দিনাজপুরের হিলির বৈগ্রাম গ্রামের ১০ বছরের ইয়ামিন আকতার মেধাকে নিয়ে বিপাকে পড়েছেন বাবা ইলিয়াস আলী ও মা মেহের বানু। শিশুকন্যাটির যত বয়স বাড়ছে ততই চিন্তা ভাবনা বাড়ছে অসহায় ও হতদরিদ্র এই বাবা-মায়ের। অর্থের অভাবে উন্নতচিকিৎসা করতে পারছেন না শিশুটির বাবা-মা।
প্রায় ৬ বছর আগে মেধার বয়স তখন ৪ বছর। মায়ের কোলে বসে মেধা মায়ের বুকের দুধ পান করছিলো। এমন সময় প্রতিবেশী একজন মহিলা পূর্ব শত্রুতার জের ধরে তাদের শরীরে গরম দুধ ছুড়ে ফেলে। গরম দুধে মেধার কচি শরীরের ডান পাশের কান থেকে কোমড় পর্যন্ত ঝলসে যায়। পরে হিলি হাসপাতালে শিশুটিকে ভর্তি করে,দীর্ঘদিন চলে তার চিকিৎসা।
তার চিকিৎসায় সংসারে যা ছিলো তা সব শেষ করেন হতদরিদ্র দিনমজুর বাবা ইলিয়াস আলী। চিকিৎসায় শরীরের ঘা শুকিয়ে গেলেও ক্ষত স্থানগুলো শক্ত ও জড়ো হয়ে গেছে, তবে শিশুটির বর্তমান ক্ষত স্থানেগুলোতে জ্বালা-যন্ত্রনা করে। তার উপর সে মেয়ে মানুষ, কোমড় থেকে গলা আর গাল বিকট আকার ধারণ করেছে। চিকিৎসক বলেছেন, উন্নত চিকিৎসার মাধ্যমে মেধার ক্ষত স্থানগুলো স্বাভাবিক হবে, প্লাস্টার সার্জারি করতে হবে। তবে এটা একটি ব্যয় বহুল চিকিৎসা।
বাবা ইলিয়াস আলী একজন দিনমজুর,মানুষের বাড়িতে দিনহাজরা হিসেবে কাজ করেন। দিন শেষে যা মজুরি পান তা দিয়ে কোন রকম চলে তাদের সংসার। সংসারে ইলিয়াস আলীর দুই মেয়ে, মেধা ছোট এবং বড় মেয়ে সাবিনা। সাবিনা বগুড়ায় নার্সিংয়ে লিখাপড়া করে। দিনমজুর বাবা একবুক আশা আর স্বপ্ন নিয়ে বড় মেয়েকে নার্সিং করাচ্ছেন।
খেয়ে না খেয়ে তারা সাবিনার লিখাপড়ার খরচ জোগাড় করেন। এদিকে ছোট মেয়ে মেধার শরীরের বড় সমস্যা, মেয়ে মানুষ, বড় হবে, তাকে ভবিষ্যতে বিয়ে শাদী দিতে হবে। এমন শারীরিক অবস্থা থাকলে পরবর্তীতে শিশুকন্যা মেধার কি হবে? এমন নানান চিন্তায় আজ হতাশায় দিন কাটাচ্ছেন বাবা-মা। উন্নত চিকিৎসার জন্য,মেয়েকে স্বাভাবিক জীবন দিতে প্রয়োজন অনেক টাকা, এতো টাকা কোথায় পাবে হতদরিদ্র বাবা-মা। তাই সন্তানের জন্য তারা আজ সরকার আর দেশের হৃদয়বান মানুষের কাছে সাহায্যে জন্য হাত বাড়িয়েছেন। আসুন আমরা যে যার স্থান থেকে পারি এই অসহায় শিশুকন্যাটি সাহায্য করি।
শিশুটির মা বেহের বানু বলেন,আমরা গরীব মানুষ, স্বামীর রোজগারে বড় মেয়ের লিখাপড়ার খরচের পাশাপাশি কোন রকম সংসার চলে। তার উপর ছোট মেয়ের সেই দুর্ঘটনায় তার শরীর ঝলসে যায়। তার চিকিৎসায় সব শেষ হয়ে গিয়েছে। মেয়ে আমার বড় হচ্ছ, তাকে নিয়ে আমাদেন চিন্তা ভাবনা আরও বাড়ছে। তাকে ভাল করতে হলো উন্নত চিকিৎসা করতে হবে। তার জন্য এতো টাকা কোথায় পাবো। তাই সবার কাছে আমি আমার সন্তানের জন্য সাহায্য চাচ্ছি।
মেধার বাবা ইলিয়াস আলী বলেন,গরীবের যত বিপদ, বড় মেয়ে লিখাপড়া আর ছোট মেয়ের চিকিৎসা। আমি দিনমজুর, দিনে ২০০ থেকে ২৫০ হাজিরা পাই। তা দিয়ে কোনটা করবো?
নার্সিংয়ে পড়ুয়া বড় মেয়ে সাবিনা ইয়াসমিন বলেন,গরীবের ঘরে জন্ম নেওয়াটাই অভিশাপ, অর্থের অভাবে আজ আমার ছোট বোনের চিকিৎসা করতে পারছেন বাবা- মা।বাড়িতে আমিও বসে আছি, কলেজ খুলেছে। ছোট বোনটাকে নিয়ে আমরা পরিবারের সবাই চিন্তিত।আমার বাবা সামান্য একজন দিনমজুর, তার উপার্জনের কোন প্রকার আমরা চলি।সব মিলে আমাদের সংসারে আজ নুন আনতে পন্তা ফুরানোর মতো।তাই সরকারসহ দেশের বিত্তবানদের নিকট আমার আকুল আবেদন দয়া করে আমার বোনটার পাশে আপনারা একটু দাঁড়ান। যোগাযোগের জন্য মোবাইল নাম্বার- ০১৭৮৫০৩০৬২৮।
বাংলা৭১নিউজ/সিএফ