বরিশাল মহানগরীর দুই শতাধিক বছরের পুরোনো ‘সীতা-রামের দিঘি’ বালি দিয়ে ভরাট এবং এর মালিকানা দাবির বিষয়টি তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। জেলা প্রশাসক ও পরিবেশ অধিদপ্তরের স্থানীয় পরিচালককে এ বিষয়ে তদন্ত করে সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলের কাছে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেওয়া হয়।
পাশাপাশি ওই দিঘিতে মাটি ভরাট কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, এসএ ও আরএস পর্চা ম্যাপ অনুসারে দিঘিটি আগের অবস্থায় কেন ফেরত নেওয়া হবে না এবং দিঘিটির চারপাশে পিলার দিয়ে কেন সৌন্দর্য্যবর্ধণ করে সংরক্ষণ করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন আদালত।
জনস্বার্থে দায়ের করা এক রিট আবেদনের শুনানি নিয়ে আজ সোমবার বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি মো. খায়রুল আলমের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট হাসান তারিক পলাশ। তাঁকে সহযোগিতা করেন অ্যাডভোকেট আরিফ আহমেদ।
এর আগে বরিশাল নগরীর সবচেয়ে বৃহৎ ও দুই শতাধিক বছরের প্রাচীন জলাধার বালি দিয়ে ভরে ফেলা এবং সাবেক এক ইউপি চেয়ারম্যানের মালিকানা দাবি নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়।
প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, বরিশাল নগরীর এই দিঘিটির মালিকানা দাবি করেন সাবেক এক ইউপি চেয়ারম্যান। এরই মধ্যে ট্রাকে করে বৃহৎ এই জলাধারের কিছুটা অংশ ভরাট করে ফেলা হয়েছে। এত বড় জলাধার বন্ধে স্থানীয় প্রশাসন বাধা দিলেও চুপিসারে প্রতিনিয়ত ভরে ফেলা হচ্ছে এই সম্পদ। জলাধারের কাগজপত্রে এটি ‘সীতা-রামের দিঘি, পানীয় জলের জন্য সাধারণের ব্যবহার্য’ এই কথাটি উল্লেখ থাকা সত্ত্বেও প্রতিনিয়ত বালি দিয়ে ভরে ফেলা হচ্ছে এই প্রাচীন ঐতিহ্য, প্রাকৃতিক সম্পদ।
বরিশাল নগরীর ২৯ নম্বর ওয়ার্ডের আওতাধীন কাশীপুর বাজার ছাড়িয়ে গেলে চোখে পাড়বে বৃহৎ আকারের এই দিঘিটি। স্থানীয়ভাবে দিঘিটি ‘সীতা-রামের দিঘি’ নামে সুপরিচিত। এক সময়ে চন্দ্রদ্বীপ রাজবংশের অন্তর্গত এই ২.৯৮ একরের দিঘি ছাড়াও ১.৩৯ একর জায়গায় স্থাপিত হয়েছে ইউনিয়ন ভূমি আফিস, যা একটি বৃহদাকার ভবন নিয়ে গঠিত।
পরে এসব প্রতিবেদন সংযুক্ত করে বরিশালের বিভাগীয় পরিবেশ ও মানবাধিকারবিষয়ক সংগঠন নাগরিক অধিকারের পক্ষে অ্যাডভোকেট সাইমুল ইসলাম রাব্বী গত ৬ জুন দিঘি ভরাট রোধে সংশ্লিষ্টদের একটি আইনি নোটিশ পাঠান। কিন্তু সে নোটিশের জবাব না পাওয়ায় গত ১৫ সেপ্টেম্বর হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় জনস্বার্থে রিটটি দায়ের করা হয়।
বাংলা৭১নিউজ/এআর