বাংলা৭১নিউজ,ডেস্ক: পুরুষের শুক্রাণুতেও করোনাভাইরাসের উপস্থিতি পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে একদল চীনা গবেষক। এমনকি সুস্থ হওয়ার পরও শুক্রাণুতে করোনার উপস্থিতি থাকার আশঙ্কা রয়েছে বলে জানিয়েছেন তারা। ফলে যৌন সম্পর্কের মাধ্যমে কোভিড-১৯ ছড়ানোর আশঙ্কা তাদের।
এ-সংক্রান্ত গবেষণা প্রতিবেদনটি জার্নাল অব আমেরিকান মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনে প্রকাশ করা হয়েছে।
ওই গবেষণায় চীনের শাংকিউ মিউনিসিপ্যাল হাসপাতালে চিকিৎসা নেয়া ৩৮ পুরুষকে নমুনা হিসেবে নেয়া হয়। তাদের মধ্যে ৬ জনের শুক্রাণুতে করোনার উপস্থিতি পেয়েছেন চিকিৎসকরা, যার হার ১৬ শতাংশ। এদের এক-চতুর্থাংশই তখন মারাত্মক সংক্রমণের পর্যায়ে এবং প্রায় ৯ শতাংশ সেরে ওঠার পর্যায়ে ছিলেন বলে গবেষকরা জানান।
গবেষকরা বলছেন, যেহেতু স্বল্পপরিসরে এই গবেষণা চালানো হয়েছে, তাই এখনই বলা যাচ্ছে না যে, যৌন সম্পর্কের মাধ্যমে করোনাভাইরাস ছড়ায় কিনা? এ জন্য বিষোদ গবেষণা প্রয়োজন।
চীনা গবেষক দলের পক্ষ থেকে আরও বলা হয়েছে, যদি প্রমাণ হয় যৌন সম্পর্কের মাধ্যমে করোনাভাইরাস সংক্রমিত হয়, তা হলে এটি হবে এ মহামারীর সবচেয়ে সংকটের বিষয়।
বেইজিংয়ে চাইনিজ পিপল লিবারেশন আর্মি জেনারেল হসপিটালের দিয়ানজেং লি ও তার সহকর্মীরা জানান, কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে এমনকি সেরে ওঠার পর্যায়েও পুরুষের বীর্যের মধ্যে আমরা সার্স-সিওভি ২-এর অস্তিত্ব পেয়েছি।
পুরুষের প্রজনন ব্যবস্থায় প্রতিস্থাপনে সক্ষম না হলেও ‘সেখানে পূর্ণ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা না থাকায় (প্রিভিলেজড ইমিউনিটি)’ ভাইরাসটি টিকে থাকছে বলে তারা মনে করছেন।
গবেষক দল বলছে, ভবিষ্যৎ গবেষণায় যদি প্রমাণিত হয় যে, সার্স-সিওভি-২ যৌন সংক্রমণে সক্ষম, তা হলে তা সংক্রমণ প্রতিরোধের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ একটি দিক বের করবে।
তবে গত ফেব্রুয়ারি ও মার্চে চীনে সামান্য পরিসরে করা গবেষণায় ১২ জন করোনা আক্রান্ত রোগীর শুক্রাণুতে ভাইরাসটির উপস্থিতি পাননি গবেষকরা।
যুক্তরাজ্যের শেফিল্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যান্ড্রোলজির অধ্যাপক অ্যালান প্যাসি বলেন, ‘ভাইরাসের উপস্থিতি জানতে শুক্রাণু পরীক্ষার ক্ষেত্রে প্রযুক্তিগত সমস্যা থাকায় এ গবেষণাগুলো এখনই চূড়ান্ত হিসেবে দেখা উচিত নয়। এ ছাড়া শুক্রাণুতে করোনার উপস্থিতি থাকলেও এটি সক্রিয় কিনা অথবা সংক্রমণের ঝুঁকি আছে কিনা, তা দেখা যায়নি।’
অ্যালান প্যাসি এও বলেন, তবে ভাইরাসটি কিছু পুরুষের শুক্রাণুতে পাওয়া গেলে আমাদের অবাক হওয়ার কিছু নেই, যেহেতু এটি ইবোলা ও জিকার মতো আরও অনেক ভাইরাসের ক্ষেত্রেও দেখা গেছে।
বাংলা৭১নিউজ/তথ্যসূত্র: আমেরিকান মেডিকেল জার্নাল