শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর থেকে আওয়ামী লীগ নেতাদের মতো আত্মগোপনে আছেন পুলিশ প্রশাসনের কয়েকজন কর্মকর্তা। এদের মধ্যে একজন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) সাবেক প্রধান হারুন-অর-রশীদ। শেখ হাসিনা সরকার পতনের আগ মুহূর্তে তাকে ডিবি থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। সম্প্রতি একটি ছবি প্রকাশ করে গণমাধ্যম দাবি করছে, হারুন অর রশিদ যুক্তরাষ্ট্রে পালিয়ে গেছেন।
পরে গতকাল হারুনের একটি সাক্ষাৎকার গণমাধ্যমে প্রকাশ হয়। অজ্ঞাত স্থান থেকেই একটি বেসরকারি টেলিভিশনের ইউটিউব চ্যানেলে কথা বলেছেন আলোচিত এই পুলিশ কর্মকর্তা। সেখানে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থান, আন্দোলন দমনে তার ভূমিকাসহ নানা বিষয়ে কথা বলেছেন। দাবি করেছেন- তাকে নিয়ে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। তাকে মোয়া বানানো হচ্ছে।
হারুনের দেশত্যাগ নিয়ে এবার কথা বলেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ। বুধবার (৯ অক্টোবর) এ নিয়ে নিজের ভেরিফাইড ফেসবুক আইডিতে একটি পোস্ট করেছেন তিনি।
হাসনাত তার ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, ‘বিপ্লবী সরকার হিসেবে বর্তমান সরকারের অন্যতম প্রধান দায়িত্ব ছিল গণহত্যায় জড়িত সকলকে বিচারের আওতায় আনা।
কিন্তু পুলিশ এবং প্রশাসনে আওয়ামী সহযোগীদের বহাল রাখা বা তাদের নিরাপদে দেশত্যাগ করতে দেওয়া সরকারের ব্যর্থতার পরিচায়ক।’তিনি লিখেছেন, ‘সাবেক ডিবি প্রধান হারুন এবং পুলিশ কর্মকর্তা মনিরুলের নিরাপদে দেশত্যাগ বর্তমান সরকারের প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে এখনো আওয়ামী প্রেতাত্মাদের উপস্থিতির প্রমাণ। তারা বিপ্লবের চেতনা এবং বিপ্লবকে ব্যাহত করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত।
আওয়ামী প্রেতাত্মাদের প্রশাসনে বহাল রাখা জনগণের সাথে প্রতারণার শামিল। প্রকৃতপক্ষে, প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা দেশের বৃহত্তর স্বার্থ ভুলে গিয়ে ব্যক্তিগত স্বার্থ নিশ্চিত করার চেষ্টা করছে, যা বিপ্লবের চেতনার সঙ্গে সাংঘর্ষিক।
তিনি আরো লিখেছেন, ‘আমরা প্রশাসনের সকল স্তরের কর্মকর্তাদের আহ্বান জানাই, আপনারা বিপ্লবের চেতনা ধারণ করুন এবং দেশের বৃহত্তর স্বার্থে সেবা প্রদান করুন। ক্ষুদ্র ব্যক্তিস্বার্থের জন্য দেশের ভবিষ্যৎকে বিপদে ফেলবেন না। বিপ্লবী সরকারের প্রতিও আমাদের আহ্বান, বিগত ১৫ বছরে এবং জুলাই বিপ্লবে সংঘটিত হত্যাকাণ্ডে যারা সহযোগী ছিল, তাদের যেন বিচারের আওতায় আনা হয়।
যারা দেশ থেকে পালিয়ে গেছে, তাদের দেশে ফিরিয়ে এনে বিচার নিশ্চিত করতে হবে। আবু সাঈদ, ওয়াসিম এবং মুগ্ধের আত্মা তখনই শান্তি পাবে, যখন অপরাধীরা পূর্ণমাত্রায় শাস্তি পাবে এবং সরকার বিপ্লবের চেতনা নিয়ে কাজ করবে।’
বাংলা৭১নিউজ/এসএইচ
