বাংলা৭১নিউজ,ঢাকা: দেশের জনগোষ্ঠীর একটি অংশ ডিমেনশিয়া নামক ভয়াবহ মস্তিষ্ক রোগে আক্রান্ত। মাত্র ৫ শতাংশ মানুষ এ রোগ সম্পর্কে জানে। ডিমেনশিয়া বয়োবৃদ্ধির স্বাভাবিক কোনো অংশ নয়, এটি মস্তিষ্কের ক্ষয়জনিত রোগ। এখন পর্যন্ত ডিমেনশিয়ার ভালো কোনো চিকিৎসা নেই। অজ্ঞতার কারণে আক্রান্ত ব্যক্তি অযত্ন-অবহেলায় ও অতি কষ্টে জীবন-যাপন করছেন। অথচ তাদের সঠিক সেবা-যত্ন দরকার।
ডিমেনশিয়া সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে গতকাল শনিবার (২৮ ডিসেম্বর) সকালে ধানমন্ডির রবীন্দ্র সরোবরে ‘হাঁটি ডিমেনশিয়ার জন্য’ শীর্ষক এক আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। পাশাপাশি সামাজিক কুসংস্কার, ভ্রান্ত ধারণা দূর করে ডিমেনশিয়া আক্রান্ত ব্যক্তি ও তাদের সেবাদানকারীর প্রতি শ্রদ্ধা, ভালোবাসা, যত্ন, মর্যাদা, অধিকার, সহানুভূতিশীল দৃষ্টিভঙ্গী ও সহযোগিতা দেয়ার বিষয়েও আলোচনা হয় সভায়।
সাইফুদ্দিন আহম্মেদের (ফ্যামেলি কেয়ারার) সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত বৃটিশ নাগরিক মিসেস জলী খান (ফ্যামেলি কেয়ারার)। অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন ইউকে’র কেন্ট ব্রেন ইনজুরি ফোরাম ইউকের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. মোহাম্মেদ সাকেল, কেন্ট এবং ক্যানটারবার পরামর্শদাতা গবেষণা ফেলো মিসেস কারেন সান্ডার্স, ইউএসএ’র লাইফসাইন্স রিসোর্স সেন্টারের পরিচালক অধ্যাপক ড. আহমেদ মুস্তফা, সাবেক সংসদ সদস্য সেলিনা জাহান লিটা, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সাবেক অতিরিক্ত সচিব ডা. মো. সিরাজদদৌলা ও ঠাকুরগাঁও জেলা সমিতি ঢাকা’র সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার মো. আনোয়ার আলী।
সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন আলঝেইমার সোসাইটি অব বাংলাদেশ’র সেক্রেটারি জেনারেল মো. আজিজুল হক। তিনি ডিমেনশিয়া মানুষের জন্য জাতীয় নীতিমালা তৈরি করার উপর গুরুত্ব আরোপ করেন এবং ডিমেনশিয়া একটি আসন্ন দুর্যোগ হিসেবে আখ্যায়িত করেন। তিনি বলেন, দ্রুত পদক্ষেপ না নিলে নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাবে।
অধ্যাপক ডা. মোহাম্মেদ সাকেল বলেন, আমাদের দেশে ডিমেনশিয়া ভয়াবহ রূপ ধারণ করছে। তাই এখনি পদক্ষেপ নিতে হবে মোকাবেলার জন্য। যেহেতু ডিমেনশিয়ার এখনও কোনো ওষুধ নেই তাই তাদের যত্নের ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন। প্রধান অতিথি মিসেস জলী খান বলেন, আগে রোগকে বুঝতে হবে এবং রোগীকে সেবা-যত্ন করতে হবে। তাদের সঠিকভাবে সেবা-যত্ন করতে পারলে তারা ভালো থাকবেন ।
আলোচনা শেষে একজন ডিমেনশিয়ার বন্ধু হোন, ডিমেনশিয়া বন্ধু হওয়ার আন্দোলনে যোগ দিন এবং একটি ডিমেনশিয়া বান্ধব বাংলাদেশ গড়তে সহয়তা করুন এক সচেতনতা মূলক এক র্যালি হয়।
প্রসঙ্গত, ২০১৫ সালে বাংলাদেশে ডিমেনশিয়া রোগীর সংখ্যা ছিল ৪ লাখ ৬০ হাজার, ২০৩০ সালে তা বেড়ে দাঁড়াবে ৮ লাখ ৩৪ হাজার এবং ২০৫০ সালে সেটা হবে ২১ লাখ ৯৩ হাজার। বিশ্বে প্রতি ৩ সেকেন্ডে একজন করে মানুষ নতুনভাবে ডিমেনশিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছে। দেশের একমাত্র ডিমেনশিয়া সেন্টার তৈরি হচ্ছে ঠাকুরগাঁওয়ে।
বাংলা৭১নিউজ/সি এইস