হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, গাজীপুর সিটি করপোরেশনের সামন্তপুর এলাকার বাসিন্দা মোহাম্মদ আলীর ছেলে ইলিয়াস হোসেন (২৭) সম্প্রতি সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়ে ওই হাসপাতালে ভর্তি হন। তাকে হাসপাতালের ৮১০ নম্বর পুরুষ সার্জিক্যাল ওয়ার্ডে রাখা হয়। শনিবার প্রয়োজনীয় ওষুধ নিয়ে ওই ওয়ার্ডে যাওয়ার চেষ্টা করেন ইলিয়াসের বড় ভাই এমদাদ হোসেন।
কিন্তু এ সময় ওই ওয়ার্ডের দায়িত্বে থাকা আনসার সদস্য শাহ জালাল তাকে প্রবেশ করতে বাধা দেন। এক পর্যায়ে তিনি জোর করেই ওয়ার্ডের ভেতর প্রবেশ করলে আনসার সদস্য এমদাদের শার্টের কলার ধরেন ও চড়থাপ্পড় দিতে থাকেন। আত্মরক্ষার্থে পাল্টা ঘুষি দেন এমাদাদ হোসেনও।
এরপর আনসার সদস্য শাহ জালালের সঙ্গে লাঠিসোটা নিয়ে যোগ দেয় আরও বেশ কয়েকজন নিরাপত্তাকর্মী। ওয়ার্ডের মধ্যেই এমদাদকে বেদম প্রহার শুরু করে তারা। এ সময় এমদাদকে রক্ষা করতে গেলে রোগীর আরও দুই স্বজনকে কোমরের বেল্ট খুলে মারে নিরাপত্তাকর্মীরা। মারের চোটে টয়লেটে গিয়ে আশ্রয় নেন এমদাদ।
ওই ঘটনার সময় পুরো হাসপাতালজুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এরপর হাসপাতালের আনসার কমান্ডার মো. মঞ্জু মিয়া এসে পরিস্থিতি শান্ত করেন। তবে এ ঘটনার জন্য রোগীর স্বজনদেরকে দায়ী করেছেন আনসার কমান্ডার।
তিনি বলেন, রোগীর স্বজনরা প্রথমে আনসার সদস্য শাহ জালালকে মারধর করে। এতে দুই পক্ষের মধ্যেই হাতাহাতি ও মারধরের ঘটনা ঘটে। আমি গিয়ে হাসপাতালের বাথরুমে থেকে বের করেছি।
হাসপাতালের পরিচালক তপন কান্তি সরকার বলেন, চিকিৎসক যখন রাউন্ডে (রোগী পরিদর্শন) থাকেন তখন স্বজনদের হাসপাতালের ওয়ার্ডের বাহিরে থাকতে হয়। কিন্তু ওই স্বজন চিকিৎসক থাকা অবস্থায় জোর করে প্রবেশ করতে চায়। এ নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে। তিনি আরও বলেন, আনসার ও রোগীর স্বজনদের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝি হয়েছিল। তবে বিষয়টি উভয় পক্ষ মিমাংসা করে নিয়েছে।
একদিন পর রোববার ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে রীতিমতো ভাইরাল হয়ে গেছে। এতে রোগীর বড় ভাই এমদাদসহ অন্য স্বজনদের পেটানোর দৃশ্য ধরা পড়েছে। হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রোগী ও স্বজনদের মারধরের নিন্দা জানাচ্ছেন নেটিজেনরা।