এগারো দাবি নিয়ে সময় বেঁধে দিয়ে কর্মবিরতির হুঁশিয়ারি দিয়েছেন প্রাইম মুভার মালিকরা। আগামী ১০ ফেব্রুয়ারি থেকে ৪৮ ঘণ্টা কর্মবিরতির হুঁশিয়ারি দিয়েছে চট্টগ্রাম প্রাইম মুভার ও ফ্ল্যাটবেড ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন।
সোমবার (২৭ জানুয়ারি) চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের এস রহমান হলে সংবাদ সম্মেলনে এ হুঁশিয়ারি দেন তারা। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সংগঠনটির সভাপতি মো. আবু ছালেহ জুয়েল।
তিনি বলেন, ‘দেশের পণ্য পরিবহনের ৮৫ শতাংশ সড়ক ও মহাসড়ক দিয়ে হয়। এরমধ্যে চট্টগ্রাম বন্দরসহ দেশের বিভিন্ন বন্দরের ৯৫ ভাগ কার্যক্রম আমাদের এই প্রাইম মুভার ট্রেইলার, ফ্ল্যাটবেড, লো-বেড ও সেমি লো-বেড গাড়ির মাধ্যমে পরিচালিত হয়।
করোনা মহামারি, প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও রাজনৈতিক বিশৃঙ্খলার মতো বিভিন্ন প্রতিকূলতা উপেক্ষা করে ২৪ ঘণ্টা সার্ভিস দিয়ে দেশ, জনগণ ও সরকারের পাশে দাঁড়াতে আমরা এক মুহূর্তে পিছপা হইনি। কিন্তু আমরা বরাবরের মতোই সরকারের কাছ থেকে বঞ্চনা, অবহেলা, অন্যায়-অবিচারের শিকার।’
তিনি আরও বলেন, ‘তাই আমরা আগামী ৯ ফেব্রুয়ারির মধ্যে আমাদের ১১ দফা দাবি পূরণের জন্য আন্তরিকভাবে অনুরোধ জানাচ্ছি। অন্যথায় ১০ ফেব্রুয়ারি সকাল ৬টা থেকে ৪৮ ঘণ্টার কর্মবিরতি ঘোষণা করতে বাধ্য হব।’
এ সময় চট্টগ্রাম প্রাইম মুভার ও ফ্লাটবেড ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ হোসেন ১১ দফা দাবি উপস্থাপন করেন। দাবিগুলো হলো— উচ্চবিলাসী ও গণবিরোধী সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮ বাতিল করতে হবে নতুবা মাত্রাতিরিক্ত জরিমানা বিধান রাখায় দুর্নীতির সুযোগ থাকার পরিপ্রেক্ষিতে সাংঘর্ষিক ধারা ও উপধারাগুলো সংশোধন করতে হবে।
প্রাইম মুভার ট্রেইলার ও ফ্ল্যাটবেড গাড়ির ওজন ও মাইলের ভিত্তিতে ভাড়া নির্ধারণ করে সরকারি নীতিমালা প্রণয়ন করতে হবে। পূর্বের রেজিস্ট্রেশনকৃত প্রাইম মুভার ট্রেইলার বিআরটিএ কর্তৃক একই রেজিস্ট্রেশনের আওতায় আনতে হবে এবং কন্টেইনারবাহী ২০ ফুট গাড়ির ফ্লাটবেড নামকরণ উল্লেখ করতে হবে।
অতিরিক্ত চাকা সংযোজন, লো-বেড, সেমি লো-বেড ও কন্টেইনারবাহী ২০ ফুট গাড়ির ধরন পরিবর্তনের নামে মামলা ও পুলিশি হয়রানি বন্ধ করতে হবে। ট্যাক্স টোকেন, রুট পারমিটসহ বিভিন্ন করের ওপর আরোপিত ভ্যাট ও অন্যান্য ফি প্রত্যাহার করে একক ডকুমেন্টের আওতায় আনতে হবে। ভাড়ায় চালিত গাড়ির অগ্রিম আয়কর সর্বোচ্চ ১০ হাজার টাকায় নামিয়ে আনতে হবে এবং ট্যাক্স টোকেন ফি অর্ধেক করতে হবে।
বিআরটিএ কর্তৃক চালকদের একবারেই পেশাদারী লাইসেন্স দিতে হবে। দেশের বিভিন্ন স্কেল লোড একই নীতিমালার অন্তর্ভুক্ত করা ও ব্রিজে লোড কন্ট্রোল নীতিমালার নামে চাঁদাবাজি বন্ধ করতে হবে। চট্টগ্রাম বন্দর এলাকায় প্রাইম মুভার ট্রেইলার টার্মিনাল দিতে হবে এবং বন্দরের অভ্যন্তরে পণ্য বোঝাইকৃত গাড়ির জন্য নির্দিষ্ট পার্কিংয়ের ব্যবস্থা করে অন্যান্য সমস্যাগুলো দ্রুত সমাধান করতে হবে।
বাংলাদেশ শ্রম আইনের সঙ্গে সড়ক পরিবহন আইনের সাংঘর্ষিক ধারা-উপধারাসমূহ বাতিল করে সংস্কার করতে হবে এবং সমগ্র বাংলাদেশের সড়ক-মহাসড়কে চলাচলরত সব পণ্য পরিবহন থেকে মালামাল চুরি, ডাকাতি এবং ড্রাইভার/হেলপারদের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।
বাংলা৭১নিউজ/এসএকে