বাংলা৭১নিউজ,ঢাকা : জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস’ উপলক্ষে পূর্বঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে ১৩ নভেম্বর রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করার ঘোষণা দিয়েছে বিএনপি।
মঙ্গলবার দুপুরে নয়াপল্টন কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এ ঘোষণা দেন।
এরআগে ৭ নভেম্বর উপলক্ষ্যে রাজধানীর সোহওয়ার্দী উদ্যানে দু’দফায় অনুমতি চেয়েও তা মেলেনি। পরে ৮ নভেম্বর নয়াপল্টনে কার্যালয়ের সামনে অনুমতি চেয়ে তাও পায়নি।
এ বিষয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, বিএনপিকে গণতান্ত্রিক অধিকার পালন করতে না দেয়া সংবিধান লংঘনের শামিল।
সরকারের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘আমরা আবারও বলছি, গণতান্ত্রিক স্বাভাবিক কর্মসূচি পালন করতে দিন।সাংবিধান লংঘন করবেন না। আমাদের ১৩ নভেম্বর সমাবেশ করার অনুমতি দিন। গণতন্ত্রকে তার নিজস্ব ধারায় চলতে দিন।’
১৩ তারিখের কর্মসূচির জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে অনুমতি চাওয়া হবে বলেও জানান মির্জা ফখরুল।
বিএনপিকে সমাবেশ করতে না দেয়া প্রসঙ্গে বিএনপির এ নেতা বলেন, ‘আপনারা কার্যালয়ের চিত্র ইতিমধ্যে দেখেছেন। মনে হচ্ছে, একটি যুদ্ধক্ষেত্র তৈরি করা হয়েছে। যেমন করা হয়েছিল, ২০১৩, ২০১৪ ও ২০১৫ সালে। ওই সময় দলীয় কার্যালয়কে কারাগারে পরিণত করা হয়েছিল। আমাদের নেতা রুহুল কবির রিজভীকে বন্দি করা হয়েছিল। এখনও দেখে তাই মনে হচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা একটি রাজনৈতিক দল। সভা-সমাবেশ করা আমাদের গণতান্ত্রিক এবং সাংবিধানিক অধিকার। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক হচ্ছে, আওয়ামী লীগ গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে না। তারা আবারও দমন-পীড়ন করে সেই পুরনো একদলীয় বাকশালী শাসন ফিরিয়ে আনতে চাইছে ভিন্নভাবে।’
বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘আমরা বর্তমানে এই অনির্বাচিত এবং অগণতান্ত্রিক সংসদে নেই। স্বভাবতই জনমতকে সুসংগঠিত করতে আমরা সমাবেশ করার জন্য বারবার অনুমতি চাইব। সরকারকে বলব, গণতন্ত্রকে সুস্থধারায় চলতে দিন। তাহলে দেশের রাজনৈতিক ও সামাজিক সংকটের সমাধান হবে। এভাবে সভা-সমাবেশে বাধা দিয়ে দেশের সংকট নিরসন হবে না।’
তিনি বলেন, ‘সকল রাজনৈতিক দলের আলাপ-আলোচনার মাধ্যমেই কেবল রাজনৈতিক সংকটের নিরসন সম্ভব। এমতাবস্থায় সংলাপের কোনো বিকল্প নেই।’
আবারও সমাবেশের অনুমতি না পেলে বিএনপির করণীয় সম্পর্কে জানতে চাইলে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা অনমুতি চাইতেই থাকব। আমরা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করি। যদি অনুমতি না পাই তাহলে কর্মসূচির কথা পরে জানাব।’
সড়কে সমাবেশ নিষিদ্ধ ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের এমন নির্দেশনা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘সড়কে যদি সমাবেশ নিষিদ্ধ করা হয় তাহলে গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দলগুলো কোথায় যাবে? আসলে সরকার একদলীয় শাসন ফিরিয়ে আনতে চাইছে ভিন্ন মোড়কে।’
মির্জা ফখরুল বলেন, আওয়ামী লীগ নিজেরা সোহরাওয়ার্দীতে সমাবেশ করল। ঢাকা শহরের বিভিন্ন এলাকায় আলোকসজ্জা করল। আর আমরা করতে চাইছি, দেয়া হচ্ছে না। এটা তো হতে পারে না।
সংখ্যালঘু নির্যাতনের ব্যাপারে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘এই সরকারের চরিত্রই হল নিজেদের ক্ষমতাকে পোক্ত করতে অন্যের ওপর দমন-নিপীড়ন চালানো। ইতিমধ্যে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ঘটনার পর দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আমাদের বেশকিছু নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে।’
দেশের বর্তমান শাসনব্যবস্থাকে ‘ফ্যাসিবাদী’ মন্তব্য করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘এই সরকার মিথ্যা মামলাকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করে আসছে। তারা অসংখ্য মিথ্যা মামলা দিয়েছে। আমাদের নেত্রী খালেদা জিয়ার নামেও তারা মিথ্যা মামলা দিয়েছে।’
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান হাবিব, মো. আব্দুস সালাম, আতাউর রহমান ঢালী, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, সহসাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ, শহিদুল ইসলাম বাবুল প্রমুখ।
বাংলা৭১নিউজ/এম