বাংলা৭১নিউজ,(সাতক্ষীরা)প্রতিনিধি: ঘূর্র্ণিঝড় আম্পানের প্রভাবে উপকূলীয় জেলা খুলনার আকাশে আজ বুধবার সকাল থেকেই কালো মেঘ। কখনো ঝিরঝিরি, কখনো টিপটিপ বৃষ্টি পড়ছে। বেশ জোরে ঝোড়ো বাতাস বইছে। সংকেত ৭ থেকে বেড়ে ১০ হয়েছে। ওড়ানো হয়েছে তিন পতাকা। তবে আশ্রয়কেন্দ্র এখনো ফাঁকা। লোকজনের আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়ার তোড়জোড় নেই।
সকাল সাড়ে সাতটার দিকে দাকোপের বাণীশান্তা পিনাকপানি বিদ্যালয়ের আশ্রয়কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, বিদ্যালয় ভবন খোলা। সামনে একটি প্লাস্টিকের ড্রামে পানি ও সাবান রাখা আছে। তবে কোনো লোকজন নেই।
সেখানে উপস্থিত স্থানীয় সিপিপির সদস্য স্বরূপ কুমার গাইন বললেন, সারা রাত টিপটিপ বৃষ্টি হয়েছে। সকাল থেকে ঝিরিঝিরি বৃষ্টি। আবার কালো মেঘের ফাঁকে এক ঝলক রোদের দেখাও মিলছে। এই মেঘ, এই রোদ। ঝোড়ো বাতাস বইছে।
কথা বলতে বলতেই স্বরূপ গাইনের মুঠোফোন বেজে ওঠে। বললেন, আগে দুইটা পতাকা তোলা আছে। এখন সংকেত বেড়ে ১০ হয়েছে। তাই পতাকা আরেকটা তুলতে হবে। এর পরই তিনটি পতাকা উঠে যায়।
দাকোপের বাণীশান্তা পিনাকপানি বিদ্যালয়ের (আশ্রয়কেন্দ্র) ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি এবং ওই ইউনিয়ন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য সঞ্জীব কুমার মণ্ডল সকাল সাড়ে সাতটার দিকে বলেন, আশ্রয়কেন্দ্র খুলে দেওয়া হয়েছে। মাইকিং হয়েছে।
গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যার দিকে দুৃ–একজন আশ্রয়কেন্দ্রে এসেছিলেন। কিছুক্ষণ পর আবার চলে গেছেন। সকালে এখনো কেউ আসেনি। তবে খিচুড়ি রান্নার প্রক্রিয়া চলছে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার চেষ্টা চালানো হবে। সাবানপানি দিয়ে হাত ধোয়ার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। মাস্ক পরে আসতে বলা হয়েছে। যদি কারও না থাকে, তবে ব্যবস্থা করা হবে।
সামাজিক দূরত্ব মেনে চলানোর চেষ্টা করা হবে। প্রত্যেককে দুই হাত দূরে থাকতে হবে। একই পরিবারকে এক জায়গায় রাখার চেষ্টা চালানো হবে। সবকিছু মেনে চলানোর জন্য স্বেচ্ছাসেবকেরা সচেষ্ট থাকবেন।
বাণীশান্তা ইউনিয়নের আমতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় আশ্রয়কেন্দ্রে সকালে কোনো মানুষ ছিল না। সকালে ওই বিদ্যালয়ের দপ্তরি ভুপেষ রায় মুঠোফোনে বলেন, রাতে কয়েকজন লোক আশ্রয়কেন্দ্রে এসেছিল, আবার রাত ১০টার দিকে সবাই চলে গেছে। আজ সকালে তিন পতাকা তোলা হয়েছে। তবে লোকজন এখনো আসেনি।
দাকোপ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আব্দুল ওয়াদুদ বলেন, দাকোপে ১০৮টি আশ্রয়কেন্দ্র এবং আরও ৬৪টি বিদ্যালয় সাময়িক আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে প্রস্তুত রাখা হয়েছে। খাবার রান্না করে দেওয়ার জন্য প্রতিটি কেন্দ্রে ১০০ কেজি চাল, ১০কেজি ডাল এবং ১ হাজার নগদ টাকা দেওয়া হয়েছে।
ইউএনও আরও বলেন, ‘সব রকম স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার চেষ্টা করা হবে। সাবান ও পানি থাকছে। আর মাস্ক এরই মধ্যে সবার কাছে আছে। আগেই অনেক মাস্ক সরবরাহ করা হয়েছিল। মাস্ক পরে আসতে বলা হয়েছে। সবাই আগের চেয়ে সচেতনেও হয়েছে আশ্রয়কেন্দ্রে সামাজিক দূরত্ব মেনে চলা কঠিন, তবে চেষ্টা করা হবে। বাইরের জেলার কেউ থাকলে তার জন্য আলাদা কক্ষের ব্যবস্থা থাকবে। সব মিলিয়ে পরিস্থিতি মোকাবিলার সর্বোচ্চ চেষ্টা থাকবে আমাদের পক্ষ থেকে।’
বাংলা৭১নিউজ/এসএইচ