শনিবার, ১১ জানুয়ারী ২০২৫, ১২:১৫ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম
হামলাকারীদের কড়া হুঁশিয়ারি দিলেন সংস্কৃতি উপদেষ্টা চট্টগ্রাম-কক্সবাজার-চট্টগ্রাম রুটে দুটি নতুন ট্রেন লোহিত সাগরে হুথিদের হামলায় পিছু হটলো মার্কিন যুদ্ধজাহাজ অন্তর্বর্তীকালীন দা‌য়িত্ব পালনে ঢাকায় ট্র্যাসি জ্যাকবসন শ্রম আইনে পরিচালনার নির্দেশ প্রধান উপদেষ্টার কমিটি নিয়ে দ্বন্দ্ব, বৈষম্যবিরোধী ছাত্রদের দু’পক্ষের হাতাহাতি পরিবেশ রক্ষায় সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে মায়ের জন্য বাসায় রান্না করা খাবার নিয়ে গেলেন তারেক রহমান বাংলাদেশকে সব ধরনের সহায়তা করতে প্রস্তুত যুক্তরাষ্ট্র লেবানন-ইয়েমেনে ইসরায়েলের হামলা, গাজায় নিহত আরও ২১ সাবেক রেলমন্ত্রী মুজিবুলসহ ৫ জনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্র প্রকাশের দাবিতে লিফলেট বিতরণ এবার কারও পক্ষ নিয়ে কাজ করলে অসুবিধা হবে : কর্মকর্তাদের সিইসি অল্প কিছুদিনের মধ্যে দেশে ফিরবেন তারেক রহমান: মির্জা ফখরুল ইসলামী ব্যাংকের ভল্ট ভেঙে টাকা চুরি শেখ হাসিনার দুর্নীতি খুঁজে বের করতে টাস্ক ফোর্স গঠনের সিদ্ধান্ত ডিএমপির ১২ ডিসিকে বদলি ‘বৃহত্তর ইসরাইলের’ মানচিত্র প্রকাশ, আরব দেশগুলোর কড়া প্রতিবাদ বিমানবন্দরে রক্তাক্ত সেই প্রবাসীকে জরিমানা, হতে পারে জেলও ৩০ জুনের আগেই মহার্ঘভাতা ঘোষণা

আসুন গুনাহের কাজ ছেড়ে দিয়ে আল্লাহমুখী হই

বাংলা ৭১ নিউজ
  • আপলোড সময় মঙ্গলবার, ১০ মার্চ, ২০২০
  • ৫৩ বার পড়া হয়েছে

বাংলা৭১নিউজ,ডেস্ক: আল্লাহ তায়ালা মানুষ সৃষ্টি করেছেন, এর দ্বারা উদ্দেশ্য হল, মানুষ তার এবাদত করবে এবং নবী-রাসূলদের নির্দেশিত পথে চলবে।

নবী-রাসূলরা যা করতে বলেন, তা করবে। আর যা থেকে নিষেধ করেন, তা থেকে বেঁচে থাকবে; তাহলে সে ইহকালে সুখ ও শান্তির জীবন লাভ করবে এবং পরকালেও পাবে অকল্পনীয় নিয়ামতে ভরপুর জান্নাত।

কিন্তু, মানুষ আজ আল্লাহ ও তার রাসূলের (সা.) নির্দেশিত পথ ছেড়ে দিয়ে নিজের ইচ্ছেমত জীবন যাপন করছে। পৃথিবীতে বিপর্যয় সৃষ্টি করছে। খুন করছে,গুম করছে, চুরি করছে, ডাকাতি করছে, ছিনতাই করছে, ব্যভিচারে লিপ্ত হচ্ছে, সুদ খাচ্ছে, ঘুষ খাচ্ছে। হেন কোন পাপকাজ নেই, যা মানুষ করছে না।

প্রতিনিয়তই আমরা আল্লাহ তায়ালার চরম অবাধ্যতায় লিপ্ত হচ্ছি। এ কারণেই আল্লাহ তায়ালা বিভিন্ন বিপদ দিয়ে আমাদের সতর্ক করেন। কারণ, মানুষ যে বিপদের সম্মুখীন হয়,সেটা তার হাতের কামাই।

আল্লাহ তায়ালা বলেন, জলে ও স্থলে মানুষের কৃতকর্মের দরুণ বিপর্যয় ছড়িয়ে পড়েছে। আল্লাহ তায়ালা তাদের কর্মের শাস্তি আস্বাদন করাতে চান, যাতে তারা ফিরে আসে। (সুরা রূম : ৪১)

এ আয়াতের ব্যাখ্যায় তাফসীরে রূহুল মাআনীতে বলা হয়েছে, ‘বিপর্যয়’ বলে দুর্ভিক্ষ, মহামারি, অগ্নিকাণ্ড, পানিতে নিমজ্জিত হওয়ার ঘটনা বৃদ্ধি পাওয়া, সব কিছু থেকে বরকত উঠে যাওয়া, উপকারী বস্তুর উপকার কম হওয়া এবং ক্ষতিকর বিষয় বেশি বেশি হওয়া ইত্যাদি বিপদাপদ বুঝানো হয়েছে। (আল্লামা আলুসী, রূহুল মাআনী, খ.-২১, পৃ.-৬৩)

আর বর্তমানে ঘটছেও তাই। সুতরাং আয়াত থেকে বোঝা যায়, এসব পার্থিব বিপদাপদের কারণ হচ্ছে মানুষের গোনাহ ও অপকর্ম। তার মধ্যে শিরক ও কুফর হচ্ছে সবচে মারাত্মক। তারপর রয়েছে অন্যান্য গুনাহ।

আমাদের গুনাহের সংখ্যা কিন্তু এক দুটো নয়। অসংখ্য-অগণিত। চোখ খুললেই যে নারীকে দেখা জায়েজ নেই, তাকে আমরা দেখি। হাঁটতে-চলতে গুনাহ করি। কথা বললে গুনাহ করি ; অন্যজনকে কষ্ট দিই, পরনিন্দা করি। একে একে সবগুলো গুনাহের জন্য কি আল্লাহ তায়ালা আমাদের পাকড়াও করেন? শাস্তি দেন? না, দেন না। বরং অধিকাংশই ক্ষমা করে দেন।

আল্লাহ তায়ালা বলেন, যেসব বিপদাপদ তোমাদের স্পর্শ করে, সেগুলো তোমাদেরই কৃতকর্মের কারণে। আর অনেক গুনাহ তিনি (আল্লাহ) ক্ষমা করে দেন। (সুরা শুরা : ৩০)

উপরের আয়াত থেকে বোঝা গেল, গোনাহের পরিমাণ অনুযায়ী আমরা শাস্তি ভোগ করি না। স্বল্পসংখ্যকের জন্যই ভোগ করি। গোনাহ যখন ব্যাপক আকার ধারণ করে, তখনই কেবল আল্লাহ তায়ালা মানুষদের বিভিন্ন মহামারি দিয়ে পরীক্ষা করেন। মানুষকে গোনাহের পথ থেকে ফিরে আসার সুযোগ দেন। বিপদের সম্মুখীন হয়ে বান্দা কী করে, এটা তিনি দেখতে চান। দেখেন।

তিনি বলেন, আমি অবশ্যই তোমাদের পরীক্ষা করব (কখনও) ভয়-ভীতি দিয়ে, (কখনও) ক্ষুধা দিয়ে এবং (কখনও) জানমাল ও ফলফসলের ক্ষয়-ক্ষতি দিয়ে আর তুমি (হে নবি) ধৈর্যশীলদের সু-সংবাদ দাও। (সূরা বাকারা, আয়াত : ১৫৫)

আজ বিশ্বব্যাপী যে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে, পূর্বের যুগেও তেমন ভাইরাস-মহামারি বা বিপর্যয় প্রকাশ পেত। তখন সেই যুগের নবী-রাসূলরা স্বীয় জাতিকে দিকনির্দেশনা দিতেন। সবার করণীয় কী হবে, তা বলে দিতেন। সুতরাং বর্তমান সময়ের এই মরণব্যাধি করোনাভাইরাসের সমাধানের জন্যও আমাদের আল্লাহ ও তার রাসূলের বাণীর শরণাপন্ন হতে হবে।

হজরত নুহের (আ.) গোত্র যখন আল্লাহ তায়ালার অবাধ্য হল। দেব-দেবীর পূজা করা আরম্ভ করল । তখন আল্লাহ তায়ালা অসন্তুষ্ট হয়ে তাদের প্রতি মহাপ্লাবন নাজিল করেন এবং সেই প্লাবনে নিমজ্জিত করে তাদের ধ্বংস করে দেন। কিন্তু নুহের (আ.) অল্পসংখ্যক অনুসারীকে আল্লাহ তায়ালা মহাপ্লাবন থেকে হেফাজত করেছিলেন।

হজরত হুদের (আ.) সম্প্রদায়ও একই অপরাধে অপরাধী ছিল। আল্লাহ তায়ালা তাদের প্রচণ্ড ঘূর্ণিঝড় দিয়ে ধ্বংস করে দেন।

হজরত শুয়াইবের (আ.) গোত্র ওজনে কম দিত। আল্লাহ তায়ালা এ অপরাধের কারণে তাদেরও ধ্বংস করে দেন।

হজরত লুতের (আ.) গোত্র সমকামি ছিল। তারা যখন অপরাধের চূড়ান্তে পৌঁছে গেল, তখন আল্লাহ তায়ালা ভূমিকম্প ও পাথর বর্ষণের মাধ্যমে তাদেরও ধ্বংস করে দেন।

এমন আরও অনেক দৃষ্টান্ত রয়েছে, আল্লাহ তায়ালা যাদের বিভিন্ন অপরাধের কারণে ধ্বংস করে দিয়েছেন।

আমরা যারা শেষ নবী হযরত মোহাম্মদের (সা.) উম্মত, আল্লাহ তায়ালা গোনাহের কারণে আমাদের সমূলে ধ্বংস করবেন না ঠিক, তবে বিভিন্ন ভাইরাস-মহামারি বা বিপর্যয়ের সম্মুখীন করবেন এবং সেটা করবেন আমাদের অবাধ্যতার কারণেই। যেন আমরা তওবা করে সৎপথে ফিরে আসি।

এই মহামারি কারও জন্য হয় শাস্তি, আর কারও জন্য পরীক্ষা। এটা যার জন্য শাস্তি, তাকে আল্লাহ তায়ালা আশা করা যায় ক্ষমা করতে চান এবং আক্রান্ত ব্যক্তির উচিত আল্লাহ তায়ালার কাছে বেশি বেশি তওবা ও ক্ষমা প্রার্থনা করা।

আর যার জন্য মহামারীটা পরীক্ষা, তার মর্যাদাকে আল্লাহ তায়ালা আরও বুলন্দ করতে চান। এই জন্য তার উচিত ধৈর্যধারণ করা। নিরাশ না হওয়া।

এই মুহূর্তে আমাদের করণীয় কী?

বিপদ-আপদে বিচলিত না হয়ে এটাকে বরং আল্লাহ তায়ালার রহমত মনে করা। মনে করা এই ভাইরাস আমার নিজের গোনাহের কারণে এসেছে। তাই অবনত মস্তকে আল্লাহ তায়ালার কাছে বেশি বেশি ক্ষমা চাইতে থাকা। আল্লাহ না করুন, আমাদের কেউ এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে গেলে, তার জন্য উচিত হবে হা-হুতাশ না করে ধৈর্যধারণ করা। আল্লাহ তায়ালাকে বেশি বেশি স্মরণ করা। জিকির করা এবং গুনাহ একেবারেই বর্জন করা।

সম্মিলিতভাবে আমরা আরেকটা কাজ করতে পারি, সেটা হল, আমাদের দেশে যেখানে যেখানে প্রকাশ্য গোনাহ হয়ে থাকে, সেগুলোর ব্যাপারে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারি। মসজিদে সম্মিলিত ও একাকি তওবার ব্যবস্থা করতে পারি।

দান-সদকা বাড়িয়ে দেই। পরিবারের সবাইকে গুনাহ থেকে বিরত রাখার চেষ্টা করি। যারা নামাজ পড়ি না, তারা পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ শুরু করে দেই। বিপদ ও মুসিবত যত ছোটই হোক, বা যত বড়ই হোক, সব সময় উল্লেখিত দোয়া পড়া। মনে রাখতে হবে যদি শরীরে একটি কাঁটাও বিধে তাহলেও এ দোয়া পড়া-

اِنَّالِلَّهِ وَ اِنَّا اِلَيْهِ رَاجِعُوْنَ – اَللّهُمَّ اَجِرْنِىْ فِىْ مُصِيْبَتِىْ وَاخْلُفْ لِىْ خَيْرًا مِّنْهَا –

উচ্চারণ : ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন; আল্লাহুম্মা আযিরনি ফি মুসিবাতি ওয়াখলুফলি খাইরাম মিনহা। (মুসলিম)

আর যখনই সুযোগ হবে তখনই দু’রাকাত করে সালাতুত তওবা পড়তে পারি। এর ফলে আশা করা যায়, আল্লাহ তায়ালা করোনা ভাইরাস থেকে আমাদের হেফাজত করবেন।

লেখক: তরুণ আলেম ও সাহিত্যকর্মী

বাংলা৭১নিউজ/এইচএম

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরও সংবাদ
২০১৫-২০২৫ © বাংলা৭১নিউজ.কম কর্তৃক সকল অধিকার সংরক্ষিত।
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com