রবিবার, ২০ জুলাই ২০২৫, ০৮:৩৪ অপরাহ্ন
ব্রেকিং নিউজ
বিমান মন্ত্রণালয়ের প্রকল্প নির্ধারিত সময় ও বাজেটের মধ্যেই শেষ করার নির্দেশ ভূমিকর আদায়ের হার সন্তোষজনক : ভূমি উপদেষ্টা ফিটনেসবিহীন গণপরিবহন সরিয়ে নিতে বিশেষ ঋণ দেবে সরকার : ফাওজুল কবির টেকসই বিনিয়োগে বৈশ্বিক প্রতিশ্রুতি জরুরি : পরিবেশ উপদেষ্টা পার্বত্য এলাকায় টেকসই শান্তি প্রতিষ্ঠায় সরকার আন্তরিক : পররাষ্ট্র উপদেষ্টা পরিস্থিতির কারণে গোপালগঞ্জে গুলি করেছে সেনাবাহিনী: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা সেনাসদর নির্বাচনী পর্ষদ উদ্বোধন করলেন প্রধান উপদেষ্টা প্রশাসনের বিভিন্ন জায়গায় স্বৈরাচারের দোসররা রয়ে গেছে : নাহিদ শেখ হাসিনা জাতির কলঙ্ক, তাকে ক্ষমা নয় : মির্জা ফখরুল পুরোনো বন্দোবস্ত মচকে গেছে, কেন বললেন উপদেষ্টা মাহফুজ আলম?

শিক্ষার্থী মৃত্যুর সুষ্ঠু তদন্তের দাবিতে বিক্ষোভে উত্তাল ইবি ক্যাম্পাস

ইবি প্রতিনিধি:
  • আপডেট সময় শনিবার, ১৯ জুলাই, ২০২৫
  • ১৬ বার পড়া হয়েছে

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) পুকুর থেকে সাজিদ আবদুল্লাহ নামের এক শিক্ষার্থীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। সাঁতার জানার পরও পানিতে ডুবে মৃত্যু রহস্যজনক মনে করছেন স্বজন ও সহপাঠীরা। এ বিষয়ে সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচারের দাবিতে বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে উঠেছে ক্যাম্পাস।

শনিবার বেলা সাড়ে ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবনের সামনে সমবেত হয় হাজারও শিক্ষার্থী। এসময় প্রশাসনের বিরুদ্ধে ভুয়া ভুয়া স্লোগান দেয় শিক্ষার্থীরা। এসময় শিক্ষার্থীরা মৃত্যুকে কেন্দ্র করে প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছে। মৃত্যুকে রহস্যজনক আখ্যা দিয়ে এর পেছনে প্রশাসনের দীর্ঘদিনের অব্যবস্থাপনা ও দায়িত্বে গাফিলতির অভিযোগ তুলেছে তারা।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, আমরা লাশ দেখে প্রশাসনকে জানিয়েছিলাম। আমাদের জনানোর প্রায় পৌঁনে এক ঘণ্টা পর সেই লাশ উদ্ধার করা হয়। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিতরে থানা হওয়ার পরেও পুলিশ আসতে এতো সময় লাগলো কেন? এছাড়া লাশ উঠানোর প্রায় আধা ঘণ্টা পার হলেও সেখানে কোনও ডাক্তার বা অ্যাম্বুলেন্স আসেনি। পরে আমরা বাধ্য হয়ে ভ্যানে করে তাকে মেডিকেলে নিয়ে যাই। এরপর তাকে কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়।

তারা আরও অভিযোগ করেন, লাশ সনাক্তের দুই ঘণ্টার মধ্যেও প্রক্টর, ছাত্র উপদেষ্টা কিংবা হল প্রভোস্টের দেখা মেলেনি। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল ও গুরুত্বপূর্ণ জায়গাগুলোতে কোনও সিসি ক্যামেরা সচল নেই।

এখন আমরা দেখতেও পাচ্ছি না, সে কখন কোথায় গিয়েছে। একটা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে এমন নিরাপত্তার ঘাটতি মোটেও কাম্য নয়। আমরা প্রশাসনকে বারবার বলার পরেও তারা বাজেট ঘাটতির কথা বলে সিসি ক্যামেরা লাগাচ্ছে না। তাদের যদি এতই ঘাটতি থাকে তাহলে আমাদের বলুক আমরা নিজেরা চাঁদা তুলে সিসি ক্যামেরা লাগাব।

এসময় শিক্ষার্থীরা সাজিদের মৃত্যুর তদন্ত দ্রুততম সময়ে সম্পন্ন করে পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট প্রকাশ করা, পুরো ক্যাম্পাস সিসিটিভি ক্যামেরার আওতায় আনা, আবাসিক হলে শিক্ষার্থীদের এন্ট্রি ও এক্সিট শতভাগ মনিটরিংয়ের আওতায় নিয়ে আসা, ক্যাম্পাসের চারপাশে পূর্ণাঙ্গ নিরাপত্তাবেষ্টিত বাউন্ডারি ওয়াল নির্মাণ করা, ক্যাম্পাসে পর্যাপ্ত স্ট্রিট লাইট স্থাপন ও সক্রিয় রাখা ও বহিরাগত প্রবেশ নিয়ন্ত্রণসহ বিভিন্ন দাবি তুলে ধরেন। দাবি বাস্তবায়ন না হলে কঠোর কর্মসূচির হুঁশিয়ারি দেন তারা।

শিক্ষার্থীদের এই কর্মসূচিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, ছাত্রদল, ছাত্রশিবির, ছাত্র ইউনিয়নসহ বিভিন্ন ছাত্র সংগঠন সংহতি প্রকাশ করে অংশ নিয়েছে।

এর আগে বেলা ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ফুটবল মাঠে শিক্ষার্থী সাজিদ আব্দুল্লাহর গায়েবানা জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। পরে সেখান থেকে মিছিল নিয়ে প্রশাসন ভবনের সামনে সমবেত হয় শিক্ষার্থীরা। এদিকে শিক্ষার্থী মৃত্যুর ঘটনার প্রকৃত কারণ উদঘাটন না করা পর্যন্ত ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনেরও ঘোষণা দিয়েছে শিক্ষার্থীরা।

এর আগে শুক্রবার রাতে মৃত্যুর ঘটনায় সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচারের দাবিতে টর্চলাইট মিছিল করে শাখা ছাত্রশিবির। এসময় তারা নিরাপদ ক্যাম্পাস, শতভাগ আবাসিক ব্যবস্থা, পুরো ক্যাম্পাস সিসিটিভির আওতায় আনার জোর দাবি জানায়।

প্রসঙ্গত, গত ১৭ জুলাই (বৃহস্পতিবার) বিকাল পাঁচটার দিকে শাহ আজিজুর রহমান হল সংলগ্ন পুকুরে সাজিদ আব্দুল্লাহর মরদেহ ভেসে থাকতে দেখে শিক্ষার্থীরা। পরে সাড়ে ৬ টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় নিরাপত্তা কর্মকর্তা ও ইবি থানা পুলিশ সদস্যদের উপস্থিতিতে মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

সাজিদ বিশ্ববিদ্যালয়ের আল কুরআন অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। তিনি শহিদ জিয়াউর রহমান হলের ১০৯নং রুমে থাকতেন। তার বাড়ি টাঙ্গাইল জেলার ঘাটাইল উপজেলায়। বাবার নাম মুহাম্মদ আহসান হাবিবুল্লাহ ও মায়ের নাম সুমাইয়া আক্তার। 

এদিকে সাজিদ আব্দুল্লাহর মৃত্যু নিয়ে অনেকের মনে উঠেছে নানা প্রশ্ন—কীভাবে তার মৃত্যু হলো? আদৌও তার সঙ্গে কোনও ঘটনা ঘটেছিল কিনা? এসব প্রশ্ন ঘিরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে চলছে আলোচনা-সমালোচনা। শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও প্রকৃত রহস্য উদঘাটনের দাবি জানিয়েছেন। ইতোমধ্যে ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও শহীদ জিয়াউর রহমান হল কর্তৃপক্ষ আলাদা আলাদা তদন্ত কমিটি গঠন করেছে।

বাংলা৭১নিউজ/এসএস

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © 2018-2025
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com