বাংলা৭১নিউজ,ডেস্ক: দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের ছুড়ে দেওয়া পারমাণবিক বোমায় বিধ্বস্ত জাপানের সেই হিরোশিমা পরিদর্শনে যাচ্ছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা।
যুদ্ধের ৭০ বছর পর আগামী ২৭ মে হিরোশিমায় ওবামার এ সফরকে ‘ঐতিহাসিক’ বলে অভিহিত করেছেন জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে।
গত মঙ্গলবার রাতে রাজধানী টোকিওয় সাংবাদিকদের ওবামার এই সফরসূচি নিশ্চিত করেন তিনি।
আবে বলেন, জি-সেভেন সম্মেলনে যোগ দিতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ওবামা ২৬ মে জাপানে যাবেন। আর এর পরদিনই তিনি হিরোশিমায় পারমাণবিক বোমায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের সঙ্গে কথা বলতে সেখানে যাবেন।
বারাক ওবামা যে হিরোশিমায় যাচ্ছেন এ খবর গত মাসের শেষ সপ্তাহে দুই দেশের শীর্ষ কর্মকর্তারা জানিয়েছিল।
আর এর মধ্য দিয়ে ১৯৮৪ সালে জিমি কার্টারের পর যুক্তরাষ্ট্রের দ্বিতীয় কোন প্রেসিডেন্টের পা পড়বে হিরোশিমায়। ওবামার সফরকে ঐতিহাসিক সফর বলেই মনে করছে স্থানীয় জনপ্রশাসন।
এর আগে গত ১১ এপ্রিল জি-সেভেন রাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের এক বৈঠক চলাকালে হিরোশিমায় সফরে যান যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি। তার সফরটিও ঐতিহাসিক ছিল।
ওবামার সফরের কথা নিশ্চিত করেছেন হোয়াইট হাউজের কর্মকর্তা বেন রড্রিস। ওবামার জাতীয় নিরাপত্তা ও কৌশল বিষয়ক এ কর্মকর্তা তার এক নোটে বলেন, আমরা (পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি) গত মাসে হিরোশিমায় ঘুরে এসে প্রেসিডেন্টকে বিষয়টি অবহিত করি।
২৭ মে বারাক ওবামা হিরোশিমার স্মৃতিসৌধ পরিদর্শন শেষে পারমাণবিক বোমায় আক্রান্তদের উদ্দেশে ভাষণও দেবেন।
রাড্রিস বলেন, ১৯৪৫ সালের সেই যুদ্ধের পর সাধারন মানুষজনের কাছে যুক্তরাষ্ট্র নীতি তুলে ধরা এবং জাপানিদের সম্মান জানানোর এ এক চমৎকার সুযোগ।
ওবামা তার সফরে দুই দেশের বর্তমান মৈত্রী সম্পর্কের বিষয়গুলোও জাপানিদের সামনে তুলে ধরবেন।
গত বছর দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ৭০ বছর পূর্তি অনুষ্ঠানে জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে ‘দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জাপানের ভুল’ পদক্ষেপের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করেন। এ নিয়ে দেশে বেশ সমালোচনাও হয়।
তবে ওবামার হিরোশিমা সফরকালে স্থানীয় এলাকবাসী যুক্তরাষ্ট্রকে ক্ষমা চাইতে হবে বলে দাবি তুলেছে।
এর আগে হিরোশিমার মেয়র কাজুমি মাসুরি বলেন, এটি যুক্তরাষ্ট্র সরকারের ঐতিহাসিক সফর। আমরা চাই, ওবামা হিরোশিমায় পারমাণবিক বোমা হামলায় বেঁচে থাকা মানুষদের কাছে ক্ষমা চাইবেন।
তবে এ বিষয়টি মঙ্গলবার নাকচ করে জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে বলেছেন, বিষয়টি মূখ্য নয়, তিনি (ওবামা) হিরোশিমায় যাচ্ছেন এটিই অনেক গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার।
একই ধরনের মন্তব্য করেছেন হোয়াইট হাউজের মুখপাত্র বেন রড্রিস। তিনি বলেন, প্রেসিডেন্ট ও তার দল এ সফরে খোলামেলা ভাবে ইতিহাস থেকে শিক্ষা নেবেন যা ভবিষৎ প্রজন্মের কাছে উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। আর ওবামার এ সফর পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার বিরোধী অভিযানেরই অংশ।
১৯৪৫ সালের ৬ অগাস্ট হিরোশিমায় যুক্তরাষ্ট্রের ছুড়ে দেয়া পারমাণবিক বোমায় ১ লাখ ৪০ হাজার মানুষ মারা যায়। এর তিনদিন পর নাগাশাকিতে আরও একটি পারমাণবিক বোমায় মারা যায় ৭৪ হাজার মানুষ।
বাংলা৭১নিউজ/এসএইস