বাংলা৭১নিউজ,ডেস্ক: মাঠে দু’দলের মধ্যে ব্যাটে-বলের লড়াই, আর মাঠের বাইরে দুই প্রশাসনিক প্রধানের ‘সৌজন্যমূলক সাক্ষাৎ’। ইডেনে ভারত-বাংলাদেশের ঐতিহাসিক পিংক টেস্ট শুরু হওয়া থেকে দিনভর ক্রিকেটের বাইরের মহলের নজর ছিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং শেখ হাসিনার বৈঠকের দিকে। সন্ধ্যা ৬টা নাগাদ, নির্ধারিত সময়েই দু’জনে রুদ্ধদ্বার বৈঠক হয়। ঘণ্টাখানেক বৈঠকের পর বেরিয়ে উভয়েই বেশ সন্তোষপ্রকাশ করলেন। দু’জনেই বললেন, ‘সৌজন্য সাক্ষাৎ এটি। অনেক কিছু নিয়ে কথা হয়েছে। ভাল লেগেছে।’ দুই বাংলার দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক এগিয়ে নিয়ে যেতে আশাবাদী মমতা, হাসিনা দু’জনই। উভয়েই এড়িয়ে গেলেন এনআরসি প্রসঙ্গ।
কথা ছিল, ইডেন গার্ডেন্সে ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে ঐতিহাসিক পিংক টেস্টের উদ্বোধনে আমন্ত্রিত অতিথি হয়ে আসবেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে যাঁর ব্যক্তিগত সম্পর্ক বেশ গভীর, অনেকটা দিদি-বোনের মতো। সেই মমতার আমন্ত্রণে সাড়া দিয়ে শুক্রবার এসে মমতার সঙ্গে ম্যাচের উদ্বোধনী ঘণ্টা বাজিয়ে দিলেন হাসিনা। ইতিহাসের সাক্ষী থাকতে, মাঠের মেজাজ অনুযায়ী দুই নেত্রীর পরনেই ছিল গোলাপির ছোঁয়া। মমতা পরেছিলেন গোলাপি পাড় সাদা শাড়ি, আর হাসিনার পরনে ছিল গোলাপি শেডের ঢাকাই জামদানি। ইডেনের মাঠে তাঁর বাংলা সফরের একটা পর্ব মিটে গেল।দ্বিতীয় এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পর্ব ছিল, সন্ধেবেলা দু’জনের বৈঠক।
আলিপুরের এক পাঁচতারা হোটেলে নির্দিষ্ট সময়েই দেখা হল দু’জনের। ঘণ্টাখানেক ধরে কথাবার্তা বলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, শেখ হাসিনা। আলোচনা সেরে বেরিয়ে মুখ্যমন্ত্রী সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বলেন, ‘এটা একেবারেই সৌজন্যমূলক সাক্ষাৎ ছিল। এমনিতেই আমাদের পারস্পরিক সম্পর্ক খুব ভাল। এই সৌহার্দ্য যেন বজায় থাকে। সে বিষয়ে কথা হল। আরও নানা বিষয়ে কথা বলেছি। খুব ভাল লাগল, অনেকদিন পর ওনার সঙ্গে খোলামেলাভাবে কথা বলে। ওনাকে বলেছি, আবার যেন আসেন।’ সূত্রের খবর, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তরফে উপহার হিসেবে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে দেওয়া হয়েছে স্বর্ণচরী শাড়ি এবং ২ টি শাল।
মুখ্যমন্ত্রী একথা বলে বেরিয়ে যাওয়ার প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই দেখা গেল, শেখ হাসিনাও বেরচ্ছেন। তিনি সাংবাদিকদের দেখে বললেন, ‘খুব ভাল করে কথা হয়েছে দু’জনের। এমনিতেই বাংলার প্রতি আমার ভালবাসা বরাবরের। দুই বন্ধুর মধ্যে মাঠে খেলা হচ্ছে। মুক্তিযুদ্ধের সময়ে আমাদের বহু শরণার্থী এখানে এসে আশ্রয় পেয়েছেন। তাঁরা এখন ভালভাবে আছেন। এজন্য আমরা কৃতজ্ঞ। আমাদের এই বন্ধুত্বের সম্পর্ক বজায় রাখব।’
পাশাপাশি, টেস্টে বাংলাদেশ ক্রিকেট টিমের পারফরম্যান্স নিয়ে হাসিনা এও বলেন, ‘আমাদের ছেলেরা যদিও খুব একটা ভাল খেলতে পারছে না, দেখছি। তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ওরা ভাল খেলবে বলে মনে হয়।’ এরপরই হাসিনার দিকে এনআরসি সংক্রান্ত প্রশ্ন ধেয়ে যায়। তিনি তাঁর সংক্ষিপ্ত বক্তব্য শেষ করে ফিরে যান। এনআরসি নিয়ে কোনও প্রতিক্রিয়া দেননি। ফলে সারাদিন যা নিয়ে জল্পনা ছিল তুঙ্গে, তা কার্যত নিভেই গেল।
শুনুন মমতার বক্তব্য:
বাংলা৭১নিউজ/সূত্র: সংবাদ প্রতিদিন অনলাইন