ভুতূড়ে অনেক সিনোমায় হয়তো যাত্রীসহ ট্রেন উধাওয়ের ঘটানা দেখে থাকবেন! তাই বলে বাস্তবেও কি এমনটি ঘটতে পারে? অবাক করা বিষয় হলেও সত্যিই যে বিশাল এক ট্রেন চোখের পলকেই অদৃশ্য হয়ে যায় ১১০ বছর আগে। আজও খোঁজ মেলেনি ট্রেনটি। এমনকি ট্রেনে থাকা ১০০ যাত্রী ও ৬ জন রেলকর্মী তারাও গায়েব হয়ে গিয়েছেন। নিখোঁজ এই ট্রেনের রহস্য আজও সমাধান হয়নি।
১৯১১ সালের ঘটনা। ওই বছরই প্রথমবারের মতো জাকজমকতার সঙ্গে রোমের একটি স্টেশন একটি ট্রেন চালু করেন ইটালির জেনেটি নামক রেল সংস্থা। উদ্বোধনের দিন সব যাত্রীদের বিনা টিকিটে ঘোরানোর ব্যবস্থা করেছিল সংস্থাটি। একে একে ট্রেনে ১০০ জন যাত্রী বসে পড়েন।
যাত্রীদের সঙ্গে মোট ৬ জন রেলকর্মী ছিলেন। বেশ ভালোভাবেই রওনা হয় ট্রেনটি। যাত্রীরা সবাই খুব উপভোগ করছিলেন যাত্রা। যাত্রীদের জন্য ট্রেনে বাহারি সব খাবারেরও ব্যবস্থা ছিল। উদ্দেশ্য ছিল ট্রেনে করে যাত্রীদের ইটালির বিভিন্ন অঞ্চল ঘুরে দেখানো।
তবে গন্তব্যে আর পৌঁছায়নি সেটি। ঘন্টার পর ঘণ্টা পার হতে থাকে তবুও ট্রেনের খোঁজ মেলেনি সেদিন। মাঝপথে রহস্যজনকভাবে বিশাল ট্রেনটি গায়েব হয়ে যায়! আজও ট্রেনটির কোনো খোঁজ মেলেনি। জানা যায়, ট্রেনলাইনটি একটি টানেলের মধ্য দিয়ে ছিল। সেই টানেলে প্রবেশ করলেও সেখান থেকে বেরই হয়নি ট্রেনটি।
ট্রেনের সন্ধানে পরে ওই সুড়ঙ্গে অনেকেই গিয়েছেন। তবে অনেক খুঁজেও ট্রেনের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। পাহাড়ের বুক চিড়ে তৈরি হওয়া ওই সুড়ঙ্গের ভেতর আর কোনো রাস্তাও ছিল না। এমনকি ট্রেন দুর্ঘটনারও কোনো চিহ্ন মেলেনি।
ট্রেনের মধ্যে মোট ১০৬ জন ছিলেন। পরে তাদের মধ্যে দু’জনের সন্ধান পাওয়া যায়। টানেলের বাইরে থেকে তাদেরকে উদ্ধার করা হয়। তবে তারা কোনো তথ্যই দিতে পারেননি ট্রেনের বিষয়ে। অগোছালো কথা বলছিলেন তারা। এমনকি দু’জনের কথার বিষয়বস্তুও একই ছিল।
তারা জানান, সেদিন ট্রেনটি যখন টানেলে প্রবেশ করছিলো তখন চারপাশ ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন হয়ে যায়। প্রাণ বাঁচাতে তারা দু’জন ঝাঁপিয়ে পড়েন ট্রেন থেকে। এরপর আর তাদের কিছু মনে নেই।
এরপর প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় বোমা পড়ে সুড়ঙ্গের মুখ বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর ট্রেনটির খোঁজও থেমে যায়। এর পর থেকে ওই ট্রেনকে ঘিরে এমন সব ঘটনা বা তথ্য সামনে আসতে থাকে, যা আরও রহস্যময়।
মেক্সিকোর এক চিকিৎসকের দাবি, অনেক বছর আগে মেক্সিকোর একটি হাসপাতালে নাকি ওই ১০৪ জন যাত্রীকে ভর্তি করা হয়েছিল। তারা প্রত্যেকেই পাগলামি করছিলেন। তারা সবাই একটি ট্রেনের কথা বলছিলেন। সেই ট্রেনে করেই না কি তারা মেক্সিকোতে পৌঁছান।
এমনকি ইটালির বিভিন্ন প্রান্তে যেমন- জার্মানি, রোমানিয়া ও রাশিয়াতেও না কি বিভিন্ন সময়ে অনেকেই ওই রকমই একটি যাত্রীবোঝাই ট্রেন দেখতে পেয়েছেন বলে দাবি করেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা ট্রেনের যে বর্ণনা দিয়েছিলেন, তা অদৃশ্য হওয়া ট্রেনটির মতোই। তখনকার সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, ট্রেনটি না কি ট্রাইম ট্রাভেল করে ১৮৪০ সালের মেক্সিকোয় পৌঁছে গিয়েছিল। তবে এসব ব্যাখ্যার কোনো প্রমাণ পায়নি বিজ্ঞানীরা।
সূত্র: ডেইলিহান্ট
বাংলা৭১নিউজ/এসএইচ