বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে নেওয়া প্রকল্প সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি অনুমোদন দিয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১২ নভেম্বর) বিকেলে সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনে ইনসিনারেশন পদ্ধতিতে বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনে বিদ্যুৎ বিভাগের প্রস্তাব অনুমোদন করে।
স্থানীয় সরকার মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই ঢাকা শহরের অন্যতম সমস্যা বর্জ্য ব্যবস্থাপনার উদ্যোগ গ্রহণ করেন। সিদ্ধান্ত নেন বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের। এ বিষয়ে অভিজ্ঞতা অর্জনের লক্ষ্যে তিনি যেসব দেশ বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন করছে এমন বেশ কয়েকটি দেশ ভ্রমণও করেন । এছাড়া, স্থানীয় সরকার মন্ত্রী এ বিষয়ে অভিজ্ঞ দেশ বিদেশের বিশেষজ্ঞদের মতামত গ্রহণ করেন।
বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড এবং প্রক্রিয়াকরণ কমিটির সুপারিশের আলোকে বেসরকারি খাতে বিদ্যুৎ উৎপাদন নীতিমালা-১৯৯৬ এর আওতায় বিল্ড অন অপারেটর (বিওও) ভিত্তিতে ইন্ডিপেন্ডেন্ট পাওয়ার প্রডিউসার হিসেবে চায়না মেশিনারি ইঞ্জিনিয়ারিং করপোরেশন (সিএমইসি) ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে ৪২ দশমিক ৫ মেগাওয়াট ক্ষমতার বর্জ্য বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন করবে। যেখানে ‘নো ইলেক্ট্রিসিটি, নো পেমেন্টের’ ভিত্তিতি প্রতিষ্ঠানটি আগামী ২০ মাসের মধ্যে প্রকল্প বাস্তবায়ন করে বিদ্যুৎ উৎপাদনে যাবে। ২৫ বছর মেয়াদের চুক্তির মাধ্যমে এই প্রকল্প বাস্তবায়িত হবে।
প্রস্তাবনায় বলা হয়েছে, স্পন্সর কোম্পানি নিজ ঝুঁকিতে প্লান্ট স্থাপন, পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণ ব্যয় বহন এবং উৎপাদিত বিদ্যুৎ বিদ্যুৎ বিভাগের নিকট বিক্রির মাধ্যমে তাদের ব্যয় নির্বাহ করবেন। সিটি কর্পোরেশন প্লান্ট স্থাপনের জন্য প্রয়োজনীয় জমির সংস্থান এবং নিয়মিত বর্জ্য সরবরাহ করবে।
বলা হয়েছে, ইন্সিনেরেশন প্রক্রিয়ায় বর্জ্য হতে বিদ্যুৎ উৎপাদনের প্রধান সুবিধা হচ্ছে, এই প্লান্টটি চালু হলে সেখানে প্রতিদিন তিন হাজার মেট্রিক টন বর্জ্য সরবরাহ করতে হবে। এই পরিমাণ বর্জ্য সরবরাহ করতে না পারলে উত্তর সিটি কর্পোরেশনকে প্রতি মেট্রিকটন ঘাটতি বর্জ্যের জন্য এক হাজার টাকা হারে স্পন্সর কোম্পানিকে ক্ষতিপূরণ প্রদান করতে হবে। যেহেতু প্রতিদিন তিন হাজার মেট্রিক টন বর্জ্য প্রয়োজন হবে তাই এই পরিমাণ বর্জ্য সংগ্রহ করতে হলে আর যেখানে সেখানে ময়লা আবর্জনা পড়ে থাকবে না।
এই প্রক্রিয়ায় বর্জ্য প্রায় সম্পূর্ণরূপে দহন করে বর্জ্যের আয়তন প্রায় ৯০ শতাংশ হ্রাস করা সম্ভব এবং এর ফলে পৌর বর্জ্য পরিত্যাজনের জমির চাহিদা হ্রাস পাবে। বিদ্যুৎ কেন্দ্র ইন্সিনারেশন প্রযুক্তি প্রয়োগে বর্জ্যের দহনের মাধ্যমে সৃষ্ট গ্যাসীয় নিঃসরণ মানমাত্রা কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রিত হবে।
বাংলা৭১নিউজ/এএম