সোমবার, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৯:৩৫ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম
চাকরির বয়স ৩৫ আন্দোলনকারীদের প্রতিনিধিদল যমুনায় অটোমেটেড সেবা প্রতিরোধ করবে অপচয় ও দুর্নীতি : অর্থ উপদেষ্টা নেপালে বন্যা-ভূমিধসে ১৯২ মৃত্যু, উদ্ধারে হিমশিম আমরা প্রস্তুত, দীর্ঘ যুদ্ধেও বিজয়ী হবো: হিজবুল্লাহর উপপ্রধান এবি ব্যাংকের বন্ড ইস্যু পুনর্বিবেচনার আবেদন তেলবাহী জাহাজে আগুনের ঘটনায় ২ জনের মরদেহ উদ্ধার ৯৯৯-এর রেসপন্স টাইম আরো কমিয়ে আনা হবে : আইজিপি প্রাথমিক শিক্ষা সংস্কারে কমিটি, নেতৃত্বে ইমিরেটাস অধ্যাপক মনজুর হাসিনার পতনের পর গ্রামীণফোনের শেয়ারদর বেড়েছে ৫৩ শতাংশের বেশি স্বামীসহ গ্রেফতার সাবেক এমপি হেনরি যুবদল নেতা হত্যা মামলায় ৫ দিনের রিমান্ডে সুলতান মনসুর মিরাজ-সাকিবের ঘূর্ণির পর ২৮৫ রানে ইনিংস ঘোষণা ভারতের অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কার কার্যক্রমে সুপারিশমালা দেবে বিএনপি সেপ্টেম্বরে নির্যাতনের শিকার ১৮৬ নারী-কন্যাশিশু জিয়াউর রহমানকে ‘রাজাকার’ বলায় মামলা চাকরিতে প্রবেশের বয়স বৃদ্ধির দাবি: পর্যালোচনা কমিটি গঠন ডিসি নিয়োগ নিয়ে হট্টগোল: ১৭ উপসচিবকে শাস্তির সুপারিশ ঢাকাসহ ৯ অঞ্চলে মাঝ রাতের মধ্যে ঝোড়ো হাওয়ার আভাস বাংলাদেশ-চীন সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় নিতে আগ্রহী অন্তর্বর্তী সরকার যুক্তরাষ্ট্রে হেলেনের তাণ্ডবে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৯১

পদ্মা-যমুনার ভাঙ্গনে সর্বশান্ত হচ্ছে দৌলতপুর ও হরিরামপুরবাসী

বাংলা ৭১ নিউজ
  • আপলোড সময় শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০১৯
  • ৫৫০ বার পড়া হয়েছে

বাংলা৭১নিউজ,মানিকগঞ্জ থেকে ফিরে: মানুষগুলো সর্বশান্ত হয়ে যাচ্ছে। ভিটেমাটি, আবাদি জমি, হাটবাজার, স্থাপনা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠাণ, মসজিদ-মন্দির এক একে সব চলে যাচ্ছে নদী গর্ভে। একদিকে যমুনা, আরেক দিকে পদ্মার ভাঙ্গন। ভাঙ্গণের কবল থেকে রক্ষা পেতে চান মানিকগঞ্জ জেলার দৌলতপুর উপজেলাধীন যমুনা নদীর বাম তীরে বাচামারা বাজার এবং হরিরামপুর উপজেলাধীন পদ্মা নদীর বাম তীরে বাহাদুরপুর, রামকৃষ্ণপুর ও ধূলসুরা এলাকার অধিবাসীরা।স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ড নদী ভাঙ্গনরোধে ৫০ কোটি টাকা ব্যয় সম্বলিত একটি প্রকল্প গ্রহণ করেছে।

প্রকল্পের ডিপিপি বর্তমানে পানি সম্পদ মন্ত্রনালয়ে রয়েছে। এরপর এটি মন্ত্রনালয় থেকে অনুমোদনের জন্য পাঠানো হবে পরিকল্পনা কমিশনে। এমন জনস্বার্থ সম্বলিত প্রকল্পটি অনুমোদনের ক্ষেত্রে আমলাতান্ত্রিক জটিলতার কবলে পড়লে এখানকার মানুষগুলোর ভোগান্তি বাড়বে। বাড়বে অসহায়ত্ব ও সর্বশান্ত হওয়া মানুষের স্রোত।

সরেজমিনে দেখা যায়, মানিকগঞ্জ জেলার হরিরামপুর উপজেলার পদ্মা নদীর বাম তীরে গোপীনাথপুর ইউনিয়নের বাহাদুরপুর বাজার, রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের নয়াকান্দি ও ধূলসুরা ইউনিয়নের আবিধারা নামক স্থান এবং দৌলতপুর উপজেলার যমুনা নদীর বাম তীরে বাচামারা ইউনিয়নের বাচামারা বাজার এলাকায় নদীর ভাঙ্গন তীব্র হয়েছে। ভাঙ্গনের তীব্রতা সম্পর্কে জানতে চাইলে স্থানীয় এলাকাবাসী জানায়, ভাঙ্গনকবলিত স্থানের সন্নিকটে নদীর মধ্যে ছোট-বড় অনেক চর থাকায় নদী তীরের দিকে আড়াআড়ি পানি প্রবাহের কারনে এমনটি হচ্ছে।

এ ব্যপারে জানতে চাইলে পানি উন্নয়ন বোর্ডের মহাপরিচালক প্রকৌশলী মো: মাহফুজুর রহমান বাংলা৭১নিউজ-কে বলেন, বিভিন্ন বছরের স্যাটেলাইট চিত্র পর্যবেক্ষণে দেখা যায় উক্ত চরগুলি প্রতিবছরই আকার ও আয়তনে বৃদ্ধি পাচ্ছে, ফলে নদীর প্রবাহ তীরের দিকে অধিকমাত্রায় প্রবাহিত হয়ে ভাঙ্গনের মাত্রা আরও বৃদ্ধি করছে। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই নদীর পাড়ে জনবসতি থাকায় নদী ভাঙ্গন প্রতিরোধ ব্যবস্থা গ্রহণ করা অত্যন্ত আবশ্যকীয় হয়ে পড়ে। এ ব্যপারে নির্বাহী প্রকৌশলীকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে একটি প্রকল্প গ্রহণের জন্য। তিনি ডিপিপি প্রনয়ণ করে পাঠিয়েছেন। আসা করি, দ্রুত কাজ শুরু করতে পারবো।

গোপীনাথপুর ইউনিয়নের স্থানীয় অধিবাসী বারেক মিয়া বাংলা৭১নিউজ-কে জানান, অতি দ্রুত নদী তীর সংরক্ষণ পূর্বক নদী ভাঙ্গন থেকে রক্ষা, নদী পুনঃখননের মাধ্যমে নাব্যতা ফিরিয়ে আনা ও নদী কেন্দ্রিক যাবতীয় সমস্যা সমাধানের ব্যাপারে প্রয়োজনীয় কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ না করলে এখানকার মানুষগুলো আরও ক্ষতিগ্রস্থ হবে। তিনি বলেন, তার বাপ-দাদার ভিটাসহ কয়েক বিঘা জমি এখন নদী গর্ভে।

জানা যায়, মানিকগঞ্জ জেলার দৌলতপুর ও শিবালয় উপজেলার অর্ন্তগত যমুনা ও পদ্মা নদীর অংশ ড্রেজিং/খনন করে ভাঙ্গন রোধ করার লক্ষ্যে এ. এম. নাঈমুর রহমান (দুর্জয়), এমপি একটি ডিও লেটার দিয়েছেন। এরই আলোকে চলতি বছরের ১২ মে পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিবের সভাপত্বিতে অনুষ্ঠিত পর্যালোচনা সভায় এখানকার নদী ভাঙ্গন রোধে জরুরীভিত্তিতে অনুর্ধ্ব ৫০ কোটি টাকার প্রকল্প গ্রহণের সিদ্ধান্ত হয়।

গৃহিত সিদ্ধান্তের আলোকে ডিপিপি প্রনয়ন করা হয়েছে। ডিপিপিতে দৌলতপুর উপজেলার বাচামারা ইউনিয়নের ১ দশমিক ৯৫ কিলোমিটার; গোপিনাথপুর, রামকৃষ্ণপুর ও ধূলসুরা ইউনিয়নে ১ দশমিক ৮০ কিলোমিটার নদী তীররক্ষা প্রকল্পের কথা বলা হয়েছে।

এ ব্যপারে জানতে চাইলে নির্বাহী প্রকৌশলী মো: মাঈন উদ্দীন বাংলা৭১নিউজ-কে বলেন, এই এলাকায় পদ্মা ও যমুনা নদীর পানি প্রবাহ শুষ্ক মৌসুমে হ্রাস পেয়ে শূন্যের কোঠায় নেমে যায়। আবার বর্ষা মৌসুমে অত্যধিক প্রবাহ ও নদী তীরে ব্যাপক ভাঙ্গনের সৃষ্টি হয়। বর্ষা পরবর্তী পানি প্রবাহ হ্রাসের কারণে নদী বাহিত পলি ধীরে ধীরে নদীর তলদেশে জমা হয়, যা নদীটির প্রতিনিয়ত নাব্যতা হ্রাসের অন্যতম কারণ। অন্যদিকে বর্ষাকালে আপার ক্যাচমেন্ট থেকে উৎস নদীগুলো হয়ে আসা ধারণ ক্ষমতার অতিরিক্ত প্রবাহ নদীতে তীব্র ¯্রােতের সৃষ্টি করে। এই তীব্র স্রোত সরাসরি বিনুনী আকৃতির নদীটির চ্যানেলের বাঁকগুলিতে আঘাত করে ভয়াবহ নদী ভাঙ্গনের সৃষ্টি করে। এ ভাঙ্গনের তীব্রতা ও পরিমান প্রতি বছরই বৃদ্ধি পাচ্ছে।

এদিকে ডিপিপিতে বলা হয়েছে, প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে বিভিন্ন জনপদ, স্কুল-কলেজ, মসজিদ,ফসলি জমি ও সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সরকারী ও বেসরকারী অবকাঠামো নদী ভাঙ্গনের হাত থেকে রক্ষা পাবে, ফলে জীবনযাত্রার মান উন্নত হবে। এলাকাটি নদী ভাঙ্গন হতে রক্ষা পেলে জনসাধারনের মধ্যে নিরাপত্তাবোধ সৃষ্টি হবে বিধায় ব্যবসা বানিজ্য এবং অন্যান্য কর্মকান্ড বৃদ্ধি পাবে। সাধারণ মানুষের আর্থসামাজিক অবস্থার উন্নয়ন হবে।

এছাড়া নদী ভাঙ্গন রোধের ফলে এলাকার বনভূমি এবং জীব-বৈচিত্র ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা পাবে। এছাড়াও প্রস্তাবিত কাজসমূহ বাস্তবায়িত হলে পরিবেশের উপর কোন বিরূপ প্রভাব পড়বে না। বরং কৃষি জমি সংরক্ষনের মাধ্যমে কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে। যা জাতীয়ভাবে খাদ্য নিরাপত্তার কাজে সহায়ক হবে।

বাংলা৭১নিউজ/এসএইচবি

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরও সংবাদ
২০১৫-২০২৩ © বাংলা৭১নিউজ.কম কর্তৃক সকল অধিকার সংরক্ষিত।
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com