বাংলা৭১নিউজ ডেস্ক: চতুর্থ ফাইনালে এসেও গল্পটা বদলাল না। ফাইনালের জুজুটা কাটাতে হলো না এবারও। দুর্দান্ত প্রতাপে টুর্নামেন্ট শুরু করে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিনেই নিজেদের হারিয়ে ফেলল বাংলাদেশ। ২২২ রানের লক্ষ্যকে পাহাড় বানিয়ে গুটিয়ে গেল ১৪২ রানে। ৭৯ রানের হারে শেষ হলো বাংলাদেশের ত্রিদেশীয় সিরিজ।
ক্রিকেট খেলাটা খুবই নিষ্ঠুর, অমানবিক। না হলে আজ মাহমুদউল্লাহর নামের পাশে পরাজিত শব্দটা মানায় না। বাংলাদেশ হয়তো হেরেছে, কিন্তু সে দলে মাহমুদউল্লাহকে রাখা যাচ্ছে না। অন্তত এমন এক ইনিংসের পর নয়। অথচ তাঁর আউটের সঙ্গেই হয়ে গেল আরেকটি রেকর্ড। ৪২তম ওভারের প্রথম বলে মিড অফে ক্যাচ দিয়েছেন মাহমুদউল্লাহ। আর সে সঙ্গে হ্যাটট্রিক হয়ে গেল শেহান মাদুশঙ্কার। মাত্র তৃতীয় বোলার হিসেবে ওয়ানডে অভিষেকে হ্যাটট্রিক হলো তাঁর।
বাংলাদেশ দল হেরেছে সেটা জানতে ৪২তম ওভার পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়েছে। তবে মাহমুদউল্লাহর ৭৬ রানের ইনিংসটি না থাকলে কে জানে আরেকটি ২৪ ওভারের লজ্জাও জুটে যেতে পারত। উইকেট ব্যাটিং সহায়ক নয়, এখানে ধরে খেলতে হয়। সেটা করতে গিয়ে সবাই এমনই ব্যাটিং করলেন, দলের সঙ্গে কোনো ব্যাটিং কোচ থেকে থাকলে তিনি আজ লজ্জায় স্বেচ্ছা অবসর নিয়ে নিতে পারেন। এমনই দায়িত্বজ্ঞানহীন ব্যাটিং করেছেন বাকি ব্যাটসম্যানরা। মাহমুদউল্লাহর ৭৬ এর পর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২২ রান মুশফিকুর রহিমের। তৃতীয় সর্বোচ্চ এসেছে অতিরিক্ত থেকে (১১)!
মোহাম্মদ মিঠুনের ফাইনালে অন্তর্ভুক্তি চমকে দিয়েছিল সবাইকে। এনামুল হকের বাজে ফর্মের কারণে পাওয়া সুযোগটা কাজে লাগাতে পারেননি এই ওপেনার। ২৭ বলে ১০ রান করেই আউট হয়ে গেছেন। এর আগে তামিম ইকবালও ১৮ বলে ৩ রান করে ফিরে গেছেন মহাগুরুত্বপূর্ণ এই ম্যাচে। ফিল্ডিংয়ে সাকিব চোট পাওয়ায় আজ ব্যাটিংয়ে ১০ জন নিয়ে খেলছে বাংলাদেশ। সেদিনই টপ অর্ডারের এমন দায়িত্বজ্ঞানহীন ব্যাটিং।
প্রথম ওভারে কোনো রান আসেনি। ৪ ওভার শেষেও বাংলাদেশের স্কোর ছিল বিনা উইকেটে ৫ রান। পঞ্চম ওভারের দ্বিতীয় বলে সুরঙ্গা লাকমলের বলে মারা মিঠুনের ছক্কায় মনে হচ্ছিল অবস্থা স্বাভাবিক হচ্ছে। কিন্তু ষষ্ঠ ওভারে সে হিসেব চুকাল। দ্বিতীয় বলে একবার জীবন ফিরে পেয়েও পরের বলেই শর্ট বলে ক্যাচ তুলে আউট তামিম। মাঝে দুই ওভারের বিরতি দিয়ে মিঠুন আউট হলেন। বলা ভালো আত্মহত্যা করলেন। মিড অফে বল ঠেলে দিয়ে দৌড় দিয়েছিলেন। থিসারা পেরেরার থ্রোতে ১০ রানেই প্রত্যাবর্তন পর্ব শেষ হলো তাঁর।
সাব্বির তাঁকে অনুসরণ করলেন পরের ওভারেই। অবশ্য আউটের ধরন বিবেচনা করলে তামিমের অনুসরণ। দুষ্মন্ত চামিরার শর্ট বলে ভুল টাইমিং। মিড অনে ক্যাচ দিয়ে বিদায় নিলেন সাকিবের বদলে তিনে নামা সাব্বির। এর পর মাহমুদউল্লাহকে নিয়ে ইনিংস গড়ার দায়িত্ব নিয়েছিলেন মুশফিক। কিন্তু ৫৮ রানের জুটি গড়ে আকিলা দনঞ্জয়ার বলে সুইপ করতে গিয়ে আউট হয়েছেন ২২ রানে। দনঞ্জয়ার বলেই আউট হয়েছেন মেহেদী হাসান মিরাজ।
আশা যাওয়ার মিছিল আর থামেনি। একদিকে মাহমুদউল্লাহ চার-ছয় মারছেন (৬ চার ও ৩ ছক্কা), অন্যদিকে সবাই ড্রেসিংরুমে ফেরার খেলায় নেমেছেন। ১৫ রানে শেষ ৪ উইকেট হারিয়ে শেষ হিসাবটাও চুকানো হলো।
বাংলা৭১নিউজ/সিএইস