বাংলা৭১নিউজ,ঢাকা: করোনায় বিরূপ প্রভাব পড়েছে বাজারেও। লকডাউনে খেটে লোকজনের আয় রোজগার শূন্যের কোঠায়। নিম্নবিত্ত, নিম্ন মধ্যবিত্ত ও মধ্যবিত্ত, তিন শ্রেণীর লোকজন পড়েছেন বেশি বিপাকে।
করোনায় সৃষ্ট মহামারিতেও নিজেদের মৌলিক চাহিদা অন্যতম অন্ন সংস্থানে দুশ্চিন্তা দিনানিপাত। নিম্নবিত্তরা অন্যের দ্বারস্থ হতে পারলেও মধ্যবিত্ত, নিম্নমধ্যবিত্তদের কপালে চিন্তার বলিরেখা এঁকে দিয়েছে করোনা। একই সঙ্গে রমজান মাসকে সামনে রেখে দ্রব্যমূল্যের বাজারে উত্তাপ লেগেছে। যথাযথ বাজার মনিটরিং না থাকায় এই উত্তাপ কর্মহীন মানুষের শরীর-মন পুড়ছে।
নিত্যপণ্য থেকে কাঁচাবাজার সবকিছুই যেনো এই তিন শ্রেণীর মানুষের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে। বিগত দিনে পাইকারী দোকানিরা সিন্ডিকেট করলেও এবার বেপরোয়া খুচরা ব্যবসায়ীরা। করোনাকালেও অধিক লাভের আশায় বেপরোয়া হয়ে ওঠেছেন সেসব ব্যবসায়ীরা।
নগরের দরগাহ এলাকার সুমন আহমদ নামে রাজমিস্ত্রীর ঠিকাদার বলেন, নিত্যপণ্য পাইকারী বাজারের সঙ্গে খুচরা বাজারে ব্যবধান অনেক। তেমনি কাঁচাবাজারেও কৃষকের কাছ থেকে সস্তায় কিনে বস্তাভর্তি করে আনা সবজি শহরের বাজারে এসে আগুন দাম হাঁকানো হয়। এরমধ্যে নিত্যপণ্যের মধ্যে আদার কেজি ৪শ’র ঘর ছুঁয়েছে।
তবে দ্রব্যমূল্য দাম বাড়ার কারণে বাড়িয়ে বিক্রি করতে হয় বলে জানিয়েছেন নগরের মীরের ময়দানের ব্যবসায়ী হাসান আহমদ ও রিকাবিবাজারের মা স্টোরের ব্যবসায়ী শাহিন আহমদ।
বাজার ঘুরে দেখা গেছে, রমজানকে সামনে রেখে প্রতি বস্তা চালে খুচরা বাজারে ৫/৬ টাকা দাম বেড়েছে। দাম বেড়েছে ছোলা-ডালেরও। কিছুদিন আগে ৬০ টাকা বিক্রি করা ছোলার কেজি এখন ৮০ টাকা। ৫৫ টাকা কেজি দরের বড় লাল ডাল এখন ৭৫ টাকা, পেঁয়াজ ৩৫ থেকে গেছে ৫৫ টাকায়, নিম্নমানের ভোজ্যতেল ৯৮ টাকা এবং কোম্পানির তেল বিক্রি হচ্ছে ১১০ টাকা কেজি, খেঁজুর প্রকারভেদে ১৫০ থেকে ২ হাজার টাকা কেজি। একই পণ্যের দাম মফস্বলের বাজারগুলোতে আরো বেশি রাখার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
বিশ্বনাথ এলাকার সাদিকুর রহমান বলেন, যে চালের বস্তা ২১৫০ টাকা ছিল, এখন সেই একই মানের চাল ৫০ কেজির বস্তা ২ হাজার ৭শ টাকায় কিনতে হচ্ছে। আর ১৬৫০ টাকার নরমাল চাল এখন ২১০০ টাকা বিক্রি হচ্ছে।
একই অভিযোগ করেন ওসমানীনগরের গোয়ালাবাজারের জয়নাল আবেদীন, গোয়াইনঘাটের বিছানাকান্দি এলাকার ডা. হারুনুর রশিদ ও ফেঞ্চুগঞ্জ বিআইডিসি এলাকার আব্দুস সালাম।
তারা জানান, শহরের তুলনায় গ্রামে জিনিসপত্রের দাম আরো বেশি। কয়দিন আগে ৩০ টাকা করে বিক্রি করা পেঁয়াজ এখন গ্রামের বাজারে ৬০/৭০ টাকা, ৫৫ টাকার ছোলা ৮০ টাকা, আলু ৩০, আদা ১৮০ থেকে এখন ৪শ টাকা কেজি, রসুন ১৪০ থেকে ১৭৪ টাকা হয়েছে।
এদিকে কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা গেছে, আলু পৌঁছে গেছে কেজি ৩০ টাকায়, ১৫ টাকার ঢেঁড়শ ৬০ টাকা কেজি, এক হালি লেবু এখন ৬০-৮০ টাকা, টমেটো কেজি ৩০, কাকরোল ৮০ টাকা, করলা ৬০ টাকা। এছাড়া অন্যান্য জিনিসপত্রের দামও বেড়ে চলেছে।
এ বিষয়ে সিলেটের জেলা প্রশাসক এম কাজী এমদাদুল ইসলাম বলেন, বাজার মনিটরিংয়ে আমাদের মোবাইল টিম আছে। দ্রব্যমূল্য অহেতুক বাড়ানোর কারণে ইতোমধ্যে অনেকে জরিমানা গুণছেন। এরপরও রমজানে দ্রব্যমূল্য সহনীয় পর্যায়ে রাখতে বৃহস্পতিবার (২৩ এপ্রিল) সভা আহ্বান করা হয়েছে। ওই সভা থেকে বাজার মনিটরিং টিম করা হবে।
বাংলা৭১নিউজ/এমআর