বাংলা৭১নিউজ,ঢাকা: আটত্রিশতম বিসিএসের বিজ্ঞপ্তি আগামী দুই মাসের মধ্যেই হচ্ছে বলে জানিয়েছেন পিএসসি চেয়ারম্যান, এবার থেকেই পরীক্ষায় বাংলার পাশাপাশি ইংরেজিতে প্রশ্ন প্রণয়ন করা হচ্ছে। এর মাধ্যমে দ্বৈত ভাষায় পরীক্ষা পদ্ধতিতে ফিরছে সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি), যে পরিকল্পনার কথা রাষ্ট্রপতিকে জানিয়ে এসেছিল সাংবিধানিক সংস্থাটি।
পিএসসি চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাদিক বলেন, “মাস-দুয়েকের মধ্যেই ৩৮তম বিসিএস এর বিজ্ঞপ্তি জারি করা হতে পারে। এতে ইংরেজিতে আগ্রহীরাও প্রিলিমিনারি ও লিখিত পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবে।”
বর্তমানে ৩৫তম বিসিএসে নন ক্যাডার নিয়োগ, ৩৬তম বিসিএসের মৌখিক পরীক্ষা ও ৩৭তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষা চলছে। এসব কাজের মধ্যেই ‘রোডম্যাপ’ ধরে ৩৮তম বিসিএস নিয়ে কাজ চলছে পিএসসিতে।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা বলেন, “কত সংখ্যক পদে ৩৮তম বিসিএস এর বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হবে, তা মন্ত্রণালয় অনুমোদন করেছে; সার্কুলার জারির বিষয়টি পিএসসির।”
তবে আসন্ন বিসিএস সাধারণ ক্যাডারের জন্য হবে, কোনো বিশেষ বিসিএস হবে না।
মোহাম্মদ সাদিক বলেন, “যত দ্রুত সম্ভব ৩৮তম বিসিএসের সার্কুলার করার চেষ্টা করব আমরা। সেক্ষেত্রে বাংলার পাশাপাশি ইংরেজিতে যাতে আগ্রহীরা অংশ নিতে পারে তার কাজ শেষ করার প্রক্রিয়া নেব।”
গত ১০ বছর শুধু বাংলায় প্রশ্ন প্রণয়ন করে আসছিল পিএসসি। এর আগে ইংরেজিতে প্রশ্ন প্রণয়ন ও উত্তর দেওয়ার বিধান ছিল। কিন্তু ইংরেজি মাধ্যমের খাতা পরীক্ষণ, যাচাই ও দক্ষ জনবলের অভাবসহ নানা জটিলতায় তাতে ছেদ পড়ে।
পিএসসি চেয়ারম্যান সাদিক বলেন, “বাংলার পাশাপাশি ইংরেজিতে প্রশ্নোত্তর হলে ইংরেজি মাধ্যমের প্রার্থীদের জন্য একটা সুযোগ সৃষ্টি হবে। আগেও তা চালু ছিল; এখন দ্বৈত পদ্ধতিতে ফিরে যাচ্ছি।”
যুগোপযোগী ও মানসম্মত কারিকুলাম প্রস্তুত করার জন্য পিএসসি সদস্যদের নিয়ে উচ্চ পর্যায়ের একটি কমিটি করেছে কমিশন। শিগগির ওই কমিটি চেয়ারম্যানের কাছে প্রতিবেদন জমা দিতে পারে।
পিএসসি কর্মকর্তারা বলছেন, বিশেষজ্ঞ কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে বিসিএসের কারিকুলামে পরিবর্তন আনার প্রক্রিয়া চলছে। বিশেষ করে বাংলা-ইংরেজিতে প্রশ্ন প্রণয়ন, মৌখিক পরীক্ষার নম্বর কমানো, পিএসসিতে শিক্ষকদের খাতা দেখার ব্যবস্থা করা, প্রযুক্তিনির্ভর পরীক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক প্রশ্ন রাখাসহ বেশকিছু সুপারিশ করতে যাচ্ছে ওই কমিটি।
পিএসসির পরীক্ষায় দীর্ঘসূত্রতা কমিয়ে আনার কৌশল নিয়েও কাজ করছে সংস্থাটি।
পিএসসি চেয়ারম্যান বলেন, “আমরা ইতোমধ্যে দীর্ঘসূত্রতা কমিয়ে এনেছি। ৫ মাস ৭ দিনের মধ্যে সাড়ে ৯ হাজার নার্স বিজ্ঞপ্তি থেকে নিয়োগের ব্যবস্থা করেছি। মৌখিক পরীক্ষার বোর্ডে অন্য সদস্যদের মতো আমিও অংশ নিয়েছি। একটি রোডম্যাপের মধ্যে কাজ করছি আমরা; এর সুফলও পাচ্ছি।”
বর্তমানে সরকারি চাকরিতে নিয়োগের পরীক্ষায় প্রথমে ২০০ নম্বরের প্রিলিমিনারি (নৈব্যক্তিক) পরীক্ষায় অংশ নিতে হয়। এরপর সাধারণ ক্যাডার এবং কারিগরি, চিকিৎসা ও শিক্ষা ক্যাডারের ক্যাডারে ১১০০ নম্বরের লিখিত পরীক্ষা হয়। সর্বশেষ ২০০ নম্বরের মৌখিক পরীক্ষায় অংশ নিতে হয়।
এরপর চূড়ান্ত ফল প্রকাশ করে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানটি। এই নম্বর বণ্টন প্রক্রিয়াতেও আগামীতে বড় ধরনের পরিবর্তন আসছে।
মোহাম্মদ সাদিক বলেন, পিএসসির নানা ধরনের পরীক্ষায় সংস্কার কার্যক্রম একটি চলমান প্রক্রিয়া। হঠাৎ করেই আমূল সংস্কার আনা যাবে না। সেক্ষেত্রে উচ্চ পর্যায়ের কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে ধাপে ধাপে তা করতে হবে।
ফলাফল প্রকাশেও প্রযুক্তির ব্যবহার করা হচ্ছে বলে জানান কমিশন চেয়ারম্যান।
“ইতোমধ্যে অনলাইনে আবেদন করা যাচ্ছে। আগামীতে পিএসসির পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ করা হবে প্রযুক্তির সর্বোচ্চ ব্যবহার করে।”
প্রিলিমিনারি ও নন-ক্যাডার পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশে ‘সার্চ ইঞ্জিন’ সফটওয়ার ব্যবহার করে সফলতা পেয়েছে কমিশন। এরই ধারাবাহিকতায় ক্যাডার পরীক্ষায় আসছে ‘ক্যাডস’।
“বিসিএস পরীক্ষার চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশে ক্যাডার ডিস্ট্রিবিউশন সফটওয়ারের (ক্যাডস) পরীক্ষামূলক কাজ চালাচ্ছে পিএসসি। ক্যাডসের পাশাপাশি ম্যানুয়াল পদ্ধতিতেও ফলাফল প্রস্তুত থাকবে,” বলেন সাদিক খান।
বাংলা৭১নিউজ/এসএইচ