বাংলা৭১নিউজ, রংপুর: সারাদেশের মতো কাঁচা মরিচের দাম বেশ চড়া রংপুরের বদরগঞ্জের বাজার গুলোতেও। বদরগঞ্জের বিভিন্ন এলাকার খুচরা বাজারগুলোতে কাঁচা মরিচের দাম দুইশ টাকা ছাড়িয়েছে অনেক আগেই।
সরেজমিনে দেখা যায়, বড় সাইজের ২০টি মরিচ ২০ টাকায় বিক্রি করছেন বদরগঞ্জ সদর উপজেলার এক দোকানি। অর্থাৎ প্রতিটি মরিচের দাম পড়ছে ১ টাকা। কাঁচা মরিচের এমন আকাশছোঁয়া দামে অস্বস্তি নেমেছে বদরগঞ্জের ক্রেতাদের মাঝে। অন্যদিকে ভালো দাম পাওয়ায় ফুরফুরে মেজাজে রয়েছেন স্থানীয় কৃষকরা। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত অনেক কৃষক মরিচ চাষ করে ক্ষতি অনেকটাই পুষিয়ে নিয়েছেন।
বদরগঞ্জ উপজেলায় বিভিন্ন বাজার ও কৃষকদের মরিচ ক্ষেত ঘুরে জানা যায়, উঁচু জমিগুলোর যেখানে সচরাচর পানি জমে না সেসব জমিতে মরিচ চাষ করেছেন কৃষকরা। আর জেলার প্রায় সব নিচু জমির মরিচ গাছ পানিতে তলিয়ে নষ্ট হয়ে গেছে। যারা উঁচু জমিতে মরিচের চাষ করেছেন তারা চড়া দাম পেয়ে বন্যায় ক্ষতি অনেকটাই কাটিয়ে উঠতে সক্ষম হচ্ছেন।
বদরগঞ্জ উপজেলার রামনাথপুর ইউনিয়নের ঝাকুয়াপাড়া গ্রামের মরিচ চাষি বদন আলী জানান, আমি তিন বিঘা জমিতে মরিচ চাষ করেছিলাম। বন্যায় দুই বিঘা জমির মরিচ গাছ সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বাকি এক বিঘা জমি উঁচু স্থানে থাকায় সেই জমির মরিচ গাছগুলো ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা পায়। বর্তমানে সেই জমির মরিচ বিক্রি করে আমার সংসার চলছে। অন্যদিকে সাম্প্রতি বন্যায় নিজের ক্ষতিও কাটিয়ে ওঠা সম্বব হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, পাইকারি বাজারে প্রতি কেজি মরিচ দেড়শ টাকা দরে বিক্রি করছি। খুচরা বাজারে মরিচ দুইশ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
একই গ্রামের মরিচ চাষি এমারুল হক বলেন, বদরগঞ্জের ৮০ ভাগ মাটি পলি ও উর্বর দো-আঁশ হওয়ায় মরিচ চাষ এখানে ভালো হয়। আমি এ বছর তিনবিঘা জমিতে মরিচ চাষ করেছি। বন্যায় বেশির ভাই জমির কাঁচা মরিচ নষ্ট হয়ে গেছে। মরিচের দাম বেশি হওয়ার কারণে বাকি ১০ কাঠা জমির মরিচ বিক্রি করেই ক্ষতি অনেকটা কাটিয়ে উঠতে পেরেছি।
বদরগঞ্জ বাজারের কাঁচামাল ব্যবসায়ী শাহিন মিয়া বলেন, গত কয়েকদিন ধরে কাঁচা মরিচ প্রতি কেজি দুইশ টাকায় বিক্রি করছি। বিক্রেতাদের মুখে স্বস্তির কথা শোনা গেলেও বিরক্তি প্রকাশ পেলো ক্রেতাদের চোখে-মুখে।
উপজেলার সদরে বাজার করতে আসা বদরগঞ্জের স্থায়ী বাসিন্দা ফজলে রাব্বি বলেন, যে হারে মরিচের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে তাতে ১টি মরিচ ১ টাকা দরে কিনতে হচ্ছে। এভাবে দাম বৃদ্ধি পেলে আমাদের মত নিম্ন ও মধ্যবিত্ত পরিবারের জন্য মরিচ ক্রয় কষ্টকর হয়ে দাঁড়াবে। একইভাবে এ বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন, উপজেলার বাসিন্দা মনিকা ইয়াসমিন।
বদরগঞ্জ উপজেলা উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা কনক চন্দ্র রায় বলেন, বদরগঞ্জ উপজেলায় বন্যার কারণে সবজি ক্ষেত নষ্ট হয়ে গিয়েছিল। যার প্রভাব পড়েছে কাঁচা বাজারে। তবে কাঁচা মরিচে এর প্রভাব অনেকটাই বেশী। কাঁচা সবজির যোগান ও উৎপাদন বৃদ্ধি পেলে খুব শীঘ্রই সবজির সাথে সাথে কাঁচা মরিচের দামও নিয়ন্ত্রণে আসবে।
বাংলা৭১নিউজ/সিএইস