বাংলা৭১নিউজ,(কুমিল্লা)প্রতিনিধি: কুমিল্লায় তাফসির ইসলাম (৫) নামে এক শিশু অপহরণের আট ঘণ্টার মধ্যে উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় শিশুর দাদি ও চাচাসহ চারজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। শিশু তাফসির মুরাদনগর উপজেলার নহল গ্রামের প্রবাসী আক্তার হোসেনের ছেলে।
গ্রেফতাররা হলেন অপহৃত শিশু তাফসিরের আপন দাদি জোহরা বেগম (৬০), একই বাড়ির মৃত তাজুল ইসলামের ছেলে ও শিশুর চাচা কবির হোসেন (৩৩), রায়তলা গ্রামের শাহ আলমের ছেলে দেলোয়ার হোসেন (২৬) ও নাগেরকান্দি গ্রামের তোফাজ্জল হোসেনের ছেলে রাসেল মিয়া (২২)।
মুক্তিপণের জন্যই তারা পরিকল্পিতভাবে ওই শিশুকে অপহরণ করে। বুধবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে কুমিল্লা পুলিশ সুপার কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে প্রেস ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান পুলিশ সুপার সৈয়দ নুরুল ইসলাম।
পুলিশ সুপার জানান, মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) বেলা ১১টার দিকে শিশু তাফসিরের মা তানিয়া আক্তার (২৭) মুরাদনগর উপজেলার কোম্পানীগঞ্জ সোনালী ব্যাংক থেকে টাকা উত্তোলন করে বাড়ি ফিরছিলেন। এসময় কবির হোসেনের স্ত্রী ফোন করে শিশু তাফসিরকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না বলে তার মাকে জানায়। এর ৫ মিনিট পর অপরিচিত মোবাইল নম্বর থেকে ফোনে শিশুর মুক্তিপণ বাবদ তার মায়ের কাছে ৪ লাখ টাকা দাবি করে এবং টাকা না দিলে শিশুকে খুন করে ফেলা হবে বলে হুমকি দেয়া হয়।
তানিয়া বিষয়টি তাৎক্ষণিকভাবে মুরাদনগর থানা পুলিশকে জানান। পরে পুলিশ অভিযান চালিয়ে অপহৃত শিশুর সম্পর্কীয় চাচা কবির হোসেনকে আটক করে এবং জিজ্ঞাসাবাদে সে শিশু অপহরণের বিষয়টি স্বীকার করে।
সে পুলিশকে জানায়, শিশু তাসফিরের দাদি জোহরা বেগমের পরিকল্পনা অনুযায়ী শিশুকে মুক্তিপণের জন্য অপহরণ করা হয়েছে। এ তথ্যের ভিত্তিতে পুলিশ শিশুর দাদি জোহরা বেগমকে গ্রেফতার করে। পরে উভয়ের দেয়া তথ্য অনুযায়ী পুলিশ অপহরণকারী চক্রের অবস্থান নিশ্চিত হয়। এরপর মুক্তিপণের টাকা দেয়ার কথা বলে অপহরণকারী দলের রাসেলকে কৌশলে উপজেলার নাগেরকান্দি এলাকায় এনে গ্রেফতার করা হয়।
এ সময় পুলিশ রাসেলের মাধ্যমে অপহরণকারী দেলোয়ারকে জানায়, মুক্তিপণের টাকা পাওয়া গেছে। তখন দেলোয়ার মোবাইল ফোনে শিশুর মা তানিয়া আক্তারকে উপজেলার শুশুন্ডা কবরস্থান মসজিদ থেকে তার ছেলেকে নিয়ে যেতে বলে। পুলিশ সেখানে গিয়ে শিশু তাফসিরকে ওই মসজিদ থেকে উদ্ধার করে এবং দেলোয়ারকে রায়তলা এলাকা থেকে গ্রেফতার করে।
এ ঘটনায় শিশুর মা তানিয়া আক্তার বাদী হয়ে মুরাদনগর থানায় মামলা করেন। ঘটনার সঙ্গে জড়িত চারজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অন্য আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে বলেও জানিয়েছেন পুলিশ সুপার।
প্রেস ব্রিফিংয়ে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবদুল্লাহ আল মামুন, সাখাওয়াৎ হোসেন ও জাহাঙ্গীর আলম, ডিআইও-১ মাহবুব মোরশেদ ও মুরাদনগর থানা পুলিশের ওসি এ কে এম মনজুর আলম।
বাংলা৭১নিউজ/পিআর