বৃহস্পতিবার, ১০ অক্টোবর ২০২৪, ১২:১৭ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম
বিএনপির ত্রাণ তহবিলে ২ লাখ টাকা দিলেন খালেদা জিয়া নিবন্ধন প্রথা বাতিল, সংসদে আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব চায় জামায়াত তরুণদের মাধ্যমে ট্রাফিক ব্যবস্থাপনার আধুনিকায়নের আহ্বান আসিফ মাহমুদের রসায়নে নোবেল পেলেন তিন বিজ্ঞানী পিএসসির নতুন চেয়ারম্যান ড. মোবাশ্বের মোনেম সা‌বেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর স্ত্রীসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে দুদ‌কের ৫ মামলা শেখ হাসিনা প্রসঙ্গে যা বললো মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর হামাস-হিজবুল্লাহর ২৩০ লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল চিনি আমদানিতে কমলো ১৫ শতাংশ শুল্ক-কর সাবেক পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নানের জামিন মঞ্জুর হারুনসহ ৩ অতিরিক্ত আইজিপিকে বাধ্যতামূলক অবসর সরকারি চাকরির বয়স দুই বছর ৩৫, স্থায়ীভাবে ৩৩ করার দাবি বিএনপি ক্ষমতায় এলে প্রতিটি ঘটনারই বিচার হবে: ফখরুল মিয়ানমার থেকে টেকনাফে ঢুকল আরও ৩৭ রোহিঙ্গা নাসরাল্লার দুই উত্তরসূরিকে হত্যার দাবি ইসরায়েলের পুলিশের কাজে গতি ফেরাতে ৫০ গাড়ি, হস্তান্তর ১০ থানায় লেবানন থেকে ফিরতে ১১ অক্টোবরের মধ্যে আবেদন করার আহ্বান যমুনা ব্যাংকের পর্ষদ সভা ১৭ অক্টোবর ‘বাংলাদেশ জাতিসংঘের সঙ্গে কাজ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ’ প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে রাশিয়ার রাষ্ট্রদূতের সাক্ষাৎ

তিস্তায় বাড়ছে পানি ভাঙছে বাড়ি

বাংলা ৭১ নিউজ
  • আপলোড সময় রবিবার, ১২ জুলাই, ২০২০
  • ৪২ বার পড়া হয়েছে

বাংলা৭১নিউজ,(লালমনিরহাট)প্রতিনিধিঃ উজানের ঢলে লালমনিরহাটে তিস্তা ও ধরলা নদীর পানি আবারও বৃদ্ধি পেয়ে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। ফলে জেলার পাঁচ উপজেলায় তিস্তা ও ধরলার তীরবর্তী এবং চরাঞ্চলের লক্ষাধিক মানুষ আবারও পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। পানি বৃদ্ধির পাশাপাশি দেখা দিয়েছে তিস্তার তীব্র ভাঙন। গত দুদিনে ভাঙনে পাঁচ শতাধিক পরিবার ঘরবাড়ি হারিয়ে বাঁধে আশ্রয় নিয়েছেন। একদিকে পানি অন্যদিকে ভাঙনে অসহায় হয়ে পড়েছেন তিস্তা পাড়ের মানুষ।

এদিকে অব্যাহতভাবে পানি বাড়ার কারণে তিস্তা মধ্যবর্তী চর এলাকার বাসিন্দাদের নিরাপদ স্থানে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।

রোববার (১২ জুলাই) সন্ধ্যা ৬টায় লালমনিরহাটের তিস্তা ব্যারাজের ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ৩৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানি প্রবাহ রেকর্ড করা হয় ৫২ দশমিক ৯৫ সেন্টিমিটার। সকাল ৯ টায় ১৫ সেন্টিমিটার ও দুপুর ১২টায় ২০ সেন্টিমিটার প্রবাহিত হয়। ব্যারাজটি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ৪৪টি গেট খুলে দিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।

গতকাল শনিবার সন্ধায় ৬টায় তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ৩৫ সেন্টিমিটার ও রাত ৯টার দিকে ৪০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। পানির স্বাভাবিক প্রবাহ ৫২ দশমিক ৬০ সেন্টিমিটার। চলতি বন্যায় তিস্তা নদীর এটাই সর্বোচ্চ পানি প্রবাহের রেকর্ড।

ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী হাফিজুর রহমান জানিয়েছেন, শুক্রবার রাত থেকে পানি বিপৎসীমার ৪০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হতে থাকে। শনিবার রাতেও পানি বিপৎসীমার ৪০ সেন্টিমিটার অতিক্রম করে। এ কারণেই নদীর চরাঞ্চলের মানুষকে নিরাপদ স্থানে যেতে বলা হয়েছে। তবে রোববার সকাল থেকে পানি কিছুটা কমতে শুরু করলেও সন্ধ্যার দিকে পানি বিপৎসীমার ২৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় লালমনিরহাট সদর উপজেলার খুনিয়াগাছ, রাজপুর, গোকুন্ডা, আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা, কালীগঞ্জ উপজেলার চর বৈরাতী, ভোটমারী, কাকিনা, হাতীবান্ধা উপজেলার সিদুর্ণা, গড্ডিমারী, দোয়ানী, ধুবনী, ডাউয়াবাড়ি এবং পাটগ্রাম উপজেলার দহগ্রাম ইউনিয়নের লক্ষাধিক পরিবার তিন দিন ধরে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।

বিশেষ করে এসব এলাকার চরাঞ্চল ও নদী তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। চর এলাকার সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। এসব এলাকায় চতুর্থ দফা বন্যার কারণে দেখা দিয়েছে চরম খাদ্য সংকট, বিশুদ্ধ পানির অভাবে ছড়িয়ে পড়ছে নানা রোগব্যাধি।

এদিকে লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার পাটিকাপাড়া ও সিন্দুর্না ইউনিয়নের প্রায় তিন শতাধিক পরিবারের ঘরবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এসব পরিবার স্থানীয় বাঁধে তাঁবু টাঙিয়ে পরিবার নিয়ে মানবেতর জীবন কাটাচ্ছেন। পরিবারগুলোর মাঝে এখনও কোনো সরকারি সাহায্য পৌঁছায়নি।

ভাঙনের হুমকির মুখে পড়েছে পাটিকাপাড়া ইউনিয়নে পশ্চিম হলদিবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও পুর্ব হলদিবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় দুটি। উপজেলার সিংঙ্গীমার ইউনিয়নের ধুবনী এলাকার ভেসীর বাঁধটি হুমকির মুখে পড়েছে। তিস্তার প্রবল স্রোতে যেকোনো সময় ভেঙে যেতে পারে বাঁধটি। স্থানীয়রা বালির বস্তা ফেলে ভাঙন রোধে কাজ করছেন।

পাটিকাপাড়া ইউনিয়নের পূর্ব হলদিবাড়ি গ্রামের সাদেক আলী বলেন, রাতে পানির প্রবল স্রোতে সব কিছু হারিয়ে শুধু টিনের ঘরটি রক্ষা করতে পেরেছি, সব ভেসে গেছে। এখন পরিবার নিয়ে কষ্টে দিন কাটাচ্ছি।

তিন দিন ধরে পানিবন্দি গড্ডিমারী ইউনিয়নের তাসলিমা আক্তার জানান, শিশুসন্তান নিয়ে তিন দিন ধরে পানির জন্য ঘর থেকে বের হতে পারছি না। অন্য বাড়ি থেকে একবার রান্না করে সেই খাওয়ায় এই পর্যন্ত আছি। অনেক কষ্টে দিন পার করছি।

জানা গেছে, গত ৪৮ ঘণ্টার ভারী বৃষ্টি ও উজানের পাহাড়ি ঢলে তিস্তা নদীর পানি প্রবাহ বৃদ্ধি ও ভাঙন দেখা দিয়েছে। এর আগে গত সপ্তাহে তিস্তা ও ধরলার পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়, যা ক্রমে কমে গিয়ে বন্যার উন্নতি ঘটে। কিন্তু এক সপ্তাহ না যেতেই ফের উজানের ঢল ও ভারী বর্ষণের কারণে তিস্তার পানি বেড়ে বিপৎসীমার ৪০ সেন্টিমিটার থেকে বর্তমানে ২০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে এবং ধরলা নদী পানি বিপৎসীমার ২০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

পাটিকাপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সফিউল আলম রোকন জানান, গত তিন দিন থেকে তিস্তার পানি বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে নদীর ভাঙনে ইউনিয়নের তিনটি ওয়ার্ডের প্রায় ২০০ পরিবার ঘর হারিয়েছেন। পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন দুই হাজার পরিবার।

লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক (ডিসি) আবু জাফর জানান, পানিবন্দি পরিবারগুলোর সব সময় খোঁজ-খবর নেয়া হচ্ছে। ত্রাণ পর্যাপ্ত থাকায় প্রতিদিনই ত্রাণ দেয়া অব্যাহত আছে।

বাংলা৭১নিউজ/এসআর

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরও সংবাদ
২০১৫-২০২৩ © বাংলা৭১নিউজ.কম কর্তৃক সকল অধিকার সংরক্ষিত।
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com