বাংলা৭১নিউজ, ঢাকা: বাংলাদেশের উন্নয়নে চীনের পাশাপাশি ভারতের সঙ্গেও সুসম্পর্ক রাখা হবে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জনপ্রশাসন মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম। সকালে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে চীনা রাষ্ট্রপ্রধান শি জিনপিংকে বিদায় জানানো শেষে গণমাধ্যমকর্মীদেরকে এ কথা বলেন তিনি।
বর্তমান সরকারের আমলে ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক আরও নিবিঢ় হয়েছে। দুই দেশের মধ্যে অমীমাংসিত নানা সমস্যা সমাধানের পাশাপাশি অর্থনৈতিক দিক থেকেও সহযোগিতা বৃদ্ধি পাচ্ছে।
আর চীনের সঙ্গে ভারতের সীমানা নিয়ে জটিলতার কারণে কিছু সমস্যা রয়েছে। এ নিয়ে দুই পক্ষে একবার যুদ্ধও হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক বৃদ্ধি হলে ভারত কী প্রতিক্রিয়া দেখায় এ নিয়ে কথা হচ্ছিল জিনপিং এর সফরের আগে থেকেই। তবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী বলেছেন, এমন কোনো আশঙ্কা নেই সরকারের।
সৈয়দ আশরাফ বলেন, `আমরা যেমন চীনের সঙ্গে কাজ করছি, আবার আমরা ভারতের সঙ্গেও কাজ করছি। আমাদের সবার সঙ্গেই সম্পর্ক রাখতে হবে। একা আমাদের পক্ষে কোনো কিছুই সম্ভব না।’ আশরাফ বলেন, ‘চীন এখন সুপার পাওয়ার। এটা আমাদের মেনে নিতে হবে। আমরা এখন পর্যন্ত দেখছি, তারা গঠনমূলক। এখানে চীনকে নিয়ে আতংকের কোনো কারণ নেই।’
চীনা রাষ্ট্রপ্রধানের এই সফর নিয়ে আগে থেকেই নানা আশার কথা বলে আসছিল সরকার। এই সফরের মাধ্যমে চীনের সঙ্গে নতুন সম্পর্কের সূচনা হয়েছে-বলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তেমনি জিনপিং বলেছেন, দুই দেশের সম্পর্ককে সর্বোচ্চ পর্যায়ে নিয়ে যেতে চান তিনি। দুই দেশের সম্পর্ক এখন বন্ধুত্বের সীমানা পেরিয়ে অংশীদারের পর্যায়ে পৌঁছেছে বলেও মন্তব্য করেন দুই নেতা।
চীনের প্রশংসা করে সৈয়দ আশরাফ বলেন, ‘পশ্চিমা বিশ্ব বলে, কিন্তু বাস্তবায়নে খুবই কম। কিন্তু, চীন বাস্তবায়নে খুব তৎপর। কোনো সময়েই ফাঁকি দেয় না।’
তিন দশক পর প্রথম চীনা রাষ্ট্রপ্রধান শি জিনপিং এর সফর নিয়ে উৎফুল্ল সৈয়দ আশরাফ। জিনপিং এর এই সফরে বাংলাদেশ-চীন ২৭টি চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে। পাশাপাশি এক হাজার ৩৬০ কোটি ডলারের বাণিজ্য চুক্তি হয়েছে ব্যবসায়ীদের মধ্যে।
তবে সৈয়দ আশরাফের মতে, বাংলাদেশ এই সফরে কত টাকার বিনিয়োগ পেলো সেগুলোর চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো কানেকটিভিটি। তিনি বলেন, ‘চীন আমাদের সঙ্গে আছে, এটাই গুরুত্বপূর্ণ।’
আশরাফ বলেন, চীনের রাষ্ট্রপতি বাংলাদেশে রাজনীতি করতে আসেননি। তিনি এসেছেন সরকারের সঙ্গে কথা বলতে। এই সফরে দুই দেশের জনগণের সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি হয়েছে। ‘এই সফরের মধ্য দিয়ে দুই দেশের যোগাযোগ আরও মজবুত হবে। এটা আমাদের জন্য মাইলফলক। এর মাধ্যমে আন্তঃদেশীয় যোগাযোগ বা কানেকটিভিটির দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি হয়েছে।’-বলেন আশরাফ।
মিয়ানমারের সঙ্গে বিরাজমান সমস্যাগুলো চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্কে কোনো প্রভাব ফেলবে কি না- জানতে চাইলে তিনি বলেন, “মিয়ানমার আর বাংলাদেশ এক না। আমরা হলাম ভারতবংশীয় অরিজিন।”
চীনের প্রেসিডেন্টের সফর বাংলাদেশের রাজনীতিতে কতটা প্রভাব ফেলতে পারে- এই প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘বাংলাদেশ ও চীনের রাজনীতি দুই রকম। তারা কখনও আমাদের রাজনীতি নিয়ে আলোচনা করে না, আমরাও কখনও তাদের রাজনীতি নিয়ে মাথা ঘামাই না।’
বাংলা৭১নিউজ/এম