী ভাতা মিলিয়ে চালান সংসার।
তোতা ছোটবেলা থেকে খেলাধুলার পাশাপাশি জনসেবামূলক কাজে জড়িত। তিনি একসময় শিশু সংগঠন মুকুল ফৌজের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। এ কারণে এলাকাবাসীর কথায় স্থানীয় পর্যায়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছিলেন।
লক্ষণীয় বিষয় হচ্ছে, তোতার নির্বাচনী পোস্টারে তার কোনো ছবি নেই। শুধু মার্কার ছবি ছিল। অথচ অন্যদের পোস্টারে মার্কার পাশাপাশি প্রার্থীর ছবি ছিল।
মিস্ত্রিপাড়ার অধিবাসী এবং কাউন্সিলর তোতার প্রতিবেশী জেলা সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের আহ্বায়ক শ্যামল ভৌমিক বলেন, সহজ ও সরলতা তোতার প্রধানতম গুণ। সময়ে-অসময়ে যখনই যে ডাকুক তাকে কাছে পান। তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতির কোনো অভিযোগ নেই। যার যেটুকু প্রাপ্য তা বুঝিয়ে দেন। এ জন্য ওয়ার্ডের সব ভোটার তাকে চেনেন। সবার বাড়িতে তোতার যাতায়াত। এসব গুণাবলি তার নিরবচ্ছিন্নভাবে বিজয়ের মূল চাবিকাটি, যা সবার জন্য অনুকরণীয়।
এ প্রসঙ্গে মো. রোস্তম আলী তোতা বলেন, যত দিন শরীর ভালো থাকবে-জ্ঞান থাকবে, তত দিন মানুষের পাশে থাকব। সৎভাবে মানুষের সেবা করে যাব।
বাংলা৭১নিউজ/এসএম