২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষা আগামীকাল শুক্রবার অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।
শুক্রবার (৯ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১০টা থেকে একযোগে ৯টি কেন্দ্রের ৪৪টি ভেন্যুতে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। এক ঘণ্টার এ পরীক্ষা চলবে সকাল ১১ টা পর্যন্ত।
বৃহস্পতিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) সকালে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে ভর্তি পরীক্ষা পূর্ববর্তী সংবাদ সম্মেলনে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যান মন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন এসব তথ্য দেন।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশে ৩৭টি সরকারি মেডিকেল কলেজ রয়েছে যার মোট আসন ৫ হাজার ৩৮০টি। এছাড়াও বেসরকারি পর্যায়ে অনুমোদিত ৬৭ টি মেডিকেল কলেজ রয়েছে যার মোট আসন ৬ হাজার ২৯৫ টি।
প্রশ্ন ফাঁস বন্ধে ডিজিটালাইজেশন ব্যবস্থা
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, স্বচ্ছতা আনয়ন, শিক্ষার্থীদের হয়রানি ও অনিয়ম বন্ধ এবং মেধাবী শিক্ষার্থীদের ভর্তি নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে ভর্তি প্রক্রিয়ায় ডিজিটালাইজেশন কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে। সরকারি মেডিকেল কলেজে বিগত কয়েক বছর অনলাইনে ভর্তি প্রক্রিয়া সম্পন্নকরণ এবং ডিজিটালাইজেশনের ফলে প্রশ্নপত্র ফাঁস বন্ধ হয়েছে এবং একটি স্বচ্ছ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ভর্তি কার্যক্রম সম্পন্ন করা সম্ভব হয়েছে।
তিনি জানান, এর আগে অনিয়ম রোধ এবং শিক্ষার্থীদের থেকে অতিরিক্ত অর্থ আদায় বন্ধের লক্ষ্যে ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষে বেসরকারি মেডিকেল কলেজের ভর্তি প্রক্রিয়ায় ডিজিটালাইজেশনের কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়। এ প্রক্রিয়ায় ডিজিটালাইজেশনের মাধ্যমে অনলাইন প্রক্রিয়ায় শুরু হওয়ায় শিক্ষার্থীদের হয়রানি, অনিয়ম ও অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের পথ বন্ধ হয়েছে এবং মেধাবী শিক্ষার্থীদের ভর্তি নিশ্চিতের সুযোগ সৃষ্টি হওয়ায় বিষয়টি জনগণের মধ্যে ব্যাপকভাবে সমাদৃত হয়েছে। প্রশ্নপত্র বহনকারী ট্রাঙ্কে একটি ইলেক্ট্রনিক ডিভাইস রয়েছে যার মাধ্যমে অধিদপ্তর থেকে পরীক্ষা কেন্দ্রে আনা নেওয়া কার্যক্রম মনিটরিং করা হয়।
ভর্তি পরীক্ষায় শিক্ষার্থী ও দায়িত্বরতদের জন্য নির্দেশনা
স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানান, ভর্তি পরীক্ষার দিন সকাল ৮ টায় হলের গেট খুলবে। এদিন সকাল সাড়ে ৯ টার পর কোন পরীক্ষার্থী হলে প্রবেশ করতে পারবেন না। পরিক্ষার্থীরা প্রবেশপত্রের রঙিন প্রিন্ট কপি নিয়ে আসবেন।
কেন্দ্রে পরীক্ষার্থীদের (ছেলে ও মেয়ে) পৃথক পৃথক তল্লাশির ব্যবস্থা থাকবে। পরীক্ষার্থীরা প্রবেশপত্র ও বল পয়েন্ট কলম ছাড়া অন্য কোনো ইলেকট্রনিক ডিভাইস নিয়ে যাতে প্রবেশ করতে না পারে সেজন্য মেটাল ডিটেক্টরের পাশাপাশি আর্চওয়ে দিয়ে শিক্ষার্থীদের প্রবেশের বিষয়টি তদারকি করা হবে।
ভর্তি পরীক্ষার কেন্দ্রে সকাল ৮ টা থেকে শিক্ষার্থীরা প্রবেশ করতে ইনভিজিলেটরগণ (কক্ষ পরিদর্শক) সকাল ৮ টা থেকে পরীক্ষার দায়িত্বপ্রাপ্ত কক্ষে অবস্থান করে প্রবেশপত্রে পরীক্ষার্থীর ছবির জলছাপ ও রঙিন ছবির সঙ্গে পরীক্ষার্থীর চেহারা মিলিয়ে পরীক্ষা কক্ষে প্রবেশের অনুমতি দেবেন। দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা কেন্দ্রে উপস্থিত থেকে বিষয়টি নিশ্চিত করবেন।
পরীক্ষার্থী, ইনভিজিলেটর ও ভেন্যুর কর্মকর্তা-কর্মচারীরা, মন্ত্রণালয়/অধিদপ্তরের কর্মকর্তাগণ কোনোভাবেই মোবাইল, ইলেকট্রনিক ডিভাইস, ব্লুটুথ, এয়ারফোন, ইত্যাদি বহন করবেন না। ভর্তি পরীক্ষার হলে ভর্তি পরীক্ষা সংশ্লিষ্ট কাজের সঙ্গে জড়িত কেউ মোবাইল নিয়ে প্রবেশ করতে পারবে না। ভর্তি পরীক্ষার কেন্দ্র বা ভেন্যুতে ভর্তি পরীক্ষা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গ ছাড়া অন্য কোনো ব্যক্তি প্রবেশ করতে পারবে না।
ভর্তি পরীক্ষা স্বচ্ছ রাখতে যেসব ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে
ডা. সামন্ত লাল সেন বলেন, ১০ জানুয়ারি ২০২৪ থেকে জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় মোবাইল কোর্ট পরিচালনার মাধ্যমে মেডিকেল ভর্তি কোচিংয়ের সেন্টারসমূহ বন্ধ করা হয়েছে। এছাড়াও অনলাইন কোচিং বন্ধ ও সাইবার অপরাধ রোধকল্পে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এবং গোয়েন্দা সংস্থাসমূহের তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে।
পরীক্ষার দিন কেন্দ্রসমূহের আশপাশের ফটোকপি মেশিন বন্ধ থাকবে। পরীক্ষার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট যেকোনো প্রকার অসদাচরন/প্রতারনা/গুজব ছড়ানোর সঙ্গে জড়িত কাউকে চিহ্নিত করা গেলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
বাংলা৭১নিউজ/এসএইচ