বাংলা৭১নিউজ,ডেস্ক: রাজধানীর গুলশানের হলি আর্টিজান রেস্টুরেন্ট থেকে উদ্ধার হওয়া হাসনাত করিম এবং তাহমিদ হাসিবের কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না বলে তাদের পরিবার দাবি করেছে।
হাসনাত নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির সাবেক শিক্ষক এবং তাহমিদ ক্যানাডার টরোন্টো বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল এই ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। তবে বাংলাদেশের পুলিশ বলছে, ‘‘উদ্ধারের পর তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। ”
গত সপ্তাহে হাসনাত করিমের বাবা রেজাউল করিম সংবাদ মাধ্যমের কাছে অভিযোগ করেন, ‘‘আমার ছেলেকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নেয়া হলেও পুলিশ এখন বলছে তাদের কাছে হাসনাত করিম নেই। তাকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। তবে আমরা তার কোনো খোঁজ পাচ্ছি না। সে বাসায়ও ফেরেনি। ”
তবে বৃহস্পতিবার রেজাউল করিমের সঙ্গে ডয়চে ভেলে’র পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘‘আমি সংবাদ মাধ্যমের সঙ্গে কথা বলবো না। কোনো স্টেটমেন্ট দেব না।’ তিনি তাঁর ছেলেকে পেয়েছেন কিনা সেই প্রশ্নেরও জবাব দিতে রাজি হননি।
১ জুলাই সকালে অভিযানের আগে গুলশান আর্টিজান রেস্টুরেন্ট থেকে একই পরিবারের যে চারজনকে হামলাকারীরা মুক্তি দেয়, হাসনাত করিম তাদের একজন। তিনি সেই পরিবারের প্রধান।
একই সময়ে তাহমিদ হাসিবকেও আলাদাভাবে মুক্তি দেয় হামলাকারীরা। তাহমিদ ঢাকার আফতাব বহুমূখী ফার্মস-এর এমডি ফজলে রহিম শাহরিয়ারের ছেলে। তাহমিদ ক্যানাডার স্থায়ী বাসিন্দা ও টরন্টো বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী।
পুলিশ তাকেও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নেয়। এখন বলছে, তাকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। তবে তাহমিদের পরিবার দাবি করছে, তাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। তাহমিদকে খুঁজে পেতে ক্যানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর সহায়তা চেয়েছে তার পরিবার।
তাহমিদের বাবা এখন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। ছেলেকে খুঁজে না পাওয়ায় তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েছেন বলে তার পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। তবে এ নিয়ে পরিবারের কেউ ডয়চে ভেলের সঙ্গে কথা বলতে রাজি হননি।
অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল জানিয়েছে, রোববার ১০ জুলাই পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয় হাসনাত তাদের হেফাজতে নেই। তবে তার পরিবার জানিয়েছে, হাসনাত এখনও বাড়ি ফেরেননি। ২ জুলাই পরিবারসহ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাকে আটক করে পুলিশ। ৩ জুলাই তাকে ছাড়া পরিবারের সবাইকেই ছেড়ে দেওয়া হয়।
বিবৃতিতে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলা হয়, হাসনাত করিম কোথায়, কিভাবে আছেন কর্তৃপক্ষকে তা নিশ্চিত করে জানাতে হবে।
অ্যামনেস্টির দক্ষিণ এশিয়া বিভাগের পরিচালক চম্পা প্যাটেল বলেছেন, ‘‘হাসনাত করিমের পরিবারকে এমনিতেই অনেক মানসিক বিপর্যয় সইতে হয়েছে। তাকে এখনও আটক রাখা হয়েছে কিনা, তা অবশ্যই তার পরিবারকে জানাতে হবে। তার সঙ্গে পরিবারকে কথা বলতে দিতে হবে। ”
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের ডেপুটি কমিশনার (মিডিয়া) মাসুদুর রহমান ডয়চে ভেলেকে জানান, ‘‘গুলশানের রেস্টুরেন্ট থেকে মোট ৩১ জনকে উদ্ধার করা হয়। তাদের সবাইকে গোয়েন্দা দপ্তরে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের পর ছেড়ে দেয়া হয়েছে। তারা কেউ এখন আর পুলিশের হেফাজতে নাই। হাসনাত করিম এবং তাহমিদকেও ছেড়ে দেয়া হয়েছে। ”
তিনি আরও দাবি করেন, ‘‘তাদের যে এখন খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না এমন কোনো অভিযোগ তাদের পরিবারে পক্ষ থেকে পুলিশের কাছে করা হয়নি। অভিযোগ করা হলে পুলিশ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে। ”
পুলিশের ডেপুটি কমিশনার আরো বলেন, ‘‘৩১ জনকে এই শর্তে ছাড়া হয়েছে যে তাদের জিজ্ঞাসাবাদের প্রয়োজন হলে তারা আবার হাজির হবেন। ”
সূত্র: ডয়চে ভেলে
বাংলা৭১নিউজ/সিএইস