বাংলা৭১নিউজ,ঢাকা: আগামী ২০১৯-২০২০ অর্থবছর থেকে দুই স্তরের ভ্যাট ব্যবস্থা কার্যকর করার পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।
মন্ত্রী বলেন, ‘আগামী ২০১৯-২০২০ অর্থবছর থেকে দুইস্তরের ভ্যাট ব্যবস্থা কার্যকর করার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে সরকার। আসন্ন অর্থবছরের বাজেটে করপোরেট করহার কমানোর বিষয় বিবেচনা করা হচ্ছে।’
শনিবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলনে আয়োজিত এক প্রাক-বাজেট আলোচনায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
অর্থমন্ত্রী বলেন, দেশে তরুণ করদাতার সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পেয়েছে, যা আশাব্যঞ্জক। দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে বাংলাদেশ ইনভেস্টমেন্ট ডেভেলপমেন্ট অথিউরিটি (বিডা) ‘ওয়ান স্টপ’ সার্ভিস চালুর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। যার মাধ্যমে বিনিয়োগ প্রস্তাব জমা দেওয়ার ৭ মাসের মধ্যে বিনিয়োগ সহায়তা প্রদান করা যাবে।
তিনি বলেন, সঞ্চয়পত্রের সুদের হার বিষয়টি আগামী বাজেটে ঘোষণার পর পর্যালোচনা করা হবে।
অর্থমন্ত্রী দেশের বাণিজ্য প্রতিষ্ঠানসমূহের মধ্যে সুষম প্রতিযোগিতা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ‘কমপিটিশন অ্যাক্ট’ জরুরি বলে অভিমত দেন। ২৬টি সরকারি প্রতিষ্ঠনের শেয়ার পুঁজিবাজারে না আসতে পারার বিষয়টি অত্যন্ত হতাশার বলে তিনি উল্লেখ করেন।
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ড. এবি মির্জা মো. আজিজুল ইসলাম বাংলাদেশের অবকাঠমোখাতের উন্নয়ন কার্যক্রম আরো গতিশীল এবং উন্নয়ন কাজের গুনগতমান নিশ্চিতকরণের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
তিনি বলেন, ঢাকা-চট্টগ্রাম হাইওয়ের কাজ সম্পন্ন হওয়ার অল্পদিনের মধ্যেই তা সংষ্কারের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। যার ফলে সরকারের টাকার অপচয়ের পাশাপাশি অর্থনৈতিক উন্নতি ব্যাহত হচ্ছে।
এনবিআর চেয়ারম্যান মো. মোশাররফ হোসেন ভূইয়া বলেন, আগামী বাজেটে বেসরকারি বিনিয়োগ বাড়ানোর পাশাপাশি কৃষি, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি, অবকাঠামো খাতের উন্নয়নে অগ্রাধিকার প্রদান করা হবে।
তিনি জানান, আমদানিকৃত এলএনজির সাথে দেশীয় গ্যাসের সংমিশ্রণ করার মাধ্যমে জাতীয় গ্রিডে প্রদান করা এবং এলএনজির দাম যেন সহনীয় মাত্রায় থাকে সে বিষয়ে সরকার সচেতন রয়েছে।
উদ্বোধনী বক্তব্যে ডিসিসিআই সভাপতি আবুল কাসেম খান আগামী বাজেটে কর নীতির সহজ করার পাশাপাশি অন্যান্য নীতিমালার সংস্কার, বিদ্যমান কর হার হ্রাস, ট্যাক্স কার্ড প্রদান, ব্যবসায় ব্যয় হ্রাস, বৈদেশিক বিনিয়োগ বাড়ানো, যোগাযোগ অবকাঠামোর আধুনিকায়ন এবং নিডমা প্লাটফর্ম প্রবর্তনের আহ্বান জানান।
‘ট্যাক্সেশন এবং ভ্যাট’, ‘অবকাঠামো, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি’, ‘শিল্প, এসইজেড এবং বাণিজ্য’ এবং ‘বিনিয়োগ, ফিন্যান্সিয়াল সেক্টর এবং পুঁজিবাজার’-এ চারটি সেশনের আলোচনায় দেশের বরেণ্য ব্যবসায়ী নেতৃবন্দ এবং অর্থনীতিবিদগণ অংশগ্রহণ করেন।
এসব সেশনে এনবিআরের সাবেক চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ আব্দুল মজিদ, পিআরআইয়ের নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এএইচ মানসুর, আইসিএবির সাবেক সভাপতি আদিব এইচ হাসান, ফিকির সাবেক সভাপতি রূপালী চৌধুরী, বুয়েটের পেট্রোলিয়াম এবং খনিজ সম্পদ ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ তামিম, পিডব্লিউসি বাংলাদেশের ম্যানেজিং পার্টনার মামুন রশিদ, সিপিডির সম্মানিত ফেলো প্রফেসর ড. মোস্তাফিজুর রহমান,ওয়ার্ল্ড ব্যাংক গ্রুপের সিনিয়র ইকোনোমিস্ট ড. মাশরুর রিয়াজ, ফিকির সভাপতি শেহজাদ মুনিম প্রমুখ আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন।
বাংলা৭১নিউজ/জেড এইচ