বাংলা৭১নিউজ, ঢাকা: জ্বালানি তেল বাজারজাতে বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশনের (বিএসটিআই) সনদ বাধ্যতামূলক হলেও তা নিচ্ছে না প্রতিষ্ঠানগুলো। উল্টো মানহীন ও ভেজাল জ্বালানি তেল বিক্রি হচ্ছে ফিলিং স্টেশনগুলোয়।
এ অভিযোগে এরই মধ্যে বেশ কয়েকটি ফিলিং স্টেশনের বিরুদ্ধে ঢাকার সিএমএম আদালতে মামলা করেছে পণ্যের মান নিয়ন্ত্রণকারী প্রতিষ্ঠান বিএসটিআই।
বিএসটিআই কর্মকর্তারা জানান, জ্বালানি তেল ব্যবসায় ওজনে কম দেয়ার অভিযোগ দীর্ঘদিনের। কিন্তু এবার জ্বালানি তেল পরীক্ষা করে তাতে ভেজাল পাওয়া গেছে। ডিজেলের বিশুদ্ধতার গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশক হলো এর সিটেন নাম্বার বা দাহ্যতার সময়। জাতীয় মান অনুযায়ী ডিজেলে সিটেন নাম্বার থাকার কথা সর্বোচ্চ ৪৫। অথচ সংগৃহীত নমুনা পরীক্ষা করে পাওয়া গেছে ৫২ দশমিক ২০।
শুধু সিটেন নাম্বার নয়, ডিজেলের ১৪টি প্যারামিটার পরীক্ষা করে ১১টিতেই অসামঞ্জস্যতা পাওয়া গেছে। একইভাবে পেট্রলের সর্বোচ্চ বয়েলিং পয়েন্ট ২১০ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড। কিন্তু পরীক্ষা করে পাওয়া গেছে ২৪৮ দশমিক ৭০ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড। পরীক্ষায় পেট্রলের ১৪টি প্যারামিটারের মধ্যে সাতটিতে ত্রুটি পাওয়া গেছে। এছাড়া অকটেনের মোট ১৩টি প্যারামিটার পরীক্ষা করে সাতটিতেই নেতিবাচক ফল পাওয়া গেছে।
বিএসটিআই সূত্রে জানা গেছে, জ্বালানি তেলের মান খারাপ পাওয়ায় ১৯৮৫ সালের বিএসটিআইয়ের অর্ডিন্যান্স ও সংশোধনী আইন, ২০০৩-এর ২৪ ধারা অনুযায়ী ১৫টি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে রাজধানীর শাহবাগের ১৭/১ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউর মেসার্স মেঘনা মডেল সার্ভিস সেন্টার, শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ সরণির মেসার্স শিকদার ফিলিং অ্যান্ড সার্ভিস সেন্টার, মাদারীপুর জেলার মেসার্স হাজি হাসমত ফিলিং স্টেশন, বাগেরহাটের মেসার্স জিএম ব্রাদার্স ফিলিং স্টেশন, রাজশাহীর মেসার্স সুমী ফিলিং স্টেশন, মেসার্স লতা ফিলিং স্টেশন ও বরিশালের ইসরাইল তালুকদার ফিলিং স্টেশন।
বিএসটিআই সূত্রে জানা গেছে, অকটেন, পেট্রল ও ডিজেল তিনটি জ্বালানি পণ্যই বিএসটিআইয়ের বাধ্যতামূলক পণ্য। কিন্তু বিদ্যুত্, জ্বালানি ও খনিজ মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি) পণ্য তিনটির লাইসেন্স নিচ্ছে না। এছাড়া বেসরকারি ১৩টি প্রতিষ্ঠানও মান সনদ গ্রহণ করছে না। মান ছাড়াই জ্বালানি তেল বিক্রি করছে তারা।
জানতে চাইলে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের পরিচালক (বিপণন) মীর আলী রেজা বলেন, জ্বালানি তেলের মান সনদ কারা নেবে সেটি পরিষ্কার নয়। এছাড়া জাতীয় মান অনুযায়ী অকটেন ও পেট্রলে যে নম্বর রয়েছে, সেটিও অন্তর্জাতিক মানে তৈরি করা হয়নি। তবে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের মান সনদ নেয়া উচিত।
সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে বিএসটিআইয়ের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা বলেন, জ্বালানি তেলের মান সনদ নেয়ার ব্যাপারে বিদ্যুত্, জ্বালানি ও খনিজ মন্ত্রণালয় এবং বিপিসিকে চিঠি দেয়া হয়েছে। পাশাপাশি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোকেও চিঠি দেয়া হয়েছে।
বাংলা৭১নিউজ/এসএইচবি