বাংলা৭১নিউজ ডেস্ক:
২০১৬ সালের ৪ সেপ্টেম্বরের স্মৃতিই কী ফিরে আসছে কার্ডিফে? অনুপ্রাণিত হওয়ার জন্য টাটকা জয়ের স্মৃতিই ছিল পাকিস্তানিদের হাতে। সোমবার এই কার্ডিফেই শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে সেমিফাইনালে জায়গা করে নেয় পাকিস্তান। কিন্তু শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সদ্য প্রাপ্ত এই জয় নয়, অনুপ্রেরণা খুঁজে নেওয়ার জন্য পাকিস্তান অধিনায়ক ফিরে তাকান ২০১৬ সালের ৪ সেপ্টেম্বরের সেই জয়ের দিকে। কার্ডিফে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সেই একটা ম্যাচই খেলেছে পাকিস্তান। যে ম্যাচে ইংল্যান্ডের ৩০২ রান তাড়া করে ৪ উইকেটে জিতেছিল পাকিস্তান। সরফরাজের চাওয়া মতো, বুধবার কার্ডিফে সেই স্মৃতিই ফিরে আসবে কিনা এখনো নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না। তবে ইংল্যান্ড ইনিংস শেষে পাকিস্তান শিবিরে জয় স্বপ্ন ভিড় করারই কথা। কার্ডিফের প্রথম সেমিফাইনালে টস হেরে প্রথমে ব্যাট করতে নামা ইংল্যান্ড যে ৪৯.৫ ওভারে মাত্র ২১১ রানেই অল আউট!
ইতিহাসে প্রথম বারের মতো আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির আশায় পাকিস্তান মাঠে নামে বোলিং দুদুটি পরিবর্তন এনে। চোটের কারণে ছিটকে পড়েন পেসার মোহাম্মদ আমির। তার জায়গায় পাকিস্তানের ২১৪তম ক্রিকেটার হিসেবে ওয়ানডে অভিষেক হয় বাঁহাতি পেসার রুম্মন রাইসের। ফাহিম আশরাফের পরিবর্তে দলে ঢুকেন স্পিনার শাদাব খান। এই দুজনসহ পাকিস্তানের বোলাররা শুরু থেকেই দারুণ বোলিং করেছেন। গ্রুপপর্বে দুর্দান্ত ক্রিকেট খেলা স্বাগতিক ইংল্যান্ডকে ২১১ রানে বেঁধে রাখাটা সেই সাক্ষ্যই দিচ্ছে।
টস জিতে প্রথমে বোলিং নেওয়া পাকিস্তান উইকেট পেতে পারত ইনিংসের দ্বিতীয় বলেই। কিন্তু জেসন রয়ের পরিবর্তে দলে ঢোকা জনি বেয়ারস্টোর বিপক্ষে জুনাইদ খানের আবেদনে আম্পায়ার সারা দেননি। পাকিস্তান অবশ্য রিভিউ নিয়েছিল। রিপ্লেতে পরিস্কার, উইকেটে পিচ করা বলটি উড়িয়ে নিত বেয়ারস্টোর অফ স্টাম্পের বলে। কিন্তু রিভিউতে আম্পায়ারের সিদ্ধান্তই বহাল থাকে। তবে উইকেটের জন্য পাকিস্তানিদের খুব বেশি সময় অপেক্ষা করতে হয়নি। ষষ্ঠ ওভারেই অ্যালেক্স হেলসকে বাবর আজমের ক্যাচ বানিয়ে পাকিস্তানকে প্রথম ব্রেক থ্রু দেন রুম্মন রাইস। হেলস ১৩ বলে ১৩ রান করে ফিরে যাওয়ার পর বেয়ারস্টো, জো রুট, ইয়ন মরগান, বেন স্টোকসরা চেষ্টা করেছেন বড় ইনিংস খেলার। কিন্তু তাদের কারো স্বপ্নই সফল হতে দেননি পাকিস্তানি বোলাররা।
আম্পায়ারের বদান্যতায় শূন্য রানে বেঁচে যাওয়া বেয়ারস্টোকে ফিরিয়ে দিয়ে পাকিস্তানকে দ্বিতীয় ব্রেক থ্রু দেন হাসান আলি। এই হাসান আলি পরে ফিরিয়েছেন ইংল্যান্ড অধিনায়ক ইয়ন মরগানকেও। যিনি ১৯ রানে দাঁড়িয়ে পুনজীবন পেয়েছিলেন রিভিউ নিয়ে। ব্যাট হাতে নামার পরই একটা কীর্তি গড়েন মরগান। ৩ রান করতেই ইংল্যান্ডের তৃতীয় ক্রিকেটার হিসেবে ছুঁয়ে ফেলেন ওয়ানডেতে ৫ হাজার রানের মাইলফলক। এই মাইলস্টোন পেরোনোর পর পুনজীবন লাভ। তারপরও সফল হতে পারেননি ইংলিশ অধিনায়ক। ৩৩ রানে তাকে ফিরিয়ে দিয়ে দেন হাসান আলি। এরপর জস বাটলার ও মঈন আলিকে পরপর ফিরিয়ে দিয়ে ইংল্যান্ডকে রীতিমতো চেপে ধরেন জুনাইদ খান।
পাকিস্তানের সব বোলাররই দারুণ বোলিং করেছেন। তবে উইকেট প্রাপ্তির দিক থেকে এগিয়ে জুনাইদ হাসান আলি। তিনি নিয়েছেন ৩ উইকেট। এই ৩ উইকেট নিয়ে এবারের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে ৪ ম্যাচে হাসান আলির উইকেট হলো টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ ১০টি। যা চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ইতিহাসেই এক আসরে কোনো পাকিস্তানি বোলারের সর্বোচ্চ উইকেট। আগের সর্বোচ্চ ৮ উইকেট ছিল সাঈদ আজমলের। জুনাইদ ও ডেব্যুট্যান্ট রুম্মন রাইস নিয়েছেন দুটি করে উইকেট। শাদাব খান একটি। বাকি দুটি রান আউট।
লক্ষ্য মাত্র ২১২ রান। প্রতিপক্ষকে সাধ্য সীমায় গুঁড়িয়ে পাকিস্তানি বোলাররা ব্যাটসম্যানদের কাছে দায়িত্বশীল ব্যাটিং প্রত্যাশা করতেই পারে!
বাংলা৭১নিউজ/জেএস