বাংলা৭১নিউজ, ডেস্ক: সিরিয়ায় ২০১১ থেকে ২০১৫- এই পাঁচ বছরে সরকারি হেফাজতে প্রায় ১৮ হাজার বন্দির মৃত্যু হয়েছে। এ ছাড়া কারাবন্দিদের পেটানো ও ধর্ষণের মতো নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে।
আজ যুক্তরাজ্যভিত্তিক আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল এ তথ্য জানিয়েছে।
অ্যামনেস্টি জানিয়েছে, তারা ৬৫ জন নির্যাতিতের সাক্ষাৎকারসহ একটি প্রতিবেদন তৈরি করেছে, যেখানে কারাবন্দিদের নির্যাতনের এ তথ্য উঠে এসেছে। ওই ৬৫ নির্যাতিত ব্যক্তি কারাগারগুলোতে নির্যাতন ও অবমূল্যায়নের লোমহর্ষক বর্ণনা দিয়েছেন।
এ নির্যাতন বন্ধের জন্য দামেস্ককে চাপ দেওয়ার জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে অ্যামনেস্টি।
‘ইট ব্রেকস দ্য হিউম্যান’ : টর্চার, ডিজিজ অ্যান্ড ডেথ ইন সিরিয়া’স প্রিজনস নামের অ্যামনেস্টির ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১১ সালের মার্চে প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের বিরুদ্ধে গণ-অভ্যুত্থান শুরু হওয়ার পর থেকে ২০১৫ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত সিরিয়ার কারাগারে ১৭ হাজার ৭২৩ জনের বেশি লোক মারা গেছে। সে হিসাবে, প্রতিদিন প্রায় ১০ জনের মতো এবং মাসে ৩০০ এর বেশি লোক মারা গেছে।
বন্দিদের কারাগারে পৌঁছানোর পর থেকেই প্রচণ্ড মারধরের শিকার হতে হয় এবং এই নির্যাতন সিরিয়ার কারাগারগুলোতে ‘ওয়েলকাম পার্টি’ নামে পরিচিত।
কারাগারগুলোতে ‘নিরাপত্তা তল্লাশির’ নামে পুরুষ গার্ডরা নারী বন্দিদের ধর্ষণ ও যৌন নির্যাতন করে বলে জানায় অ্যামনেস্টি।
সামির নামের প্রাক্তন এক কারাবন্দি অ্যামনেস্টিকে বলেন, ‘আমাদের সঙ্গে পশুর মতো আচরণ করা হতো। তারা চাইত, আমাদের সঙ্গে যতটা সম্ভব অমানবিক আচরণ করতে। আমি রক্ত দেখেছি, নদীর মতো…আমি কখনোই ভাবতে পারিনি মনুষ্যত্ব এতটা নিচে নামতে পারে। যখন-তখন কারাবন্দিদের হত্যা করতে তাদের (কারারক্ষী) কোনো সমস্যাই ছিল না।’
জিয়াদ নামের আরেকজন বলেন, ‘তারা (কারারক্ষী) হত্যার পর মৃত ব্যক্তিদের লাথি মেরে দেখত, তাদের দেহে প্রাণ আছি কি না।’
অ্যামনেস্টি ও অন্যান্য মানবাধিকার সংগঠনগুলো জানিয়েছে, সিরিয়ায় কারাবন্দি নির্যাতনের এই ঘটনা বিশ্বসম্প্রদায়ের গুরুত্বসহকারে দেখা উচিত। বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার, কারণ এ দেশ দুটি সিরিয়ায় শান্তি আলোচনায় নেতৃত্ব দিচ্ছে।
তথ্যসূত্র : বিবিসি
বাংলা৭১নিউজ/সিএইস